অখিলেশ যাদবের পর বিজেপিকে রুখতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পূর্ণ শক্তি দিয়ে সমর্থনের ঘোষণা করলেন লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব। পশ্চিমবঙ্গে আট দফায় বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে মমতার অবস্থানকে সমর্থন করেছেন সমাজবাদী সুপ্রিমো। ভোটে তৃণমূলনেত্রীকে বিভিন্ন ব্যাপারে বিজেপি-র ‘কৌশল’ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন অখিলেশ। অন্যদিকে, তেজস্বী জানিয়েছেন, বিজেপির হাত থেকে দেশের সংবিধান, বাংলার ভাষা, সংস্কৃতি, সভ্যতাকে বাঁচাতে হবে। তাই বঙ্গ রাজনীতিতে আরজেডি তৃণমূলকে সমর্থন করছে।
Advertisment
অখিলেশ ও তেজস্বী, হিন্দি বলয়ের এই দুই নেতাই বাংলায় বসবাসকারী উত্তরপ্রদেশ ও বিহারী ভোটারদের তৃণমূলকে ভোট দেওয়ার ডাক দিয়েছেন। যা ভোটের আগে মমতার শিবিরের জন্য অত্যন্ত স্বস্তির। বিজেপিকে 'বহিরাগত' তকমায় দেগে দিতে মরিয়া তৃণমূল। যার পাল্টা প্রচারে গেরুয়া শিবির বলছে, তৃণমূল অবাঙালি বিরোধী। তাই বাঙালি ছাড়া বাকি দেশবাসীকে বহিরাগত বলে মনে করে। এই প্রেক্ষাপটে হিন্দিভাষীদের ভোট পদ্ম ঝুলিতে যেতে পারে বলে আভাস বহু রাজনৈতিক পণ্ডিতের। এই পরিস্থিতি সোমবার হিন্দি বলয়ের দুই জনপ্রিয় তরুণ নেতার আহ্বান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোটের লড়াইয়ে বাড়তি অক্সিজেন দেবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
একুশের ভোটে তৃণমূলকে সমর্থনের বার্তা দিতে রবিবার ব্রিগেডের সভায় আসেননি আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। সোমবার বিকেলে নবান্নে মমতা-তেজস্বী বৈঠক হয়। আসন্ন ভোটে বাংলায় লড়াইয়ের জন্য তৃণমূলের থেকে কয়েকটি আসন আরজেডি চাইতে পারে বলে জল্পনা দানা বাঁধে। কিন্তু, আসন রফা বা ভোটে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে এদিন মমতা বা তেজস্বী কেউই মুখ খোলেননি।
Advertisment
নবান্নে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এক্সপ্রেস ফটো
বৈঠক শেষে তেজস্বী যাদবকে এগিয়ে দিতে নবান্নের একতলায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানের প্রথমে তেজস্বী যাদব বলেন, 'বিজেপিকে রুখতে হবে। তাই যেভাবে প্রয়োজন সেভাবেই পূর্ণমাত্রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যেয়র পাশে থাকব। দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে।' একই সঙ্গে আসন্ন ভোটে বাংলায় বসবাসকারী বিহারী ভোটারদের তৃণমূলকে সমর্থনের ডাক দেন। বলেন, 'বাংলায় অনেক হিন্দিভাষী থাকেন। আমার সবার কাছে আবেদন মমতাকে জেতান। বাংলার সভ্যতা, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, ভাষাকে বাঁচাতে মমতাকে সমর্থন করুন।'
উত্তরপ্রদেশের উদাহরণ টেনে এদিন তৃণমূল নেত্রীকে সতর্ক করেছেন সপা নেতা অখিলেশ যাদবও। তাঁর কথায়, 'বুথে পোলিং এজেন্টদের নিয়েও সতর্ক হোন মমতাজি। বুথে যাতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের এজেন্ট রাখা হয়, তা নিশ্চিত করুন তিনি। কারণ সব দলের এজেন্ট যদি না থাকে, তা হলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশা করাই বৃথা।'
আট দফায় নির্বাচনের প্রতিবাদ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। একই সঙ্গে এক জেলায় কেন একাধিক দফায় ভোট তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অখিলেশ। এ প্রসঙ্গে মমতার সঙ্গে সহমত সমাজবাদী প্রধান। তাঁর কথায়, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণ সহমত। এটা বিজেপি-র অনেক দিনের পুরনো রণনীতি। যত বেশি দফায় সম্ভব ভোট করাতে হবে, যাতে নির্বাচনের ক্ষেত্রে বেশি সমস্যা তৈরি করা যায়।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন