একুশের বিধানসভা ভোটে আর লড়তে চান না! দিন দুয়েক আগেই রাজ্যের শাসক দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উদ্দেশে এহেন বার্তা দিয়ে অব্যাহতি চেয়েছিলেন চিরঞ্জিৎ (Chiranjeet)। রাজ্য-রাজনীতিতে দলবদলের হাওয়ায় তাই অনেকেই ভেবেছিলেন যে, তিনিও সম্ভবত এবার ঘাসফুল ছেড়ে পদ্ম শিবিরে যোগ দিতে চলেছেন। জল্পনাও ছিল তুঙ্গে। কিন্তু কোথায় কী! সপ্তাহ ঘুরতেই জানিয়ে দিলেন যে, করোনা প্রতিষেধক নিয়ে তিনি এবার তৃণমূলের (TMC) হয়ে ময়দানে নামতে প্রস্তুত।
মঙ্গলবারই বারাসত হাসপাতালে করোনার টিকা নিয়েছেন টলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা চিরঞ্জিৎ। তবে একা নন, তাঁর ব্যক্তিগত গাড়ির চালকও যাতে প্রতিষেধক নিতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও করেছেন। কারণ, তাঁকেও তো অভিনেতা সঙ্গে ভোটপ্রচারে যেতে হবে। প্রসঙ্গত, এর আগে চিরঞ্জিৎ জানিয়েছিলেন, "বারাসত ছাড়া অন্য কেন্দ্রে তিনি প্রার্থী হবেন না। দল অন্য কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করলে রাজনীতিই ছেড়ে দেবেন।" অভিনেতার এমন হুঁশিয়ারিতে অনেকেই 'গেরুয়া গন্ধ' পেয়েছিলেন। তবে সপ্তাহ ঘুরতেই সুর-বদল।
এবার চিরঞ্জিৎ জানালেন, আসন্ন নির্বাচনের যা অবস্থা, "তাতে দিদি আমাকে যেতে দিলেন না। আমিও এই ভোটযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করলাম। আশা করছি আমি বারাসত থেকেই টিকিট পাব। তাই ভ্যাকসিন নিয়ে নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতিটাও সেরে ফেললাম।" অতঃপর তিনি যে মূলস্রোতের রাজনীতি থেকে এক্ষুণি অব্যাহতি নিচ্ছেন, তা একেবারে সাফ হয়ে গেল।
প্রসঙ্গত, একুশের বিধানসভা ভোটযুদ্ধে যে গেরুয়া-সুবজ দুই শিবিরেরই তারকা-খচিত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ্যে আসতে চলেছে, সেই বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। টলিউড ইন্ডাস্ট্রির তারকারা নিত্যদিন কেউ শিবির বদলাচ্ছেন, ‘এ ফুল, ও ফুল’ করছেন, আবার কেউ বা রাজনীতির ময়দানে ‘শিক্ষানবীশ’ হিসেবে অভিষেক ঘটাচ্ছেন। মোদী-মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে যখন যশ দাশগুপ্ত, পায়েল সরকার, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়রা গেরুয়া পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন, সেই প্রেক্ষিতে তৃণমূলও কম যায় না! সায়নী ঘোষ, রাজ চক্রবর্তী, সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে জুন মালিয়া, মানালি দে-র মতো উজ্জ্বল মুখরাও মমতার আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ভোটযুদ্ধে পদ্ম শিবিরকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে প্রস্তুত। ওদিকে আবার বাম শিবিরের হয়ে সুর চড়িয়েছেন শ্রীলেখা মিত্র, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অনীক দত্তরা। সবমিলিয়ে একুশের নির্বাচন এখন মধ্যমণি। তারকাদের দড়ি টানাটানি এবার কতদূর গড়ায়, সেটাই দেখার অপেক্ষায় আমজনতারা।