তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় আরাবুল ইসলামের নাম না থাকায় উত্তাল হয়েছিল ভাঙড়। চোখের জল ফেলে দলের বিরুদ্ধে অভিমানের কথা তুলে ধরেছিলেন খোদ 'তাজা নেতা' আরাবুল ইসলাম। জোড়া-ফুলের বিরুদ্ধে ক্ষোভের কথা গোপন করেননি ভাঙড়ের বিদায়ী বিধায়ক তথা বর্ষীয়ান নেতা রেজ্জাক মোল্লাও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আরাবুলের ক্ষতে প্রলেপ পড়েছে। দলীয় প্রার্থীর হয়েই প্রচার করছেন তিনি। সোমবার ভাঙড়ের প্রচারে ও দেখা যায় 'দিদি'র বিশ্বস্ত এই সৈনিককে। ফললে ভোটের আগে স্বস্তিতে তৃণমূল নেত্রী। কেন আরাবুল, কাইজার বা রেজ্জাক মোল্লাকে এবার ভাঙড়ের প্রার্থী করা হয়নি ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিয়ে এদিন সেই কথাই খোলসা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
কী বলেছেন মমতা?
'দলে তাঁর প্রয়োজন ফুরিয়েছে', প্রার্থী তালিকায় নাম দেখতে পেয়ে ক্ষোভে সেকথাই সোচ্চারে বলেছিলেন আরাবুল ইসলাম। জানিয়ে দিয়েছিলেন, বাঙড়ের তৃণমূল প্রার্থী ডাঃ রেজাউল করিম 'বহিরাগত'। তাঁকে কোনওভাবেই সমর্থন করা যাবে না।এমনকি আরাবুলের সমর্থনে তাঁর অনুগামীরা দলীয় পার্টি অফিসেও ভাঙচুির চালায়, রাস্তা টায়ার জ্বালিয়ে বরোধ করা হয়।এরপরই ভাঙড়ে তৃণমূলের জয় নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য ডাঃ রেজাউল করিম প্রথম দিনই ভাঙড়ে গিয়ে দেখা করেন আরাবুলের সঙ্গে। তাতেই অনেকটা জট কাটে। দলীয় প্রার্থীকেই ভোটে সমর্থনের কথা জানান আরাবুল ইসলাম।
অন্যদিকে বয়সজনিত কারণের নীতি মেনে এবার ভাঙড়ের বিদায়ী বিধায়ক রেজ্জাক মোল্লাকে আর প্রার্থী করেননি মমতা। যে কায়দায় তাঁর নাম বাতিল করা হয়েছিল তা নিয়েই ক্ষোভ উগরে দেন বর্ষীয়ান এই নেতা। ধরা পড়ে তাঁর অসন্তোষের বিষয়টি।
ভাঙড়ে প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ কাটলেও ভোটের আগে টিকিট না পাওয়াদের মন জয়ে এদিন উদ্যোগী ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। প্রচার মঞ্চে আরাবুল-কাইজারের উপস্থিতিতে এদিন মমতা বলেন, 'এবার রেজ্জাক মোল্লা প্রার্থী হতে চাননি। আর দেখলুম আরাবুল, কাইজাররা রয়েছেন। এছাড়াও দেখললাম ডাঃ রেজাউল করিমও রয়েছেন। আমি তাঁকেই এখান তেকে টিকিট দিয়েছি। এর পিছনে একটা বিশেষ উদ্দেশ্য রয়েছে। সেটা হল ভাঙড়ে আমি একটা হাসপাতাল গড়তে চেয়েছিলাম। চেন্ডারও হয়েছিল, কিন্তু যিনি টেন্ডার পেয়েছিলেন তিন চলে গিয়েছেন। আমাদের জায়গা রয়েছে। সেটাতেই ডাঃ রেজাউল করিমকে একটা হাসপাতাল গড়ার জন্য বলবো।'
এরপরই ভাঙড়ে উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন তৃণমূল নেত্রী। বানতলা ঘিরে ভাঙড়ের শিল্পায়ণ এগিয়ে চলবে বলেই জানান তিনি। বলেন, 'ভাঙড়ের লোকেদের পোয়াবারো। রাস্তাঘাট থেকে বানতলা সবকিছুর খুব উন্নয়ন হয়েছে। বানতলায় প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ চাকরি করেন। আরও করবেন।'
তৃণমূলের আমলে তোলাবাজির জন্য বাংলা থেকে শিল্প পাত্তারি গোটাচ্ছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। এ সম্পর্কে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখুন। যাঁরা শিল্প গড়ছে তাঁদের সহ্গে সহযোগিতা করে চলতে হবে।'
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন