Advertisment
Presenting Partner
Desktop GIF

ভাল সিনেমা যদি থাকে, সমাজে অনেক খারাপ কাজ কম হবে: সুব্রত

শুধুমাত্র শিল্প দিয়ে হয় না। বাংলায় 'সাথী', 'বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না', 'শোলে' দরকার। ইন্ডাস্ট্রি চালাতে গেলে সব ক্লাসেরই ভাল লাগে, এমন ছবি দরকার।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Actor Subrat Dutta exclusive interview

সুব্রত দত্ত। ছবি: ফেসবুক পেজ থেকে

বাংলার অভিনেতা কিন্তু অনেকটা বেশি সময় কাটিয়েছেন মুম্বইয়ে। বলিউডের প্রথম সারির বাঙালি চরিত্রাভিনেতাদের অন্যতম সুব্রত দত্ত সম্প্রতি আবারও বাংলা বিনোদন জগতে নিয়মিত কাজ শুরু করেছেন। তাঁর সাম্প্রতিক কাজগুলির মধ্যে রয়েছে হইচই-এর 'ব্যোমকেশ' ও সদ্য স্ট্রিমিং শুরু হওয়া 'মন্টু পাইলট'। আবার আগামী বছরেই আসছে নতুন দুটি সিরিজ।

Advertisment

আপনি অনেক দিন পরে বাংলা-তে আবার কাজ করছেন। মাঝখানে অনেকদিন সেভাবে কাজ করেননি। সেটা কি কোনও বিশেষ কারণে?

মাঝখানের সময়ে অনেক কিছু হয়েছে। বিয়ে করেছি, বাচ্চাকে সময় দেওয়ার ব্যাপার ছিল। তখন একটা শহরে থেকে আর একটা শহরে এসে কাজ করা সম্ভব ছিল না। সেই জন্য কাজ করা হয়নি। এখন পারিবারিক পরিস্থিতিটা বদলেছে। তাই আবার কাজ করতে পারছি।

আরও পড়ুন: ”প্রোফেসর শঙ্কু পর্দায় কী প্রভাব ফেলতে পারবে নকুড়বাবুকে জিজ্ঞেস করতে পারেন, উনি ভবিষ্যৎ দ্রষ্টা তো”

'মন্টু পাইলট'-এ আপনার চরিত্র ও কাজ নিয়ে কিছু যদি বলেন।

ডাক্তার বাগচি খুব পলিশড একটা চরিত্র। আবার এর মধ্যে একটা থ্রিলার এলিমেন্ট আছে। নেগেটিভ শেডস রয়েছে। এরকম চরিত্র খুব বেশি আমি পাই না। আর দেবালয়ের সঙ্গে কাজ করে খুব মজা হয়েছে। চারটে ওয়েবসিরিজে কাজ করলাম। এর মধ্যে জিফাইভ-এর দুটো-- 'জাজমেন্ট ডে' ও 'হেডকোয়ার্টার্স লালবাজার'। হইচই-এর 'মন্টু পাইলট' আর সৌরভ চক্রবর্তীর 'শব্দজব্দ'। চারটে আলাদা আলাদা চরিত্র-- পুলিশ অফিসার, ডাক্তার, উকিল, মনস্তত্ত্ববিদ। এর ঠিক আগেই একটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিন্দি ছবিতে কাজ করলাম-- 'বনারস ভ্যানিলা'। একটু অন্য ধরনের ছবি।

Subrat Dutta at Montu Pilot promotion 'মন্টু পাইলট'-এর প্রোমোশনে সুব্রত দত্ত।

আপনি তো প্রচুর ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবি করেন। এটা কি সচেতন ভাবেই ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবিকে সহযোগিতা করার জন্য?

না, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবি আমাকে চুজ করে অ্যান্ড দে আর পেইং মি ওয়েল। এমন নয় যে আমি টাকা না নিয়ে বা কম টাকা নিয়ে কাজ করছি। আমি নিজেকে এত মহান কেন বলব। যখন বম্বেতে গেছিলাম ভাবিনি কোন দিকে যাব। অনেক বড় ব্যানারের ছবিতে কাজ করেছি কিন্তু আমি তো আর হিরোর চরিত্র করিনি। যে ছবিতে আমি কেন্দ্রীয় চরিত্র, সেই রকম ছবির অফার যখন আসতে শুরু করে তখন সেগুলো নিতে শুরু করলাম। সাপোর্টিং থেকে মেন গুলো নিতে শুরু করেছি। এখন তাই অনেকেই লিমিটেড বাজেটের ছবিতে আমাকে নিয়ে ভাবে। সম্প্রতি যে ছবিগুলো করলাম-- 'যোসেফ', 'টি ফর তাজমহল' চরিত্রগুলো খুব ভাল, কাজ করে ভাল লেগেছে খুব।

সাম্প্রতিক সময়ের বাংলা ছবি সম্পর্কে আপনার কী ভাবনা। বাংলায় এখন কি ভাল কাজ হচ্ছে?

