'আমরা আসছি, আমাদের সবাইকে গ্রেফতার করুন', মোদীকে নিশানা করে হুঙ্কার ছুড়লেন আপ আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
স্বাতি মালিওয়াল নিগ্রহ মামলায় গতকালই নীরবতা ভাঙেন কেজরিওয়াল। আনেন শোরগোল ফেলা অভিযোগ। কেজরিওয়াল এই পুরো বিষয়টিকে ভারতীয় জনতা পার্টির 'ষড়যন্ত্র' বলে অভিহিত করে আজ রবিবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতর ঘেরাও করার ডাক দেন।
রবিবার অভিযানের আগে এক সাংবাদিক সম্মেলন করেন কেজরিওয়াল সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, 'আপ কর্মী সমর্থকদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। আপের অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করার পরিকল্পনা করেছে বিজেপি। স্রেফ ভোটের কারণে তারা সেটা করতে পারছে মা। ভোট মিটলেই তারা আপের অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করবে। আপের দলীয় কার্য্যালয় বন্ধ করে দেবে। আমরা দিল্লি এবং পাঞ্জাবে শিশুদের জন্য স্কুল তৈরি করেছি। আমরা দিল্লি এবং পাঞ্জাবে হাসপাতালগুলিকে ঢেলে সাজিয়েছি। কিন্তু মোদীজি এই সব করতে অক্ষম। তাই তিনি আপকে শেষ করে দিয়ে উঠে পড়ে লেগেছেন। আপ নেতাদের গ্রেফতার করতে এবং জেলে ভরার কথা বলছেন'।
কেজরিওয়াল আরও বলেন, এখন আমরা প্রতি মাসে মহিলাদের ১০০০ টাকা দিতে যাচ্ছি। আপের এই কর্মকাণ্ড নিয়ে সারা দেশে আজ আলোচনা করছে…।AAP আজ কেবল একটা রাজনৈতিক দল নয়। আপ আজ এক চিন্তা কীভাবে আপনি এই চিন্তার বদল ঘটাবেন? আপনি যদি একজন কেজরিওয়ালাকে গ্রেফতার করেন, তাহলে ১০০ জন কেজরিওয়াল আবার জন্ম নেবে”।
কেজরিওয়ালের এই ঘোষণার পরে, স্বাতি মালিওয়াল সিনিয়র আপ নেতা মনীশ সিসোদিয়ার প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালকে কটাক্ষ করেন। মালিওয়াল দাবি করেছেন যে ১৩ মে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে ঘটে যাওয়া ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ থেকে মূল অংশটিকে বাদ দেওয়া হয়েছে এবং আপের তরফে যে ফুটেজ সামনে আনা হয়েছে সেটি সম্পাদিত বলেও দাবি করেছেন তিনি।
মালিওয়ালের অভিযোগ, 'প্রথমে বৈভব আমাকে মারধর করে। সে আমাকে থাপ্পড় ও লাথি মারে। যখন আমি ১১২ নম্বরে কল করি, তখন তিনি বাইরে যান, নিরাপত্তা কর্মীদের ডেকে এনে ভিডিও করা শুরু করেন'। মালিওয়াল শনিবার গভীর রাতে এক্স-এ একটি পোস্টে দাবি করেছেন, 'ভিডিওটির সেই দীর্ঘ অংশটি সম্পাদনা করা হয়েছে এবং মাত্র ৫০ সেকেন্ডের ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।' সেই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, “একটা সময় ছিল যখন নির্ভয়ার বিচার পেতে আমরা সবাই রাস্তায় নেমে এসেছি। আজ, ১২ বছর পর, সিসিটিভি ফুটেজ উধাও! অভিযুক্তদের বাঁচাতে রাস্তায় নেমেছেন কেজরিওয়াল। মনীশ সিসোদিয়া জির জন্য আমরা যদি এভাবে চেষ্টা করতাম। তিনি যদি আজ এখানে থাকতেন, তাহলে হয়তো আমার সাথে এমনটা হতো না!”
স্বাতি মালিওয়াল মামলায়, দিল্লি পুলিশ শনিবার অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমারকে গতকালই গ্রেফতার করে। এরপরই সন্ধ্যায় মুখ খোলেন কেজরিওয়াল। তিনি জানান, আজ রবিবার আপের বিধায়ক-সাংসদরা বিজেপি সদর দফতর অভিযান করবেন। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, আদমি পার্টি অভিযানের বিষয়ে পুলিশের কাছে কোন অনুমতি নেয়নি। একই সঙ্গে আপ-কে নিশানা করছে বিজেপি।
আম আদমি পার্টির (এএপি) রাজ্যসভার সাংসদ স্বাতি মালিওয়ালের উপর হামলার মামলার তদন্ত যতই এগোচ্ছে, দিল্লিতে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়ছে। মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালের বাসভবনে মালিওয়ালের উপর হামলার কথিত অভিযোগের ভিত্তিতে বৈভব কুমারকে গ্রেফতারের পর তাকে ৪ ঘণ্টা ধরে জেরা করা হয়। আদালত বৈভবকে ৫ দিনের রিমান্ডের নির্দেশ দিয়েছে।
এদিকে গতকাল কেজরিওয়ালের বিজেপির সদর দফতর অভিযান ঘোষণার পর দিল্লি জুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশন (DMRC) বলেছে যে ITO মেট্রো স্টেশনে প্রবেশ এবং প্রস্থান পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিক্ষোভের বিষয়ে দিল্লি পুলিশ বলছে, আম আদমি পার্টি পুলিশের কাছে কোনো অনুমতি নেয়নি। তারপরও মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং আম আদমি পার্টি কোনো ধরনের প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর আগে কেজরিওয়াল প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিশানা করে বলেছিলেন, 'আমি দলের সকল সাংসদ-বিধায়ককে সঙ্গে নিয়ে বেলা ১২ টায় বিজেপি সদর দফতরে আসছি, আপনি যাকে যাকে ইচ্ছা জেলে পুরতে পারে। প্রয়োজনে সকলকে একসঙ্গে জেলে ভরতে পারেন'
মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল বলেছেন, বিজেপি চাইছে আম আদমি পার্টির নেতাদের জেলবন্দী করে দলকে শেষ করে দেওয়ার। স্বাতি মালিওয়াল মামলায়, দিল্লি পুলিশ শনিবার অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং ব্যক্তিগত সচিব বৈভব কুমারকে গ্রেফতার করেছে। এরপর থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আরও আক্রমনাত্মক হয়ে উঠেছে আম আদমি পার্টি।