মনের খামখেয়ালিপনা কি বেঁধে রাখা যায়? তাও আবার এই বর্ষার মরশুমে! মন নিয়ে গবেষণায় তাবড় পণ্ডিতরাও ফেল করে যান। তাই সে চেষ্টায় না গিয়ে আড্ডা জমল প্রতীম, পার্নো, অঞ্জন দত্ত, পাওলি, ঋত্বিকদের সঙ্গে...।
হোটেলে ঢুঁ মেরেই দেখা গেল পাওলি আরাম করছেন সোফায়। পার্নো টেবিলে প্রায় মাথা নিচু করে বসে, টেরেসে অঞ্জন দত্ত আর আহারে মনের কাণ্ডারী প্রতীম ডি গুপ্ত ঘুরে বেড়াচ্ছেন ইতিউতি। কথা শুরু হল তাঁর সঙ্গেই। কথা তত নয়, যতটা প্রশ্নবাণ। এক মন বুঝতেই লোকে ঘোল ঘেয়ে যায় আর আপনার তিন তিনটে মন পড়ার প্রজেক্ট! গুরুদায়িত্ব নেওয়া হয়ে গেল না?
... ''না না দুটো গল্প আমার কাছে ছিলই। ছোট ছবি আমি বানাব না। তাই লিখে ফেললাম আরও দুখানা গল্প। বিদেশে যেতে গিয়ে প্রায়ই দেখতাম ইমিগ্রেশন অফিসার বেচারা মুখে আমাকে বিদেশ যাওয়ার ছাপ্পা দিচ্ছে। মনে হল ভাল স্টোরি তো! যখন লিখেছিলাম তখন মাথায় মিঠুন দা ছিল। পনেরো বছর পর ভাবলাম শ্বাশত কে দিয়ে করাব, কিন্তু ডেট পাওয়া গেল না। তবে ভাবিনি আদিল রাজি হবে''।
কিন্তু দর্শক তো বিভিন্ন ছবির সঙ্গে আহারে মনের মিল খুঁজে বেড়াচ্ছেন...
মুখের কথা ছিনিয়ে নিলেন পার্ণো, ''চারটে গল্প নিয়ে ছবিটা আর প্রত্যেকটা গল্পই আলাদা। এর চেয়ে বেশি বলা বারণ। আমরা তো নিজেদের গল্পটা ছাড়া পুরো চিত্রনাট্যনাই কেউ জানিনা। তবে প্লিজ বলিউড ছবির সঙ্গে তুলনা করা বন্ধ করুন। আমারা অনেক বেশি প্রগ্রেসিভ সিনেমা বানাই। হিন্দি ছবির লোকজনই এটা স্বীকার করেছেন''।
আরও পড়ুন, প্রিয়াঙ্কার বিরুদ্ধে আইনি পথেই এগোবেন রাহুল
ঋত্বিক আপনার চরিত্রটা তো চোরের!
''হ্যাঁ, একে চোর, আবার তার বিচিত্র নাম। মাইকেল তেন্ডুলকর। নামটা কতটা বিশ্বাসযোগ্য, এরকম নাম আদৌ হয় কিনা সেটা বুঝতে গেলে সিনেমাটা দেখতে হবে। আহারে মন চোর বটে, কিন্তু সে পাগলাটে এক প্রেমিকও বটে ! তবে কেউ না জানলেও চিত্রনাট্যের সব গল্পের ওয়ানলাইনার কিন্তু আমি জানি।’’
পাওলি বললেন,''আমিও কিন্তু প্রতীমের সঙ্গে হ্যাটট্রিক করে ফেলেছি। যখন ছবিটার কথা হয়েছিল আমি একটা অন্য জোনে ছিলাম, (লাজুক হাসি) আর ডিসেম্বর-জানুয়ারি ছুটি নিয়েছিলাম। শুধু প্রতীমের ছবি বলে কাটাইনি। ও মহিলা চরিত্র এত ভাল লেখে!''
অঞ্জন দত্ত নাকি উমার পারফরমেন্সকেও ছাপিয়ে যাবে?
''দেখ! অন্যভাবে তো লোকে আমায় পাবেই। আমি যে অভিনেতা জীবন চেয়েছিলাম সেটা যদি ৫৫ বছর বয়সে পাই ক্ষতি কি? বরুণ সরকারও সেরকমই একটা চিত্রনাট্য। বয়স্ক ও একেবারে সাধারণ চরিত্রের মানুষ। আমি বাসে-ট্রামে চড়ে ছবির চরিত্র হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছি। ভুঁড়িও বাড়িয়েছি সেই জন্যে''।
ছবি যখন প্রতীমের কাঁধে তখন আড্ডা শেষে তাঁর কাছে ফিরতেই হত।
সৃজিতকে দিয়ে গান লেখালেন?
''এতে আশ্চর্যের কিছু নেই তো! আমার আর সৃজিতের কোনদিনই সরাসরি কোনও ঝামেলা হয়নি। তবে যা হয়েছে সেটা কাটিয়ে উঠে আমরা একসঙ্গে ছবিও করছি। এক বড় প্রযোজনা সংস্থার হয়ে ও কিছু ছবির প্রযোজনা করছে, তার মধ্যে আমি একটা ছবির পরিচালনা করব''।
বাইরে ততক্ষণে মুষলধারে বৃষ্টি। মন ভিজুক আর না ভিজুক প্রতীমের 'আহারে মন' পাড়ি দিতে প্রস্তুত দর্শক মনে।