রাজস্থানে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তেড়েফুঁড়ে কংগ্রেসকে নিশানা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। নির্বাচনী প্রচারে ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘গালিগালাজ’ করা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, 'রাজস্থানে মোদীজিকে ‘গালি’ দেওয়া হয়েছে, যখনই প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ‘গালি’ দেওয়া হয়েছে, জনসাধারণ তার জবাব দিয়েছে। এবারও তার কোন ব্যতিক্রম হবে না। রাজস্থানে বিজেপি সরকার গঠন করতে চলেছে’।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, 'আমি রাজস্থান সফর করেছি এবং আমি বলতে চাই রাজস্থানে বিজেপি সরকার গঠন করতে চলেছে। জনগণ কংগ্রেসকে বিদায় জানাতে মনস্থির করেছেন। এক কোটিরও বেশি ভোটারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিজেপি। রাজস্থান সরকারের স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি এবং তুষ্টির প্রচলন সম্পর্কে সবাই অবগত।
কংগ্রেস আমার প্রশ্নের উত্তর দেয়নি
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমি কংগ্রেসকে অনেক প্রশ্ন করেছি কিন্তু আজ পর্যন্ত উত্তর পাইনি। আমি কংগ্রেসের নেতাদের জিজ্ঞেস করেছিলান, 'আপনার সরকার ক্ষমতায় রয়েছে, আপনি রাজস্থানের জন্য কী করেছেন? কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো উত্তর পাইনি’।
যখন কেন্দ্রে কংগ্রেস সরকার ছিল, তারা মাত্র দশ বছরে রাজস্থানকে ২ লক্ষ কোটি টাকা দিয়েছে, যেখানে বিজেপি ৯ বছরে ৮ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা দিয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন রাজস্থানে মহিলা এবং দলিতদের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
লাল ডায়েরি হয়ে ওঠেছে দুর্নীতির প্রতীক
রাজস্থানে দুর্নীতির প্রতীক হয়ে উঠেছে লাল ডায়েরি। লাল ডায়েরিকে কেন ভয় পান গেহলট? রাজস্থান সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ সবাই। রাজস্থানকে ভাগ করেছেন অশোক গেহলট। অশোক গেহলটের একমাত্র এজেন্ডা বৈভব গেহলটকে মুখ্যমন্ত্রী করা। গেহলটের নিজের কোনও গ্যারান্টি নেই, তিনি অন্যদের কী গ্যারান্টি দেবেন? এমনই ঝাঁঝালো আক্রমণ শানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
আজই রাজস্থানে প্রচারের শেষ দিন। মাঠে নেমে পড়েছে বিজেপি-কংগ্রেসের তাবড় নেতারা। রাজস্থান বিধানসভা নির্বাচন ২৫ নভেম্বর। শনিবার সকাল ৭ টায় শুরু হবে ভোটপর্ব চলবে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। এক দফায় গোটা রাজ্যে নির্বাচনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। আজ অর্থাৎ ২৩ নভেম্বর বিকাল ৫টার পর প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারপর্ব বন্ধ হয়ে যাবে।
রাজস্থান নির্বাচনের আর একদিন বাকি। বিজেপির তারকা প্রচারকরা আজ রাজস্থানে বিভিন্ন প্রান্তে সফরে ব্যস্ত। আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিন, তাই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহও জয়পুর পৌঁছেছেন। এখানে সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস সরকারকে নিশানা করেন শাহ। তিনি বিজেপির কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকল্পনার কথাও বলেছেন।
শাহ বলেছেন, 'আমি দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেস সরকারের কাছে একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করছি, কিন্তু কংগ্রেস কখনও উত্তর দেয়নি। আমি তাকে অনেকবার জিজ্ঞাসা করেছি, যখন আপনার সরকার কেন্দ্রে ছিল তখন আপনি রাজস্থানের জন্য কী করেছিলেন? তার কোন উত্তর আমি আজ পর্যন্ত পাইনি’।
রাজস্থান নির্বাচনী প্রচারের শেষ দিনে সাংবাদিক সম্মেলন করেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেছেন যে 'বিজেপি হতাশাগ্রস্ত। কংগ্রেস সরকার ক্ষমতায় থাকবে এটা ভেবেই তারা যা ইচ্ছে তাই বলছে। মোদী থেকে শুরু করে শাহ-সহ অন্য নেতারা ঠিক সেই কারণেই রাজস্থান সফর করে দলীয় নেতৃত্বের মনোবল চাঙ্গা করতে ময়দানে নেমেছেন। কিন্তু তাতেও বিশেষ ফায়দা হয়নি বিজেপির। রাজ্যের মানুষ আমাদের দুহাত ভরে আর্শিবাদ করবেন। মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, ২৫ বছর পর বিজেপি এখানে সরকার গড়তে পারবে না'।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ছাড়াও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে আজ রাজস্থানে জনসভায় ভাষণ দেবেন। এরা ছাড়াও রাজস্থানের বিভিন্ন জায়গায় জনসভা করবেন অরুণ চতুর্বেদী, সঞ্জীব বলিয়ান, কিরোনিলাল মীনা, সুধাংশু ত্রিবেদী।