ভাল হচ্ছে না। তার কারণ দুটো-- একটা হল প্রত্যেকটা ইন্ডাস্ট্রিতেই এমন একটা ফেজ আসে যখন সেই ইন্ডাস্ট্রি ঠিক বুঝতে পারে না যে কী ধরনের ছবি করা দরকার। বাংলায় এখন এই ফেজটা চলছে। আর দ্বিতীয় কারণ হল ডিস্ট্রিবিউশন ঠিক নেই বলে দর্শকের ফুটফল কমছে। বাংলার দর্শক এখন বোর হয়ে গেছে। বাংলা ছবিতে দর্শকের কথা বলা হয় না, তাদের নিয়ে কোনও ছবি হয় না। ওইটা মুশকিল হচ্ছে। সিঙ্গল স্ক্রিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যারা লোয়ার মিডল ক্লাস, তারা মাল্টিপ্লেক্সে ভয়ে দেখতে যায় না। এক তো তাদের ওই দাম দিয়ে টিকিট কাটার ক্ষমতা নেই। তাদের মনের মধ্যে একটা ভাবনা কাজ করে যে ওখানে ঢোকা নিষিদ্ধ। আমি নিজে যখন প্রথম লন্ডনে গেলাম, আমারই ঢুকতে ভয় লাগত। যারা বাঁকুড়ার অনেকটা ইন্টিরিয়র থেকে আসছে, তাদের ওই মল-মাল্টিপ্লেক্সে ঢুকতেই ভয় লাগে। আমার মতে, আরও সিঙ্গল স্ক্রিনের উপর জোর দেওয়া দরকার। আর টিকিটের দাম যত কম হবে, তত বেশি দর্শক দেখবে। আর বাংলা ছবিতে সরকারের ভর্তুকি দেওয়া দরকার। বাংলা ছবির দর্শক তেমন ছবি পায় না বলে, তাদের ক্যাথারসিসটা হচ্ছে না। ভাল সিনেমা যদি থাকে, তবে অনেক খারাপ কাজ কমে যাবে। আমিও এই ইন্ডাস্ট্রির একটা পার্ট। আমরা এমন ছবি তৈরি করছি, এত আর্টহাউস যে সাধারণ দর্শকের মাথা ধরে যায়। শুধুমাত্র শিল্প দিয়ে হয় না। বাংলায় 'সাথী', 'বেদের মেয়ে জ্যোৎস্না', 'শোলে' দরকার। ইন্ডাস্ট্রি চালাতে গেলে সব ক্লাসেরই ভাল লাগে, এমন ছবি দরকার।

Actor Subrat Dutta exclusive interview 'বনারস ভ্যানিলা' ছবির লুকে সুব্রত দত্ত।

আপনি তো আবার বাংলা ছবিতে কাজ করছেন...

হ্যাঁ, সুরিন্দর ফিল্মস-এর সঙ্গে বাংলাতে জাস্ট শুরু করেছি কাজ। কাজ তো করতেই হবে।

আপনি তো টেলিভিশনে অনেকদিন আগে একটা কাজ করেছিলেন। বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আপনার কী মতামত?

আমার মনে হয় টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রি কোনওদিনই শেষ হবে না। এমনও অনেক জায়গা রয়েছে যার ৬০ কিমি-র মধ্যে কোনও সিনেমা হল নেই। তাদের কাছে টেলিভিশনটাই আসল। টেলিভিশনে মানুষ অনেক কিছু একসঙ্গে পায়। খবরও পায় আবার এন্টারটেনমেন্টও। আর এখন আস্তে আস্তে সাস-বহু ট্রেন্ড শেষ হয়ে যাচ্ছে। টেলিভিশনে আরও ভাল থ্রিলার আসবে, টেলিভিশন আগের থেকে অনেক ম্যাচিওরড হয়ে গিয়েছে।

যদি টেলিভিশনে তেমন কাজ হয়, আপনি করবেন?

আমি যে কোনও মিডিয়ামে কাজ করতে রাজি আছি যদি চরিত্র ভাল হয়। কেবিসি না হলে অমিতাভ বচ্চন আবার নতুন করে একটা অধ্যায় শুরু করতে পারতেন না। আমি অবশ্যই করব। টেলিভিশনকে যারা ছোট করে আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, তারা টেলিভিশন করে না। তারা এই মিডিয়ামটাও বোঝে না। আর এটাও তাদের মনে থাকে না যে বেশিরভাগ দর্শক কিন্তু সিনেমাটাও টেলিভিশনেই দেখে।

bengali films Bengali Actor
Advertisment