নারদকাণ্ডে (Narada Scam) রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়কদের গ্রেপ্তারির পর নিজাম প্যালেসের সামনে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের তুমুল বিক্ষোভ। বেলা গড়াতেই রণক্ষেত্রে পরিণত সংশ্লিষ্ট চত্বর। সামাজিক সুরক্ষাবিধি, লকডাউনের বালাই নেই! রাজ্যের এই চরম অতিমারী পরিস্থিতিতে যেখানে অক্সিজেন, হাসপাতালের বেডের জন্য হাহাকার, ভ্যাকসিনের জন্য উদভ্রান্ত হয়ে ফিরছে সাধারণ মানুষ, সেই প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার এমন পদক্ষেপকে বিজেপি চাণক্যের ‘রাজনৈতিক চাল’ হিসেবেই দেখছেন রাজনীতিকদের একাংশ। তাঁদের দাবি, “নির্বাচনে হেরে প্রতিহিংসা পরায়ণ গেরুয়া শিবিরের উদ্দেশ্য, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা, সেই ফাঁদে দিলেই মুশকিল!” সেই প্রেক্ষিতেই এবার বিস্ফোরক জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ঋদ্ধি সেন (Riddhi Sen)।
Citizen Response-এর সদস্য হিসেবে সদ্য অতিমারী পরিষেবা চালু করেছেন ঋদ্ধি সেন, অনুপম রায়-সহ আরও অনেকে। বাংলায় এমন চরম কোভিড পরিস্থিতিতে মানুষের প্রাণ বাঁচানোই যেখানে দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে, সেই প্রেক্ষিতে কিনা প্রতিশোধের রাজনীতি চলছে! এটা কি অতিমারী মোকাবিলায় ব্যর্থতা ঢাকতে মোদী সরকারের চাল? প্রশ্ন তুললেন অভিনেতা।
ঋদ্ধির কথায়, আজকাল আর লুকোছাপা বলে কিছু নেই। John Lennon অনেকদিন আগে বলেছিলেন, “we have to hide to make love while violence is practised in broad daylight.” ভারতীয় রাজনীতিতে ঠিক এটাই হচ্ছে, নির্লজ্জ, কুৎসিত আর প্রতিশোধের রাজনীতি চলছে সবার চোখের সামনে। গোটা বিশ্বের কাছে কেন্দ্রীয় সরকারের এই অতিমারীকে ঠেকাতে না পারার অক্ষমতা ধরা পড়ে গেছে। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে চলছে। জলের ওপর ভেসে যাচ্ছে মৃতদেহের স্তুপ। অক্সিজেনের আকাল। ভ্যাকসিন নেই। ভ্যাকসিন না থাকার ফলে অবৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে দ্বিতীয় ডোজ। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি না করে শূন্যগুলো বেড়েছে মূর্তি, মন্দির, স্টেডিয়াম আর বিদেশ ভ্রমণের জন্যে। কিন্তু না, মানুষ মরে মরুক, চাই প্রতিশোধ, চাই সিবিআই, চলুক পক্ষপাতদুষ্ট তদন্ত!" অভিনেতা যে কেন্দ্রীয় সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষাখাতের খরচার কথাই তুলে ধরেছেন এপ্রসঙ্গে, তা বলাই বাহুল্য।
পাশাপাশি নারদাকাণ্ডে অভিযুক্ত আরও দুই রাজনীতিক শুভেন্দু অধিকারী ও মুকুল রায়কে কেন গ্রেপ্তার করা হল না, সুচারুভাবে নিজের মন্তব্যে সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। ঋদ্ধির মন্তব্য, দুই মূল অভিযুক্তকে বাদ দিয়ে ছয় বছর আগের ঘটনার তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক আজ মানুষের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে। আর মানুষকে ধরে নেওয়া হোক প্রশ্নহীন দর্শক হিসেবে। সব কিছু বড্ড স্পষ্ট আজ। তাও দুই দলের কাছেই আবেদন, চেষ্টা করুন শান্তি বজায় রাখার, এই হিংস্র নির্লজ্জ রাজনৈতিক দলের চক্রান্তে পা দেবেন না।
রাজ্যপাল ধনকড়ের ভূমিকা নিয়েও সরব ঋদ্ধি। তাঁর মন্তব্য, "ধিক্কার আমাদের রাজ্যপালকেও মানুষের চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য যে এরকম ভয়াবহ সময় প্রতিশোধ আর হিংসার রাজনীতিকে সমর্থন করছেন উনি।"