অনির্দিষ্টকালের জন্য জেট এয়ারওয়েজের উড়ান বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে কলকাতায় বিপর্যয়ের মুখে পড়েছেন প্রায় পাঁচ হাজার কর্মী। সারা দেশে কাজ হারানোর আশঙ্কা প্রায় ২০ হাজার কর্মীর। লোকসভা নির্বাচনের আগে এবার সেই কর্মীদের পাশে থাকা নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছে তৃণমূল ও বিজেপির মধ্যে। দমদমের তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থী জেটের কর্মীদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। শনিবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপি প্রার্থী শমীক ভট্টাচার্য জানান, কলকাতার পাঁচ হাজার জেট কর্মীদের পাশে থাকার জন্য চিঠি লিখে প্রধানমন্ত্রীকে তিনি আবেদন জানিয়েছেন।
এই সঙ্কট নিয়ে ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর বৈঠকেও বসেছিল। দমদমের বিজেপি প্রার্থীর বক্তব্য, "এটা প্রাইভেট সংস্থা হলেও সরকার যদি পাশে দাঁড়িয়ে কোনও সাহায্য করতে পারে তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি।" ভোট চলাকালীন সরকার কি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারে? জবাবে শমীক বলেন, "এটা তো মানবিক বিষয়।"
দেশে লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন বন্ধ হয়ে গিয়েছে জেট এয়ারওয়েজের উড়ান। গত বুধবার রাতে ৯ ডাব্লু ২৫০২ অমৃতসর-মুম্বাই উড়ানের পর ওড়েনি জেটের কোনও বিমান। এর ফলে ওই সংস্থার প্রায় ২০ হাজার কর্মী অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে। কলকাতায় জেটের কর্মীদেরও মাথায় হাত পড়েছে। দমদম লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী সৌগত রায় দাবি করেছেন, মোদী সরকারের জন্যই এই হাল হয়েছে জেটের কর্মীদের। যদিও দমদমের বিজেপি প্রার্থী ওই দাবি এদিন উড়িয়ে দিয়েছেন।
শনিবার দলের রাজ্য দপ্তরে এক সাংবাদিক বৈঠকে শমীকবাবু বলেন, "অন্য রাজনৈতিক দলের কেউ কেউ বিমানবন্দরে গিয়ে জেটের উড়ান বন্ধ হওয়া নিয়ে নরেন্দ্র মোদীকে দোষারোপ করছেন। মোদীর চক্রান্ত বলে দাবি করেছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে মোদীজির কোনও দোষ নেই। জেট এয়ারওয়েজ প্রাইভেট সংস্থা। তা সত্ত্বেও আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছি।"
চলতি সপ্তাহে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিষেবা বন্ধ করে দেয় জেট এয়ারওয়েজ। বর্তমানে জেট এয়ারওয়েজ স্টেট ব্যাঙ্কের নেতৃত্বে একটি কনসর্টিয়ামের পরিচালন গোষ্ঠীর আওতায় রয়েছে। ব্যাঙ্কারদের কাছে জেট আপতকালীন ৯৮৩ কোটি টাকা অনুদানের জন্য যে অনুরোধ করেছিল জেট, তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই মন্দা চলছিল জেট এয়ারওয়েজে। মাথার উপর আট হাজার কোটি টাকা ঋণের বোঝা রয়েছে সংস্থার। এর আগে জেটের কর্মীরাও প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁর হস্তক্ষেপের আবেদন করেছিলেন।