চার রাজ্যে আজ চলছে ভোটগণনা। রবিবার রাজস্থান-মধ্যপ্রদেশ-তেলেঙ্গানা-ছত্তিশগড় বিধানসভা ভোট গণনা হলেও মিজোরামে আজ ভোটগণনা হচ্ছে না। উত্তর-পূর্বের রাজ্যে তা হচ্ছে ৪ ডিসেম্বর, সোমবার। বিভিন্ন সংস্থার এক্সিট পোলের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, চার রাজ্যেই পালাবাদল হতে পারে ৷ আপাতত গণনার যা ট্রেন্ড, তাতে পালাবদলের দিকে রাজস্থান ও তেলঙ্গানা, ছত্তিশগড়েও। বিশাল মার্জিনে বিজেপি এগিয়ে মধ্যপ্রদেশে।
রাজস্থান-সহ চারটি রাজ্যে ভোট গণনা চলছে। এখন পর্যন্ত যা ট্রেণ্ড তাতে মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থানে বিজেপি স্পষ্টতই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে। রাজস্থানে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে রাজ্যে সরকার গঠনের দিকে এগোচ্ছে। এই নির্বাচনে 'কংগ্রেসের জাদুকর' অশোক গেহলটের জাদু কাজেই আসেনি। এই বিধানসভা প্রশ্নপত্র ফাঁস,লাল ডায়েরির মতো বিষয়গুলিকে পুঁজি করে বিজেপি নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁঝালো আক্রমণ করে গেহলট সরকারকে। আর সেই ইস্যুগুলিই এবার নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে তা রাজ্যের সামগ্রিক ভোটের ফলাফল থেকেই স্পষ্ট।
রাজস্থানের নির্বাচনী প্রচারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রশ্নপত্র ফাঁস, লাল ডায়েরি, দুর্নীতি, মোদির গ্যারান্টি, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ এবং আইনশৃঙ্খলার মতো ইস্যুগুলি তুলে ধরেছেন। নির্বাচনের আগে গেহলট সরকার বছরে একের পর এক উন্নয়নমূখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্য বীমার সীমা ৫০ লক্ষ টাকার গ্যারান্টি, সস্তায় সিলিন্ডার সহ নানান প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও প্রশ্ন পত্র ফাঁস, লাল ডায়েরি এবং দুর্নীতির অভিযোগকে তা ছাপিয়ে যেতে পারেনি।
প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলা
রাজস্থান নির্বাচনী প্রচারে সময় প্রধানমন্ত্রী মোদী যে ইস্যুগুলিকে জোর দিয়ে উত্থাপন করেছিলেন তার মধ্যে একটি ছিল পেপার ফাঁস ইস্যু। তিনি জনসাধারণকে বলেছিলেন যে বিজেপি সরকার আসার পরে, সমস্ত কেলেঙ্কারির তদন্ত করা হবে এবং দোষীদের কারাগারে পাঠানো হবে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটকে অভিযুক্ত করে তিনি বলেছিলেন যে তিনি নিজেকে জাদুকর বলেন, কিন্তু তিনি তার জাদু দিয়ে রাজ্যে দুর্নীতির মায়া ছড়িয়েছেন। প্রশ্ন ফাঁস একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী এমনও বলেছিলেন যে বড় বড় কোচিং ইনস্টিটিউটগুলিতে অভিযান চালানো হলে মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের নাম প্রকাশ্যে আসবে।
লাল ডায়েরি কেস
রাজস্থানের রাজনীতিতে লাল ডায়েরির বিষয়টি নতুন নয়। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদী এই নির্বাচনী প্রচারে নতুন করে টেনে আনেন লাল ডায়েরি প্রসঙ্গ। এমনকি লাল ডায়েরির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন যে এই ডায়েরির পাতা যতই খুলছে, ততই গেহলট সরকারের অস্বস্তি বাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছিলেন, “লাল ডায়েরিতে স্পষ্ট লেখা আছে যে কংগ্রেস সরকার গত পাঁচ বছরে কীভাবে একের পর এক দুর্নীতি করে গিয়েছে"।
এই বিষয়গুলি ছাড়াও রাজস্থানে কংগ্রেসের মধ্যেও দলাদলি দেখা গেছে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট এবং শচীন পাইলটের মধ্যে যে বিবাদ তা কারও অজানা ছিল না। এটি রাজ্যের দলীয় কর্মীদেরও প্রভাবিত করেছিল এবং জনগণের কাছেও এটি এক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসাবে সামনে এসেছে। যদিও নির্বাচনের আগে দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী দুজনকে এক করার চেষ্টা করেছিলেন এবং 'আমরা একসঙ্গে' বার্তাও দেওয়া হয়েছিল, তবে নির্বাচনের ফলাফলে এর কোনও প্রভাব পড়েছে বলে মনে হয় না।
কানহাইয়ালাল হত্যা মামলা
রাজস্থানের নির্বাচনী প্রচারে, উদয়পুরের কানহাইয়ালাল হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ তুমুলভাবে তুলেছে বিজেপি। কানহাইয়ালাল হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিজেপি কংগ্রেস সরকারের আমলে রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে
ইডির এন্ট্রি
রাজস্থানে, প্রশ্নপত্র ফাঁস মামলায় রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি গোবিন্দ সিং দোতাসারা এবং কংগ্রেস প্রার্থী ওমপ্রকাশ হুডলার বাড়িতে ইডি হানা দিয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে কংগ্রেসও এই প্রসঙ্গ তুলেছে। অশোক গেহলট প্রতিটি প্রেস কনফারেন্সে এই ইস্যুটি নিয়ে কথা বলেছেন তবে কেবল বিজেপিই এতে করে লাভবান হয়েছে বলেই ভোটের ফলে স্পষ্ট ইঙ্গিত।