ব্রিগেডের জনসভার ঝুঁকি নিতে পারল না বিজেপি। তার বদলে সংগঠনকে আরও মজবুত করার লক্ষ্য় নিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্ব। লোকসভার দুটো আসন ধরে রাখার পাশাপাশি মতুয়া ভোটে ভাগ বসাতে উত্তর ২৪ পরগণার ঠাকুরনগরে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, "আপাতত ব্রিগেডের সভা বাতিল করা হয়েছে। ৮ ফেব্রুয়ারি আসানসোলে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এছাড়া শিলিগুড়ি ও ঠাকুরনগরেও জনসভা করবেন তিনি।"
এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পদ্মশিবির। এটি অবশ্য সর্বশেষ ব্রিগেডের সিদ্ধান্ত ছিল। ইতিপূর্বে একাধিকবার ব্রিগেডে সভা করার দিনক্ষণ জানিয়েও পিছিয়ে যান রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। প্রতিবারই রথযাত্রা বা 'গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রার' তারিখের পরিবর্তনের সঙ্গে বদলে গিয়েছে ব্রিগেডের তারিখও। শেষমেশ ওই দিন আসানসোলে জনসভা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। আসানসোল লোকসভা আসনটি আপাতত বিজেপির দখলে, সেখানকার সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।
লোকসভায় ২২ আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। এখন এরাজ্যে বিজেপির আসন রয়েছে দুটি। একটি আসানসোল, অন্যটি দার্জিলিং। আসানসোলে কেন্দ্রটি ধরে রাখা বিজেপির কাছে রীতিমত চ্যালেঞ্জ। রাজনীতিক মহলে গুঞ্জন, আসানসোল কেন্দ্রে লোকসভার ভোটে প্রার্থী হওয়ার কথা শত্রুঘ্ন সিনহার। ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেডে হাজির থেকে মোদী ও বিজেপিকে কড়া ভাষায় আক্রমন করেন বিহারীবাবু। তাই আসানসোল কেন্দ্রের ওপর জোর দিচ্ছে বিজেপি। রাজনৈতিক মহলের মতে, ব্রিগেডে চমক দেওয়ার পরিবর্তে রাজ্যে সংগঠন মজবুত করাই লক্ষ্য গেরুয়া শিবিরের। এত কম সময়ে ব্রিগেড ভরাতে না পারলে রাজনৈতিক মান থাকবে না।
আসামে এনআরসির তালিকা ঘোষণা করার সময় মতুয়া সংঘ রাজ্যে রেল রোকো করে। মতুয়াদের ওই সংগঠন জোরালো প্রতিবাদ করে দেশজুড়েও। পরবর্তীতে নাগরিকত্ব বিল লোকসভায় পাশ করিয়ে মতুয়াদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছে বিজেপি। অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, ৩১ জানুয়ারী ঠাকুরনগরে সভা করে মোদী মতুয়া ভোটকে বিজেপির ভাঁড়ারে আনার চেষ্টা করতে চাইছেন। আর উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ার, বালুরঘাট সহ অন্য লোকসভা কেন্দ্রগুলোকে পাখির চোখ করেছে বিজেপি। একইসঙ্গে দার্জিলিং-এ সাংসদ রয়েছেন বিজেপির। সেই আসনও ধরে রাখা তাদের কাছে জরুরি। তাই ২৮ জানুয়ারী শিলিগুড়িতে সভা করবেন মোদী।