বয়স হয়েছিল ৮২। বাংলার মানুষকে এতগুলো বছর নিজের সুরের জাদুতে ভাসিয়ে রেখেছিলেন। কিন্তু, আর পারলেন না। প্রয়াত প্রতুল মুখোপাধ্যায়। শিল্পী চলে গেলেন না ফেরার দেশে। রেখে গেলেন, বাংলা এবং বাঙালি সঙ্গে অনন্য কিছু সৃষ্টি।
বাংলা সঙ্গীত জগতের ক্ষেত্রে এ যেন এক ভয়ঙ্কর শোকের দিন। কারণ, সেই মানুষটা আর নেই যার কন্ঠে বাঙালি বলতে শিখেছিল, 'আমি বাংলায় গান গাই, আমি আমার আমিকে চিরদিন এই বাংলায় খুঁজে পাই...'। সোমবার রাত থেকেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। রাখা হয়েছিল ITU তে। লড়াই করলেন, কিন্তু আর পারলেন না। আজ যেন সুরেদের সত্যি মন খারাপ।
কী হয়েছিল তাঁর?
অন্ত্রের অস্ত্রোপচারের পর হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। তারপর থেকেই অসুস্থ থাকতেন। তাঁকে কিছুদিন আগে দেখতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর আজ, সবটা শেষ। ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করেও তাঁকে বাঁচানো গেল না। আজ সকাল ১০টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে-দেখতে হাসপাতালে পৌঁছেছেন ইন্দ্রনীল সেন এবং ফিরহাদ হাকিম।
আমি বাংলায় গান গাই ছাড়াও, সেই মেয়েটি, বৃষ্টি পড়ে টাপুর-টুপুর, আরও নানা গান তাঁর সুরের জাদুতে প্রাণ পেয়েছিল। নিজে গান লিখতেন, মাঝেমধ্যে কবিতাও লিখতেন। অনেকেই এমনও বলেন, যে যখনই তিনি গাইতেন, তাঁর নাকি শারীরিক অভিব্যাক্তি একদম অন্য মাত্রা নিত। শিল্পী চলে গেলেন, কিন্তু রেখে গেলেন এমন সব গান, যা বাংলার সংস্কৃতিকে অনন্তকাল সমৃদ্ধ করে রাখবে।
প্রসঙ্গে প্রতুল মুখোপাধ্যায়...
অভিবক্ত বাংলার বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তারপর দেশভাগ হতেই চলে আসেন চুঁচুড়ায়। সেখানেই বড় হয়েছেন শিল্পী। গানের প্রতি টান ছিল সাংঘাতিক। ছোট থেকেই নিজের সুর এবং লেখায় মন দিয়েছেন। ১২ বছর বয়সে কবি মঙ্গলাচরণ চট্টোপাধ্যায়ের আমি ধান কাটার গান গাই দিয়েই সুরকার হিসেবে যাত্রা শুরু করেন তিনি।