সামনেই রাজস্থান নির্বচন। তার আগে কংগ্রেসের একাধিক হেভিওয়েট নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এবার উদয়পুরের দর্জি খুন সরাসরি বিজেপিকে অভিযুক্ত করলেন রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। মারাত্মক অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বলেছেন, উদয়পুরের দর্জি কানহাইয়া লাল হত্যায় অভিযুক্তরা ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সক্রিয় কর্মী। গত বছরের ২৮শে জুন কানহাইয়া লালকে উদয়পুরে তার দোকানে ২ জন খুন করে এবং তার হত্যাকাণ্ডে সারা দেশ জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন যে কানহাইয়া লালের হত্যার অভিযুক্তরা তার হত্যার কয়েক দিন আগে অন্য একটি মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করে এবং বিজেপি নেতারা তাদের মুক্তিতে থানায় এসেছিলেন।
বিজেপির বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের এমন অভিযোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। কংগ্রেস নেতা আরও অভিযোগ করেছেন যে বিজেপি রাজস্থানে ২৫ শে নভেম্বর বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাম্প্রদায়িক উত্তে জনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
কংগ্রেস রাজ্যে দূষ্কৃতিদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর এর পরেই গেহলটের তরফে এই প্রতিক্রিয়া সামনে এসেছে।
বৃহস্পতিবার উদয়পুরের কাছে একটি নির্বাচনী সমাবেশে দর্জি কানহাইয়া লালের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি এই মন্তব্য করেন। সেই জনসভায় মোদী বলেছিলেন, "কানহাইয়া লাল জির হত্যা রাজ্য সরকারের এক বড় ব্যার্থতা। উদয়পুরে এমন জঘন্য ঘটনা ঘটেছে কারণ সেখানে কংগ্রেস সরকার দূষ্কৃতিদের প্রতি সহানুভূতিশীল।"
প্রধানমন্ত্রী মোদীর মন্তব্যের জবাবে গেহলট রবিবার বলেছিলেন, "বিজেপি নির্বাচনের ফলাফলা আঁচ করতে পেরেছে তাই তারা অদ্ভুত দাবি করছে। " কানহাইয়া লাল হত্যার তদন্ত সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, গেহলট বলেছিলেন যে রাজস্থান পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি) এটি জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) চেয়ে ভালভাবে পরিচালনা করতে পারত। তিনি বলেছিলেন যে এনআইএর পরিবর্তে এসওজি এই মামলার তদন্ত আরও ভালভাবে করতে পারত।
গেহলট আরও দাবি করেন "এনআইএ কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা কেউ জানে না। আমাদের এসওজি যদি মামলাটি চালিয়ে যেত, তাহলে অপরাধীদের এতদিনে বিচারের আওতায় আনা সম্ভব হত।" গত বছরের জুনে, কানহাইয়া লালকে উদয়পুরে তার দোকানে দুই ব্যক্তি খুন করে, যারা পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
গাউস মোহাম্মদ এবং রিয়াজ আত্তারি নামে দুই ব্যক্তি পরে একটি ভিডিও রেকর্ড করেন যাতে তারা কানহাইয়াকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযুক্তরা জানিয়েছে বিজেপির প্রাক্তন মুখপাত্র নুপুর শর্মার বক্তব্যকে সমর্থন করার জন্যই কানহাইয়া লালকে হত্যা করা হয়। নূপুরের বিতর্কিত মন্তব্যে উত্তাল হয় গোটা ভারত। একটি টিভি চ্যানেলে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন নূপুর। ওই ঘটনার পর নূপুরকে পদ থেকে সরিয়ে দেয় বিজেপি।