রাজীব, বৈশালি, রুদ্রনীলরা যেদিন দিল্লি উড়ে গিয়েছিলেন সর্বভারতীয় জনতা দলের শরীক হওয়ার জন্য, সেদিন সন্ধে নাগাদই শোনা গিয়েছিল যে, ঘাসফুল শিবিরের আরেক তারকা নেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের পরিস্থিতিও নাকি এবার টলমল! ক্ষোভ রয়েছে রাজ্যের শাসক দলের প্রতি। অতঃপর খুব শিগগিরিই বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন তিনিও। এবার সেই জল্পনাতেই শীলমোহর পড়ল। কারণ ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার অর্থাৎ আজ কাকদ্বীপের সভায় অমিত শাহর উপস্থিতিতেই গেরুয়া মন্ত্রে দীক্ষিত হতে চলেছেন টলিউড অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায় (Hiran Chatterjee)।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবারই গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন যশ দাশগুপ্ত, পাপিয়া অধিকারী, সৌমিলী বিশ্বাসরা। এবার হিরণের পালা। আজই কাকদ্বীপের সভায় ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দিচ্ছেন তিনি। এযাবৎকাল হিরণ চট্টোপাধ্যায় যুব তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ছিলেন হিরণ। তবে একুশের বিধানসভা ভোটের আগে যেভাবে দলবদলের হাওয়া শুরু হয়েছে, তাতে গা ভাসিয়ে এবার হিরণও জোড়া ফুল শিবির ছেড়ে এবার পদ্ম শিবিরের দিকে ঝুঁকেছেন। ইতিমধ্যেই তাঁর ইস্থফা দেওয়ার খবর জানা গিয়েছে।
দীর্ঘ দিন ধরেই ইন্ডাস্ট্রির কোনও ছবিতে তাঁকে সেভাবে দেখা যায় না, এদিকে টলিপাড়ার এই অন্যতম মুখ রাজনীতির মঞ্চেও সেভাবে সক্রিয় নন। তাই কী এবার পরিবর্তনের লক্ষ্যেই গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়ার মনস্থ করেছেন হিরণ চট্টোপাধ্যায়? এপ্রসঙ্গে হিরণের সাফ উত্তর, "অলক্ষ্মী বিদায়ই লক্ষ্য! বাংলা থেকে অলক্ষ্মী বিদায় করে লক্ষ্মী ফেরাতে চান। বাংলায় কর্মসংস্থান নেই, বাংলার যুবরা বাইরে চলে যাচ্ছে। তাঁদের ফেরাতে হবে।"
তা 'দলে থেকে কাজ না করতে পারার' অভিযোগ কি হিরণ চট্টোপাধ্যায়েরও রয়েছে? অভিনেতার কথায়, "আমি সাধারণ ঘরের ছেলে। আমজনতার দুঃখ কষ্ট বুঝি। আর রাজনীতি হল সমাজ এবং সিস্টেম পরিবর্তনের বিরাট বড় হাতিয়ার। হাতে ক্ষমতা না থাকলে ক্ষমতার অপপ্রয়োগ আটকানো যাবে না। ২০১৪ সালে সেই স্বপ্ন নিয়েই একটা দলে যোগ দিয়েছিলাম, ভেবেছিলাম অনেক কিছু হবে। বাংলার পরিবর্তন হবে, কিন্তু রাস্তায় শুধু নীল-সাদা রং ছাড়া আর কিছুই হয়নি। হতাশ হয়েছি, এরপর নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দেশজুড়ে যে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে তাতেই যোগ দিতে যাচ্ছি। উন্নয়নের জন্য সর্বভারতীয় দলকেই ক্ষমতায় চাই।"
তাহলে হিরণ চট্টোপাধ্যায় কি একুশের নির্বাচনে বিজেপির (BJP) তারকাপ্রার্থী হতে চলেছেন? সেই সিদ্ধান্ত অবশ্য তিনি গেরুয়া দলের প্রতিই ছেড়ে দিয়েছেন।