'ভোট হবে শুধুমাত্র ইভিএম-এর মাধ্যমে, ব্যালট পেপারে ফিরে যাওয়ার আবেদন খারিজ করে একথা জানিয়েছে শীর্ষ আদালত। আজ সুপ্রিম কোর্ট থেকে স্বস্তি পেল নির্বাচন কমিশন ভিভিপিএটি সংক্রান্ত সমস্ত আবেদন খারিজ করল শীর্ষ আদালত।
'ব্যবস্থাকে অন্ধভাবে সন্দেহ করা ভুল', VVPAT নিয়ে তার আদেশে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। ১০০ শতাংশ VVPAT ইভিএম মিলিয়ে দেখার আর্জি খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে VVPAT-এ বার কোড ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে আদালত। পাশাপাশি ব্যালট পেপারে ভোটদানের আর্জিও খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং দীপঙ্কর দত্তর ডিভিশন বেঞ্চ।
শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট ইভিএম অর্থাৎ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে ভোটার ভোটার ভেরিফাইয়েবল পেপার অডিট ট্রেল (ভিভিপিএটি) স্লিপের ১০০ শতাংশ ক্রস চেকিং মামলায় তার রায় দিয়েছে আদালত। VVPAT মামলায় বেশ কয়েকদিন শুনানির পর সুপ্রিম কোর্ট থেকে বড়সড় স্বস্তি পেল নির্বাচন কমিশন। লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটের মধ্যে, সুপ্রিম কোর্ট ভিভিপিএটি স্লিপের সঙ্গে ইভিএমের মাধ্যমে প্রদত্ত ১০০ শতাংশ মিলিয়ে দেখার সবকটি পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে। শুধু তাই নয়, ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার দাবিও নাকচ করা হয়। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না বলেছেন যে আমরা VVPAT সংক্রান্ত সমস্ত আবেদন খারিজ করেছি।
বিচারপতি সঞ্জীব খান্না তার আদেশে নির্বাচন কমিশনকে ভোটের পর নির্বাচন কমিশনকে ভোটের পর ৪৫ দিন পর্যন্ত ইভিএম সুরক্ষিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। আদালত আরও বলেছে, অন্ধভাবে সিস্টেম নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। কোনো প্রার্থী ভোট যাচাই-দাবি করলে সেক্ষেত্রে তার কাছ থেকে তার খরচ আদায় করতে হবে, যদি ইভিএমে কোনো কারচুপির প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে তার খরচ তাকে ফেরত দিতে হবে।
আসলে, ইভিএম এবং ভিভিপিএটি স্লিপের ১০০ শতাংশ মিলের দাবিতে অনেক সংস্থা সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দায়ের করেছিল। আগের শুনানির সময়, সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ তার সিদ্ধান্ত সংরক্ষণ করেছিল। এই বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তও। এর আগে বুধবার, আদালত ইভিএমের কার্যকারিতা সম্পর্কিত কিছু প্রযুক্তিগত দিক স্পষ্ট করার জন্য ভারতের নির্বাচন কমিশনের একজন কর্মকর্তাকে ডেকে পাঠায়।
দ্বিতীয় দফার ভোটের মধ্যেই শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট ভিভিপিএটি স্লিপের সঙ্গে ইভিএম ভোটের ১০০ শতাংশ মিলিয়ে দেখার আর্জি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ বলেছে যে কোনও ব্যবস্থাকে অন্ধভাবে সন্দেহ করা যে কোনও ব্যবস্থার প্রতি সন্দেহ তৈরি করতে পারে।
বেঞ্চ বলেছে, 'একটি ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি গুরুত্বপূর্ণ। যে কোন ব্যবস্থাকে অন্ধভাবে সন্দেহ করা উচিত নয়। অর্থপূর্ণ সমালোচনার প্রয়োজন আছে, সেটা বিচার বিভাগই হোক বা আইনসভা। গণতন্ত্র হল সকল স্তম্ভের মধ্যে সম্প্রীতি ও বিশ্বাস বজায় রাখার একমাত্র উপায়। আস্থা ও সহযোগিতার সংস্কৃতি প্রচার করে আমরা আমাদের গণতন্ত্রের কণ্ঠস্বরকে শক্তিশালী করতে পারি। ইভিএম সংক্রান্ত আবেদন খারিজ করার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে দুটি নির্দেশও দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
প্রথম নির্দেশে আদালত বলেছেন, ইভিএমে দলীয় প্রতীক বা সিম্বল লোড করার পর তা সিল করে দিতে হবে এবং ভোট হয়ে যাওয়ার পর কমপক্ষে ৪৫ দিন ইভিএম-কে সংরক্ষণ করতে হবে। ইভিএমের মাইক্রোকন্ট্রোলারে থাকা পুরনো বা বার্ন্ট মেমরি ইঞ্জিনিয়াররা যাচাই করবেন। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে থাকা প্রার্থীদের লিখিত দাবির ভিত্তিতে ইভিএম পরীক্ষা করা যাবে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে এ দাবি জানানো যেতে পারে। তদন্ত দাবি করা সেই প্রার্থীকে এর খরচ বহন করতে হবে এবং ইভিএম কারচুপির অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে নির্বাচন কমিশনকে প্রার্থীর সকল খরচ ফেরত দিতে হবে।