General Election 2019: সাধ্বী প্রজ্ঞাকে ভোটে দাঁড় করানোর সিদ্ধান্তের সপক্ষে দাঁড়ালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মালেগাঁও বিস্ফোরণে অভিযুক্ত প্রজ্ঞা ঠাকুরকে টিকিট দেওয়ার পিছনে যুক্তিও দিয়েছেন তিনি। মোদী বলেছেন, হিন্দু সভ্যতার উপর যারা সন্ত্রাসবাদের মিথ্যে আরোপ লাগাচ্ছে তাদের কাছে এটা প্রতীকী উত্তর।
টাইমস নাও-তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে (নিচের ভিডিও ০০-৩১ থেকে ৩-৫৩) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সমঝোতা এক্সপ্রেস রায়ের প্রসঙ্গ তুলে দাবি করেন, “বসুধৈব কুটুম্বকমে বিশ্বাসী ৫০০০ বছরের পুরনো সভ্যতাকে“ অসম্মান করেছে কংগ্রেস।
সাধ্বী প্রজ্ঞা দাবি করেছিলেন তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য তিনি কারকারেকে যে অভিশাপ দিয়েছিলেন, তার জন্যেই ২৬-১১-র মুম্বই জঙ্গি হামলায় মৃত্যু হয়েছিল মহারাষ্ট্র এটিএসের প্রধানের। এই দাবির একদিন পরেই প্রধানমন্ত্রীর এই বিবৃতি।
আরও পড়ুন, সাধ্বী প্রজ্ঞার বিরুদ্ধে মামলা ও অভিযোগ
১৯৮৪ সালের শিখ-বিরোধী দাঙ্গার প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসকে আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ১৯৮৪ সালে ইন্দিরা গান্ধী যখন মারা গিয়েছিলেন, তার পর তাঁর ছেলে বলেছিলেন, একটা বড় গাছ যখন পড়ে যায়, তখন পৃথিবী কেঁপে ওঠে। এরপর দাঙ্গাহাঙ্গামায় হাজার হাজার শিখ মারা যায়। এ ঘটনা সন্ত্রাস নয়? এরপর তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যম একটি প্রশ্নও তোলেনি যেমনটা আজ তোলা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদী সাক্ষাৎকারের সময়ে কমল নাথকেও এক হাত নিয়ে বলেন, যারা সে সময়ের শিখ বিরোধী দাঙ্গায় জড়িত বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাঁরাও বিধায়ক ও মন্ত্রী হয়েছেন। তিনি বলেন, ”তেমন একজন এখন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন।”
কংগ্রেস নেতা কমল নাথকে নানাবতী কমিশন জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং প্রমাণাভাবে সমস্ত অভিযোগ থেকে মুক্তি দেয়। ১৯৮৪ সালে শিখ বিরোধী দাঙ্গায় ২৭৩৩ জন মারা যান এবং মোট ৫৪১ টি মামলা দায়ের করা হয়।
ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় অভিযুক্ত রাহুল এবং সোনিয়া গান্ধীর নাম না করে মোদী বলেন, ”আমেথি এবং রায় বেরিলির যে সব প্রার্থীরা জামিনে বাইরে আছেন তাঁদের কি প্রশ্ন করা উচিত নয়? কিন্তু ভোপালের বিজেপি প্রার্থী যিনি জামিনে মুক্ত এবং নির্বাচনে লড়ছেন তাঁর বেলায় যত শোরগোল। একজন মহিলা, একজন সাধ্বীকে এ ভাবে অত্যাচার করা হয়েছে, কেউ একটা আঙুল পর্যন্ত তোলেনি।”
শতাব্দীপ্রাচীন দলটি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ”আমি এদের মোডাস অপারেন্ডি বুঝতে পেরে গেছি। এই দলটি প্রথমে সিনেমার মত করে একটা চিত্রনাট্য লেখে। তারপর এরা কিছু একটা খোঁজে যার মাধ্যমে বিষয়টিকে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে দেখানো যায়। এর পর এরা কাহিনিতে একজন ভিলেন আর একজন হিরো ঢুকিয়ে দেয়। কংগ্রেস এ ভাবেই সমস্ত সংঘর্ষ বা ঘটনা রচনা করে।”
মোদী এ ব্যাপারে সিবিআইয়ের বিশেষ বিচারক ব্রিজমোহন হরিকিষণ লোয়ার মৃত্যুর প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন। রিপোর্ট অনুসারে লোয়া ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর নাগপুরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। মোদী বলেন, ”বিচারপতি লোয়ার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছিল কিন্তু কংগ্রেস একই রকম পদ্ধতি অবলম্বন করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল যে যাতে মনে হয় লোয়াকে হত্যা করা হয়েছে। একই রকম পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে ইভিএম এবং নোটবন্দির সময়ে। এটাই এদের কর্মপদ্ধতি।”
গত বছর সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি লোয়ার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে জানিয়ে দেয় তাঁর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। একই সঙ্গে এ নিয়ে তদন্তের আবেদনও খারিজ করে দিয়েছিল শীর্ষ আদালত।