শুভ নববর্ষ! হাজার বিপদ আপদ এলেও ক্যালেন্ডার আর ঘড়ি থেমে থাকে না! তাই নববর্ষকেও আসতেই হলো নিজের নিয়মে! যদিও এমন সময় সে এল, যাকে সুসজ্জিত হয়ে বরণ করে নেওয়ার যোগান নেই আমাদের কাছে! না মনে, না সামর্থ্যে! তবুও নির্দোষের আগমনে হাসি মুখে হাত তো বাড়াতেই হয়!
এমন নববর্ষের সকাল কখনও দেখেনি এদেশ অথবা বাংলা। কল্পবিজ্ঞানে অথবা কোনও ডিসটোপিয়ান ফিকশনেও এমন কোনও কিছুর কথা ভাবেননি বাংলার কোনও লেখক। এই প্রজন্ম যে অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে চলেছে, তা হয়তো আগামী দিনে বিভিন্ন শিল্প-মাধ্যমে চিরন্তন কোনও সৃষ্টির দিকে নিয়ে যাবে। কিন্তু সে তো অনেক দূরের কথা-- মানুষ আগে খেয়ে-পরে বাঁচবেন তার পরে আসে সৃষ্টির মগ্নতা।
আরও পড়ুন: লকডাউনে আলাদা, সোহিনীর প্রতি মনের ভাব ব্যক্ত করলেন রণজয়
এই খাদ্যাভাব, এই গৃহবন্দি অনিশ্চয়তা কি আমরা চেয়েছিলাম নববর্ষের দিনে? কোলাকুলি করে বাংলা বছরের প্রথম দিনটা উদযাপন করে যে বাঙালি, আজ সামাজিক দূরত্বে থেকে অনলাইন মিষ্টিমুখই যথেষ্ট তার কাছে।
তাই বাড়ি বসেই, পরিবার বা ঘর আটকা বন্ধুদের সাথেই এবারের অনাড়ম্বর বর্ষবরণ! যাঁদের উপায় আছে তারা মোবাইল, ভিডিও চ্যাট বা স্যোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটেই নতুন জামা পরে শুভেচ্ছা বার্তা বিনিময় করবেন! প্রতিবেশী নয় জানলা খুলেই ওবাড়িতে "শুভ নববর্ষ দিদি" শব্দ ছুঁড়ে দেবেন নিরাপদ দূরত্ব মেনে! ওই অবস্থা বুঝে ব্যবস্থার মতো আর কি!
আমিও তাই করব! আর ওপরওয়ালার কাছে প্রার্থনা করতে চাই, দিন-আনি-দিন-খাইদের কাছে উনি যেন 'শুভ নববর্ষ'-এর 'শুভ'টা দান করেন! আর নববর্ষটা আমাদের মতো স্বল্প সচ্ছলের হাতেই শুধু তুলে না দেন, যাঁদের পেটে আপাতত একটু ডাল ভাতের যোগান আছে।
সবাই না বাঁচলে শুভ নববর্ষ হবে কি করে?
বিশ্বাস রাখি, গরিব বাঁচলেই শুভ হয়ে উঠবে নববর্ষের এবারের রূপ! কেটে যাবে অন্ধকার 'শুভ'র আলোয়!