মায়ের ডাক নয়, ঘুম ভাঙে বোমার শব্দে। কাঁচা বারুদের গন্ধ ভাসছে বাতাসে! ধ্বসে যাওয়া বাড়ির নিচ থেকে বেরিয়ে আছে কারও বা দেহাবশেষ। ছাড় পায়নি দুধের শিশুও। নিথর শিশুর শবদেহের ওপরে বসানো নম্বর লেখা কাগজ! রাতের ঘুম কেড়েছে যুদ্ধবিমানের আওয়াজ। সর্বক্ষণ তাড়া করে বেড়াচ্ছে প্রাণভয়। ইজরায়েলের (Israel) সঙ্গে সংঘর্ষে বিপর্যস্ত প্যালেস্তাইনের (Palestine) জনজীবন। সেই প্রেক্ষিতেই কলম ধরলেন অভিনেত্রী জয়া আহসান (Jaya Ahsan)। মানবিকতাকে খোঁচা দিয়ে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন, "এ কোন নরক এই পৃথিবীতে? 'ঈমানে' কি জং ধরেছে?"
"প্যালেস্তাইনের ছবি দেখছি খবরের কাগজে। টেলিভিশনের পর্দায়। দেখছি, আর নরকের অতলে নেমে যাচ্ছি মনে হয়। ভেঙে ঝুরঝুরে হয়ে যাওয়া বাড়িঘর। তার ওপরে ভাসছে পাক খাওয়া আগুন। আর সারি বাঁধা তরতাজা লাশ। একটু আগেই তারা হাসছিল, খাচ্ছিল, শিশুটি নিচ্ছিল মায়ের আদর। যারা বেঁচে আছে, তারা রক্তমাখা। আগুনের লেলিহান শিখার নিচে ছুটোছুটি করছে। নিজের জীবন বাঁচাতে নয়। ধংসস্তুপের ঝাঁঝরা ইঁট সরিয়ে সরিয়ে তারা বের করে আনছে চাপা পড়ে থাকা শিশুদের। ওই কচি বাচ্চাগুলো ডুবে ছিল আলো-বাতাসহীন বিভীষিকার তলায়", উদ্বেগমাখা শব্দ অভিনেত্রীর কলমে।
যারা কিনা এই বয়সে খেলে বেড়াবে, মায়ের আদর খাবে, সেই ফুলের মতো সুন্দর শিশুগুলোর জীবন এভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জয়ার কথায়, "একটি শিশুকে উদ্ধার করা হল। ওর পুরো পরিবার পাঁচ মিনিট আগেও মমতায় ঘিরে রেখেছিল ওকে। পৃথিবীতে এখন সে একেবারে একা। ছোট্ট একটা খুকি। এখনই তার পরিবার নেই, দেশ তো ছিলই না। খবরের কাগজে পড়লাম, গত এক সপ্তাহে ইজরায়েলের নির্মম হামলায় ২০০ জনের বেশি প্যালেস্তাইনের বাসিন্দা মারা গিয়েছেন। এর চার ভাগের এক ভাগেরও বেশি নাকি শিশু। এ কোন নরক এই পৃথিবীতে!"
তাদের অসহায়তা আর হাহাকার দেখে অভিনেত্রীর কণ্ঠ বুঁজে আসে। লেখনীর মাধ্যমেই তাঁর কাতর আর্জি, "এই যুদ্ধ থামুক। শিশুরা খেলা করুক রোদেলা মাঠে, খেজুর গাছের নিচে। নিজের দেশে দেশছাড়া এই মানুষগুলো নিজেদের এক চিলতে ঘরে ফিরুক। এক জীবনে কি এটা খুব বড় প্রত্যাশা?"