/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/03/abhishek-chatterjee.jpg)
অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের অকালপ্রয়াণে স্তম্ভিত টলিউড
মাত্র ৫৭ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে চলে গেলেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। প্রিয় মিঠু আর নেই, যেন ভাবতেই পারছেন না ইন্ডাস্ট্রির সহকর্মীরা। কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর স্মৃতিচারণা করলেন, কারও বা আবার অভিষেককে নিয়ে স্মৃতির সরণিতে হাঁটতে গিয়ে গলা বুজে এল। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, শতাব্দী রায়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে বাঙালি দর্শকদের একাধিক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়। আজ তাঁর প্রয়াণের সেই সব স্মৃতি আওড়ালেন তাঁর ইন্ডাস্ট্রির বন্ধু সহকর্মীরা।
ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত বললেন, সকালে উঠে যখন খবরটা পেলাম, বিশ্বাস-ই করতে পারিনি। বারবার একে-ওকে ফোন করে জিজ্ঞেস করছিলাম খবরটা মিথ্যে কিনা! অভিষেক বাংলা ইন্ডাস্ট্রিকে অনেক কিছু দিয়েছে। আমার জীবনের একাধিক হিট ছবি ওঁর সঙ্গে করা। অভিষেকের সঙ্গে জুটি বেঁধেই ঠিক যেখান থেকে আমি বাণিজ্যিক সিনেমাকে ছুঁলাম। কত ছবির কথা মনে পড়ে যাচ্ছে এইমুহূর্তে- 'সুজন সখী', 'লাঠি', 'শাখা সিঁদুরের দিব্যি'। ঠিক কতগুলো ছবি যে করেছি ওঁর সঙ্গে হিসেব রাখিনি। সহকর্মীর পাশাপাশি ব্যক্তিগত অভিষেকও ছিল খুব ভাল মানুষ। এককথায় মজার মানুষ। শুটিংয়ের সময় নানারকম খাবার রান্না করে নিয়ে আসত। এত কম বয়সে চলে গেল, ভাবতেই পারছি না। ও যেখানেই থাকুক শান্তিতে থাকুক।
কথা বলতে গিয়ে গলা বুজে এল শতাব্দী রায়ের। অভিনেত্রীর মন্তব্য, "মেনে নিতে পারছি না আমি। অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিল। কেন যে জেদ করে হাসপাতালে গেল না, কে জানে! ভাবতেই পারছি না…।" শোকপ্রকাশ করে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের পোস্ট, "কিচ্ছু বলার নেই মিঠু দা…।" শ্রীলেখা মিত্র বললেন, "আমি বিশ্বাস করতে পারছি না মিঠুদা আর নেই। আমার কত ছবির হিরো। "
কান্নায় ভেঙে পড়লেন অভিনেত্রী ইন্দ্রাণী হালদারও বললেন, "গত ৩ বছর ধরে দাসানি স্টুডিওতে 'শ্রীময়ী' সিরিয়ালের শুট হত। পাশেই 'মোহর'-এর শুট করত ও। আমাদের প্রায়ই দেখা লেগেই থাকত। আমি সবসময়ে বলতাম, মিঠু একটু রোগা হ তো। একটু জিম কর। এত ভাল চেহেরা ছিল তোর। খেতে আসলে ভালবাসত। আমরা তো সবাই ফুডি। প্রায়ই বলতাম, তোর বউ এতো সুন্দর, মেয়েটা এত ছোট্ট কী মিষ্টি, এত কীসের চিন্তা তোর? কথা শুনত না একেবারেই কারো। ওর সঙ্গে আমারও আরেকটা মিল ছিল আমরা দু'জনেই পুজোপাঠ করতাম। শুধু তাই নয়, আমরা দুজনেই লড়াকু। মিঠু আর আমি কত জায়গায় একসঙ্গে শো করতে গিয়েছি, হিসেব নেই। একবার খুব বিপদে পড়েছিলাম। 'কুয়াশা' নামে একটা হিন্দি ছবির শুট করতে বম্বেতে গিয়েছিলাম। সেখানে ওরা কিছুতেই ফেরার টিকিট কেটে দেবে না আমাদের। তো শেষমেশ আমরাই নিজেদের টাকায় টিকিট কেটে ফিরি একসঙ্গে।" কথাগুলো বলতে বলতে যেন গলা বুজে আসছিল 'শ্রীময়ী' ইন্দ্রাণীর।
অরিন্দম শীল লিখলেন, "মিঠু আমি স্তম্ভিত। শান্তিতে ঘুমোও।" দেব-অঙ্কুশরাও শোকপ্রকাশ করলেন। স্মৃতিচারণা করে অঙ্কুশের মন্তব্য, তোমার মতো মানুষ কিংবা অভিনেতা খুব কমই দেখেছি। কালিম্পংয়ে তোমার সঙ্গে কাটানো ওই মজার মুহূর্তগুলো আজও মনে পড়ে। খুব খুব মিস করব তোমাকে অভিষেকদা। সেই আদরগুলো খুব মিস করব। যেখানেই থাকো ভালো থেকো।
Rest in Peace Abhishek Da 🙏🏻 pic.twitter.com/9NswNKl9CA
— Dev (@idevadhikari) March 24, 2022
আচমকাই বন্ধু অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁর বাড়িতে ছুটে গিয়েছেন লাবণী সরকার, কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকেই। কৌশিক বললেন, "আমাদের সম্পর্কটা পারিবারিক ছিল। একে-অপরের বাড়ির যে কোনও অনুষ্ঠানে থাকতাম। ৩৫ বছর ধরে ওকে চিনি। ও যখন বিবাহিত ছিল না আমার বাড়িতেই কখনও কখনও এসে থেকে যেত। ওঁর উত্থান-পতনের সবটাই কাছ থেকেই দেখেছি। ওঁকে নিয়ে একটা বই লিখতে পারি।"
অরিন্দম গঙ্গোপাধ্যায় বললেন, "মিঠুর সঙ্গে সম্পর্কটা অন্যরকম ছিল। একটা সময় ছিল মঞ্চে একসঙ্গে দীর্ঘদিন অভিনয় করেছি। খুব প্রাণোচ্ছ্বল ছেলে ছিল। এত কম বয়সে চলে গেল, আর কী-ই বা বলব।"