বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে যখন পারস্পরিক দোষারোপের পালা চলছে, সে সময়েই তৃণমূল নেতা ডেরেক ও ব্রায়েন একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। ওই ভিডিও দেখিয়ে তাঁর দাবি, বিজেপির গুণ্ডারাই এই মূর্তি ভেঙেছে।
নয়া দিল্লিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনে ডেরেক ও ব্রায়েন বলেন, ছাত্ররা কালো পতাকা নিয়ে গণতান্ত্রিক ভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল। অমিত শাহের বাংলার বাইরে থেকে আসা গুণ্ডারা এখানে হিংসা ছড়ায়। এই ভিডিও থেকেই প্রমাণিত যে অমিত শাহ একজন মিথ্যাবাদী।
ডেরেক ও ব্রায়েন ওই সাংবাদিক সম্মেলনে একটি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজের ছবিও দেখান। সেখানে অমিত শাহের রোড শো-তে যোগ দিয়ে তৃণমূল এবং পুলিশের সঙ্গে মারামারি করার জন্য রড ও অস্ত্র নিয়ে আসার আহ্বান জানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, কলকাতার মানুষ এ ঘটনায় রুষ্ট, আহত।
ডেরেক বলেছেন, "তাঁর দল এই ভিডিও নিয়ে নির্বাচন কমিশনে যাবে। তিনি বলেন, হিংসার সময়ে বিদ্যাসাগর শেষ, জোশ কোথায়! এধরনের শ্লোগানের ভিডিও জোগাড় করার চেষ্টা করছি।"
তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই সাংবাদিক সম্মেলন করা হয় অমিত শাহের সাংবাদিক বৈঠকের পরে পরেই। অমিত শাহ বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার জন্য তৃণমূলকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, "বিদ্যাসাগরের মূর্তি কলেজের ভিতরে রাখা ছিল। ঘর তালাবন্ধ ছিল, চাবি কার কাছে ছিল! তৃণমূল কংগ্রেস কলেজের দখল নিয়েছিল। ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতি এবং সহানুভূতি কুড়োনোর জন্য মহান এই শিক্ষাবিদের মূর্তি ভাঙার ঘটনা প্রমাণ করে দিয়েছে যে তৃণমূলের শেষের শুরু।"
অমিত শাহের অভিযোগের উত্তরে ডেরেক বলেন, "বিজেপি নিজেদের কাজের পক্ষে যুক্তি খাড়া করছে। ওরা গেট বন্ধ ছিল জাতীয় ছুতো দেখাচ্ছে। অমিত শাহ একজন ঠগের রাজা।"
রাজ্য সভার সাংসদ অভিযোগ করেন যে পশ্চিম বঙ্গে নিযুক্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী বিজেপিকে ভোট দেওয়ার ব্যাপারে কানে কানে প্রচার চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, "কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত ভাবে আমাদের কিছু বলার নেই। আমাদের কাছে দুটি ছবি রয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে তারা বাংলায় বিজেপির সঙ্গে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। বিজেপির প্রার্থীরা বুথে ঢুকছেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে। তারা মানুষকে জোর করে বিজেপিকে ভোট দেওয়াচ্ছে।"
লোকসভা ভোটের সপ্তম দফার প্রচারে কলকাতায় এসেছিলেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। মঙ্গলবার তাঁর রোড শো ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে কলকাতা। বোতল-ইট-পাথর ছোড়াছুড়ি তো ছিলই, বিদ্যাসাগর কলেজে বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙা হয়েছে।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাস ও বিদ্যাসাগর কলেজের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।