আগামী ৬ মে লোকসভা নির্বাচনের পঞ্চম দফার ভোট অনুষ্ঠিত হবে হাওড়ায়। তার মধ্যেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তর্ঘাতের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হাওড়া এবং হাওড়া সংলগ্ন এলাকায়। ভোটযুদ্ধে সাধারণ মানুষদের নিরাপত্তা দিতে এসে নিজেদের মধ্যে বচসায় প্রাণ খোয়ালেন এক জওয়ান। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার বাগনানের জ্যোতির্ময় গার্লস স্কুলে। ওই স্কুলেই ভোটের জন্যে অস্থায়ী ক্যাম্প করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর।
ঘটনায় দায় স্বীকার করেনি কোনও পক্ষ। তবে পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডেপুটি জেনারেল (আইন শৃঙ্খলা) সিদ্ধিনাথ গুপ্তা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, "এই ঘটনায় একজন মারা গেছেন, দু'জন গুরুতর আহত হয়েছেন, এবং অভিযুক্ত জওয়ানের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।"
পুলিশ সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, অসম রাইফেলসের জওয়ান লক্ষ্মীকান্ত বর্মণ এই গোটা ঘটনার জন্য দায়ী। তাঁর বন্দুক থেকে ছোড়া ১৩ রাউন্ড গুলিতে প্রাণ যায় আরেক জওয়ানের, গুরুতর আহত হন দু'জন। নিহত সৈনিকের নাম ভোলানাথ দাস, যিনি আসাম রাইফেলসের সেভেন্থ ব্যাটালিয়নে অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আহত দুই সৈনিক হলেন অনিল রাজবংশী এবং রন্তু মনি। কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাঁরা।
লোকসভা নির্বাচনের আরও খবর পেতে পড়ুন
এক পুলিশ আধিকারিক সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, লক্ষ্মীকান্ত বর্মণের মানসিক কিছু সমস্যা থাকায় তাঁকে ডিউটি থেকে বাদ রাখা হয়েছিল। তাঁর পরিবারকেও জানানো হয়েছিল তাঁর মানসিক অবস্থার কথা, এবং তাঁরা লক্ষ্মীকান্তের সঙ্গে দেখা করতে হাওড়া অভিমুখেই আসছিলেন বলে খবর। সূত্রের আরও খবর অনুযায়ী, যে রাইফেল থেকে গুলি চালান লক্ষ্মীকান্ত, সেটি তাঁর সহকর্মীর কাছ থেকেই ছিনিয়ে নিয়েছিলেন তিনি। আরেক সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই ছুটি না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন লক্ষ্মীকান্ত। এ সম্বন্ধে জানতে চাওয়া হলে এক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক বলেন, "সব দাবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে, আপাতত হেফাজতে রয়েছেন অভিযুক্ত।"
পুলিশের তরফ থেকে কোনও সরকারী বিবৃতি দেওয়া হয়নি এখনও পর্যন্ত। তবে স্থানীয় এক পুলিশ সূত্র জানায়, অনেকদিন ধরেই মানসিক চাপে ছিলেন অভিযুক্ত। ঘটনার পর এলাকাটিতে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এলাকার পরিস্থিতি এই মুহুর্তে নিয়ন্ত্রণে আছে। তবে মনে করা হচ্ছে, ভোটের মুখে এই ধরণের ঘটনায় কিছুটা অস্বস্তিতে পড়বে কেন্দ্রীয় সরকার।
Read the full story in English