শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন বাংলার কিংবদন্তী কৌতুকাভিনেতা চিন্ময় রায়। রবিবার রাত ১০.১০ নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। এদিন সল্টলেকে শ্রাবণী আবাসনে নিজের বাড়িতেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি। রেখে গেলেন এক পুত্র আর এক কন্যাকে।
গতবছর জুন মাসে ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছিলেন অভিনেতা। এমনকী হাসপাতালেও ভর্তি করতে হয় তাঁকে। তারপর থেকেই আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তবে কীভাবে তিনতলা ওই ফ্ল্যাটের ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিলেন তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে এখনও।
চিন্ময় রায়ের মেয়ে চেন্নাইতে থাকেন। তিনি আসার পরই শেষকৃত্য করা হবে বলে সূত্রের খবর। বাংলাদেশের কুমিল্লার এই ছেলে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় পা রাখেন সত্তরের দশকে। চিন্ময় রায় অভিনীত 'চারমূর্তি' অত্যন্ত জনপ্রিয় ছবি। এরপর একে একে 'ধন্যি মেয়ে', 'বসন্ত বিলাপ', 'শ্রীমান পৃথ্বীরাজ', 'ননী গোপালের বিয়ে'-র মতো অনেক বিখ্যাত ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। রইল তার কিছু ঝলক।
কমেডি চরিত্রে মন জয় করেছিলেন সবার। 'মৌচাক' ছবিতে তাঁর প্রাণবন্ত অভিনয় নজর কেড়েছিল। সত্যজিৎ রায়ের গুপী বাঘা সিরিজের 'গুপী গাইন বাঘা বাইন' ছবিতে অভিনয় করেছিলেন তিনি। স্ত্রী গত হয়ে যাওয়ার পর একাকীত্ব গ্রাস করেছিল তাঁকে। পর্দার টেনিদার প্রয়াণে শোকস্তব্ধ সিনেমা জগৎ।
শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। নবান্ন থেকে জারি করা এক শোকবার্তায় তিনি জানিয়েছেন, "বিশিষ্ট অভিনেতা চিন্ময় রায়ের মৃত্যুতে আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। গত রাতে তিনি ৭৯ বছর বয়সে কলকাতায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। চারমূর্তি, গুপী গাইন বাঘা বাইন, বসন্ত বিলাপ, প্রতিবাদ, ধন্যি মেয়ে, ননীগোপালের বিয়ে, ফুলেশ্বরী, সুদামা দ্য হাফ ম্যান সহ একাধিক চলচ্চিত্রে তিনি তাঁর অভিনয় দক্ষতার প্রমাণ রেখেছেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৩ সালে তাঁকে 'বিশেষ চলচ্চিত্র সম্মান' প্রদান করে। তাঁর মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্র জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। আমি শ্রী চিন্ময় রায়ের পরিবার পরিজন ও অনুরাগীদের আন্তরিক সমবেদনা জানাচ্ছি।"