আন্দোলন সে কি এমন হয়? একজন অভিনেত্রী তিনি যদি সদিচ্ছায় সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে আন্দোলনে যোগ দিতে যায় তার সঙ্গে এরকম আচরণ কি প্রয়োজন? গতকাল রাত থেকে ঠিক একই প্রশ্ন উঠছে। অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে আন্দোলনে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। রাত জাগতে গিয়েছিলেন বাকি সকলের সঙ্গে। কিন্তু সেখানে তার সাথে যা হল....
১৪ই আগস্ট যেদিন প্রথমবারের মত মেয়েরা রাত দখল করেছিল, সেদিন শহরে উপস্থিত ছিলেন না ঋতুপর্ণা। তাই হয়তো তাকে দেখা যায়নি। কিন্তু গতকাল নিজের ইচ্ছেতেই, এসেছিলেন বাকি সকলের সঙ্গে রাত জাগতে। আর সেখানেই তাকে দেখে উঠল 'গো ব্যাক' স্লোগান। অভিনেত্রী রীতিমতো অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েন। জনরোষের মুখে পড়তেও অভিনেত্রী প্রথমে কিন্তু সেখান থেকে চলে যাননি। কিন্তু গো ব্যাক স্লোগানের পাশাপাশি ঋতুপর্ণার সঙ্গে যে ধরনের আচরণ হতে শুরু করে, সেটা ভয়ংকর। ধাক্কাধাক্কি-ঠেলাঠেলির পাশাপাশি, ঋতুপর্ণার গাড়িতে ধাক্কা মারতেও যান কিছু আন্দোলনকারীরা।
কেন রোষানলে অভিনেত্রী?
প্রথম প্রথম যখন আন্দোলন শুরু হলো, ঋতুপর্ণার প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন শঙ্খ বাজানো। কিন্তু একটি ভুল করে বলেছিলেন অভিনেত্রী। শঙ্খ বাজানোর এডিটেড ভিডিও প্রকাশ করতেই চূড়ান্ত ট্রোল হন তিনি। এরপর থেকে তাকে আক্রমণ করার পরিমাণ আরও বাড়তে থাকে। অভিনেত্রী নাটক করছেন এরকম অনেক ধরনের মন্তব্য দেখা যায় সমাজ মাধ্যমের পাতায়। কিন্তু এতসবের পরেও গতকাল রাত্রে সবাইকে নিজের মনে করেই তিনি এসেছিলেন। সেখানেই তাকে যে চরম হেনস্থা হতে হবে যেন কল্পনাও করেননি।
শুধু গো ব্যাক স্লোগান উঠলো না। বরং তাকে দেখে ধিক্কার জানাতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। গাড়িতে বোতল ছুঁড়তে শুরু করেন। একবার জনতার চাপে হোঁচট পর্যন্ত খান তিনি। পরিস্থিতি এতটা খারাপ দেখে অবশেষে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হন তিনি। গাড়িতে ওঠার পরও তার গাড়িকে ধাক্কা দিতে থাকেন সেখানকার কিছু মানুষ। এদিকে ঋতুপর্ণার সঙ্গে এরকম ঘটনা ঘটে যাওয়াতে, ফের একবার প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। তারা এও বলছেন...
যেখানে আন্দোলনটা মেয়েদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে, সেখানে একজন মহিলার সঙ্গে এরকম আচরণ হয় কী করে? একজন অভিনেত্রী তিনি শঙ্খ বাজিয়েছেন বলে তার সঙ্গে এরম আচরণ? যিনি বাকিদেরকে নিজের মনে করে প্রতিবাদ করতে এসেছেন, তাকে এভাবে হেনস্থা করা, ফিরিয়ে দেওয়ার অর্থ কী? ফের একবার প্রশ্ন উঠে গেল নারী নিরাপত্তা নিয়েও।