আগামী ১৭ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশে ২৩০টি বিধানসভা আসনে এক দফায় ভোট পর্ব অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। রাজ্যে ক্ষমতাসীন বিজেপির মূল প্রতিদ্বন্ধী কংগ্রেস। দুটি দলই এবারের নির্বাচনে ভাল ফলের আশা করছে। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া। তবে কংগ্রেস এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে চাইছে না। ক্ষমতা কার হাতে থাকবে তা ঠিক হবে ৩রা ডিসেম্বর।
নির্বাচনী উত্তাপে ফুটছে মধ্যপ্রদেশ। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে শপিং মন সকলেরই নজরে আসন্ন হাই-ভোল্টেজ নির্বাচন। রাজ্যের বেশিরভাগ মানুষ বিশ্বাস করেন যে আসন্ন নির্বাচনে যে বিষয়টি প্রভাব ফেলবে তা হল মুদ্রাস্ফীতি এবং বেকারত্ব। একই সঙ্গে দুর্নীতির ইস্যুতে সুর চড়িয়েছে কংগ্রেস।
সরকারি নিয়োগে কেলেঙ্কারির বিষয়টিও কি ভোটে প্রভাব ফেলবে? রাজ্যের প্রায় ৪৩ শতাংশ মানুষ বিশ্বাস করেন যে এটি আসন্ন নির্বাচনে একটি বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াতে পারে। পাশাপাশি নির্বাচনে সংরক্ষণের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন রাজ্যের ৩৪ শতাংশ জনগণ।
চার বারের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের কাছে রাজ্যে বিজেপিকে ক্ষমতায় ফেরানো একটা বড় চ্যালেঞ্জ। একদিকে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ভোটারদের মধ্যে অসন্তোষ এবং পাশাপাশি দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলও নির্বাচনে প্রভাব ফেলতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
নির্বাচনের আগে প্রথমবারের মতো, পাঁচটি প্রাক-নির্বাচন "জন আশীর্বাদ যাত্রা" রাজ্যের বিভিন্ন দলের নেতাদের নেতৃত্বে করা হয়েছিল। তিনজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সহ সাতজন সাংসদ এবং দলের একজন সাধারণ সম্পাদককে এবার রাজ্যে ভোট পরিস্থিতির পর্যবেক্ষণে নামানো হয়েছে। ভিন রাজ্য থেকে শীর্ষ নেতাদের প্রচারের জন্য নিয়ে আসছে বিজেপি। প্রথম বারের মত মধ্যপ্রদেশে নিজেদের জমি ধরে রাখতে বিজেপিকে এতটা কসরত করতে হচ্ছে।
ভোপালে বিজেপির এক প্রবীণ নেতা একে "সম্মিলিত নেতৃত্ব" বলে উল্লেখ করলেও বিজেপির অভ্যন্তরে দলীয় কোন্দল যে প্রভাব ফেলতে পারে আসন্ন নির্বাচনে সেকথা মেনে নিয়েছেন বিজেপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা। বিজেপি মিডিয়া সেন্টারে, সরকারি প্রকল্পের বিজ্ঞাপনের পোস্টারে দাবি করা হয়েছে “এমপি কে মন মে মোদী”। পাশাপাশি সাংসদ শঙ্কর লালওয়ানিও চৌহানের কথা মুখে না এনেই বলেছেন, "ইন্দোর ডাবল ইঞ্জিন সরকার থেকে উপকৃত হয়েছে... আমাদের নেতা হলেন মোদী।"
ছিন্দওয়ারায় বিহারের প্রাক্তন উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী যিনি দলের তরফে নির্বাচনের কাজে রাজ্যে নিযুক্ত রয়েছে, তিনি বলেছেন: “আমরা এখানে ভোট চাইতে নয়, দলের নেতা-কর্মীদের সমন্বয়ের জন্য, দলকে আরও মুজভূত করতে এসেছি"।
দলের তরফে এক সিনিয়র নেতা বলেছেন, কিছুটা হলেও, এটা আশ্চর্যজনক, এমনকি অনিবার্যও, যে দলের মধ্যে মতভেদ দূর করতে হবে। এই নির্বাচনে যারা টিকিট প্রত্যাখ্যান করেছে, এবং তাদের উৎসাহিত করতে হবে। দলাদলি, মতভেদ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। ভোপালে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন রাজ্য দলের প্রবীণ নেতা বলেছেন, মূল সমস্যাটি হল “যারা দলের জন্য কাজ করেছেন এবং আত্মত্যাগ করেছেন তারাই আজ ব্রাত্য হয়ে পড়েছেন”। ।
তিনি আরও বলেন, একদিকে বিজেপির বেশ কিছু পুরনো নেতা -কর্মী আজ অবহেলিত এবং উপেক্ষিত। অন্য দিকে, একটি অংশ ক্ষমতা জাহির করতে ব্যস্ত’। বিজেপির বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারে আক্রমণ শানিয়েছেন রাহুল গান্ধী। তিনি দাবি করেন, মধ্যপ্রদেশের ভিত উপড়ে ফেলেছে বিজেপি। রাহুল বিজেপিকে নিশানা করে বলেন, ‘রাজ্যের ভিত্তি হল কৃষক, ভিত্তি হল মজুর, ছোট দোকানদার, বেকার যুবক, এদের সবাইকে গত ১৫ বছরে বিজেপি শেষ করে দিয়েছে’।