'ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচনে কী হয়েছিল তা হয়তো আপনি ভুলে গেছেন, কিন্তু আমাদের মনে আছে…'! প্রশান্ত ভূষণকে কেন একথা বলল সুপ্রিম কোর্ট?
ইভিএমের ভোটের সঙ্গে ভিভিপ্যাট স্লিপ মিলিয়ে দেখার আর্জিতে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া মামলার শুনানি ছিল মঙ্গলবার। সেখানেই শীর্ষ আদালত গোপন ব্যালট পদ্ধতি নিয়ে এমন মন্তব্য করল।
ইভিএমে কারসাজির আশঙ্কা প্রকাশ করে এবং ইভিএমের সঙ্গে ভিভিপিএটি স্লিপগুলির ১০০ শতাংশ মিলিয়ে দেখার দাবি করে শুনানির প্রেক্ষিপ্তে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট সিস্টেমের উপর সন্দেহ না করার পরামর্শ দিয়েছে। শীর্ষ আদালত বলেছে, আমাদের কাউকে বিশ্বাস করতে হবে, এইভাবে ব্যবস্থা লঙ্ঘনের চেষ্টা করবেন না।
ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন হলে কী হয়েছিল?
আবেদনকারীরা ব্যালট নির্বাচনের জার্মানির উদাহরণ দিলে সুপ্রিম কোর্ট বলে ভারতে নির্বাচন পরিচালনা করা একটি বড় কাজ, এমন উদাহরণ দেবেন না কারণ জার্মানির জনসংখ্যা ৬কোটি যেখানে ভারতে ৯৭ কোটি রেজিস্টার ভোটার রয়েছে। শুধু তাই নয়, পিটিশনকারী সংস্থার পক্ষে ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন সংক্রান্ত শুনানিতে আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণকে আদালত বলেছেন, 'ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচনে কী হয়েছিল তা হয়তো আপনি ভুলে গেছেন, কিন্তু আমাদের তা মনে রয়েছে'।
বেসরকারী সংস্থা 'অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্রেটিক রিফর্মস'-এর দায়ের করা আবেদনের শুনানির সময় বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চ এই মন্তব্য করেন। শুনানির সময় আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ ইভিএম এবং ভিভিপিএটি সিস্টেমে কারচুপির আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। তিনি বলেন, তিনি বলছেন না কারসাজি হয়েছে, তিনি বলছেন ম্যানিপুলেশন করা যায়। ইভিএম এবং ভিভিপিএটিগুলি প্রোগ্রামেবল চিপ এবং তাদের মধ্যে ক্ষতিকারক প্রোগ্রামগুলির মাধ্যমে কারসাজি সম্ভব।
আদালত নির্বাচন কমিশনকে ভোটদান থেকে ভোট গণনা, ডেটা এবং ইভিএম মেশিন, ভিভিপিএটি ইত্যাদির সুরক্ষার জন্য সমস্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে বলেছে। ইউরোপের কয়েকটি দেশের ব্যালট পদ্ধতিতে ফেরার যুক্তি প্রসঙ্গে বিচারপতি দত্ত বলেন, 'নির্বাচন পরিচালনা একটি বড় কাজ। ইউরোপের কোন দেশে এমন উদাহরণ নেই। আপনি জার্মানির কথা বলেছেন, কিন্তু সেখানে জনসংখ্যা কত? আমার নিজের রাজ্য বাংলা নিজেই জার্মানির থেকে বেশি জনবহুল। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় আমাদের আস্থা ও বিশ্বাস বজায় রাখতে হবে। এই মত সিস্টেম প্রত্যাখ্যান করার চেষ্টা করবেন না। ভূষণ যখন বলেছিলেন যে বেশিরভাগ মানুষ ইভিএমে বিশ্বাস করেন না, তখন বিচারপতি দত্ত প্রশ্ন করেছিলেন যে তিনি এই ডেটা কোথা থেকে পেয়েছেন।
বেঞ্চ বলেছে যে তারা এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে তথ্য চেয়েছে এবং পুরো প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করতে বলেছে। নির্বাচন কমিশন পরিসংখ্যান দেবে এবং আদালত তা খতিয়ে দেখবে। শুনানিকালে আদালত নির্বাচন কমিশনের কাছেও জানতে চেয়েছেন, কারচুপির জন্য শাস্তির বিধান আছে কি না। শাস্তির বিধান একটা গুরুতর বিষয় বলে অভিমত আদালতের।
কমিশনের আইনজীবী যখন বলেন, নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য শাস্তির বিধান আছে। তখন আদালত বলে, তিনি পদ্ধতির কথা বলছেন না। ম্যানিপুলেশনের জন্য কোন নির্দিষ্ট শাস্তি আছে কিনা তা বলুন। বৃহস্পতিবার ফের এই মামলার শুনানি হবে। সব বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে কিনা, তা জানতে চায় সুপ্রিম কোর্ট। তাতে কমিশন জানিয়েছে যে ৫০ শতাংশ বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা আছে।
আরও পড়ুন- Dubai Rain: ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত আমিরশাহী, জলে ডুবল রাস্তা-ব্যাহত জনজীবন, মৃত্যু একজনের