নির্বাচনের দিন ঘোষণার পর কেটে গিয়েছে এক মাসের বেশি সময়। তার পর থেকে বিজেপির রাজনৈতিক অনুষ্ঠান সম্প্রচারে ডিডি নিউজ সময় দিয়েছে ১৬০ ঘণ্টা। সময়ের বিচারে এর পরেই রয়েছে কংগ্রেসের অনুষ্ঠান। কিন্তু তা তুলনায় অনেক কম। ৮০ ঘণ্টা সম্প্রচার করা হয়েছে কংগ্রেসের অনুষ্ঠান।
গত ৫ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া রিপোর্টে ডিডি নিউজ যে হিসেব দিয়েছে, তা অনুযায়ী তালিকায় তিন নম্বরে রয়েছে সিপিএম। নির্বাচনের দিন ঘোষণা হওয়ার পর থেকে অর্থাৎ আদর্শ নির্বাচনবিধি চালু হওয়ার পর থেকে ডিডি নিউজ এবং তার আঞ্চলিক শাখার চ্যানেলগুলিতে এই রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান বা কর্মসূচী সম্প্রচার করা হয়েছে মাত্র ৮ ঘণ্টা।
নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাত দেখানো যাবে না। খেয়াল রাখতে হবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান সম্প্রচারের সময়ের মধ্যে যেন মাত্রাতিরিক্ত ব্যবধান না থাকে। ডিডি-র দেওয়া হিসেবে কমিশনের এই নিয়মই লঙ্ঘিত হয়েছে।
আরও পড়ুন, ভোট মরসুমে রাজনীতির রঙ চড়েছে ইউটিউব ভ্লগিং-এ
ঘণ্টার হিসেবে প্রথম এবং দ্বিতীয় রাজনৈতিক দলের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য থাকা সত্তেও সংশ্লিষ্ট সম্প্রচার সংস্থা জানিয়েছে তাঁদের তরফে কোনও নির্দিষ্ট একটি রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাত ছিল না। সংস্থার এক আধিকারিকের মত, লোকসভায় বিজেপির আসন বেশি, তাছাড়া দেশের মোট ১৬টি রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় রয়েছে। তাই সময়ের ভিত্তিতে কভারেজ বিচার করলে বিজেপির এগিয়ে থাকা অস্বাভাবিক নয়। তিনি আরও বলেন, "বিজেপির সঙ্গে বাকি সমস্ত রাজনৈতিক দলের অনুষ্ঠান সম্প্রচারের সময়ের তুলনা করলে দেখা যাবে ভারসাম্য রয়েছে"।
নির্বাচন কমিশনের প্রশ্নের মুখে প্রসার ভারতীর সিইও শশী শেখর ভেম্পতি জানিয়েছেন কভারেজ একটা চলমান পদ্ধতি। আমাদের ৩০ টির বেশি চ্যানেল এবং রেডিও স্টেশনে অনুষ্ঠান সম্প্রচারিত হয়। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে বিচার করলে সঠিক হিসেব পাওয়া যাবে না"।
ডিডি নিউজ বিজেপির প্রতি পক্ষপাতিত্ব দেখাচ্ছে, কংগ্রেসের তরফে এরকম অভিযোগ এলে নির্বাচন কমিশন চ্যানেলের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট চায়। এর আগে সিপিআই(এম) এর সর্ব ভারতীয় সাধারণ সভাপতি সীতারাম ইয়েচুরি দূরদর্শন এবং অল ইন্ডিয়া রেডিওর কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন যতটা জোর দিয়ে মোদীর মিশন শক্তি নিয়ে দেওয়া ভাষণ সম্প্রচার করেছিল, ততটাই জোর দিয়ে তাঁদের দলীয় ভাষণ এবং বিবৃতিকে সম্প্রচার করা হোক।
৩১ মার্চের জাতির উদ্দেশে নরেন্দ্র মোদীর ‘ম্যায় ভি চৌকিদার’ ভাষণ কেন সম্প্রচার করা হল কয়েক ঘণ্টা ধরে, ডিডি নিউজের কাছে তার ব্যাখ্যা চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। কংগ্রেস তাঁদের অভিযোগে জানিয়েছে “শুধুমাত্র মোদীর ব্যক্তিগত কৃতিত্ব তুলে ধরার জন্য এই সম্প্রচার করা হয়েছে”। আরও অভিযোগ করা হয়েছে ডিডি নিউজের ইউটিউব চ্যানেল থেকে মোদীর ভাষণের লাইভ দেখানো হয়েছে এবং চ্যানেলের অফিসিয়াল সোশাল হ্যান্ডেলে তার প্রচারও চালানো হয়েছে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিডি জানিয়েছে খবরের উপযোগী হওয়ায় এএনআই এর কাছ থেকে তা সম্প্রচার করা হয়েছিল, ঠিক যেভাবে কংগ্রেসের নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ সরাসরি সম্প্রচারিত হয়েছিল।