অসুস্থতাও দমিয়ে রাখতে পারেনি তাঁর শিল্পীসত্ত্বা। নবতিপর পদ্মশ্রীপ্রাপ্ত শিশু সাহিত্যিক তথা কার্টুনিস্ট হাসপাতালের বেডে বসেও সেই একই ধাঁচে কলম চালিয়ে চলেছেন। গত ২৫ জানুয়ারি থেকেই অসুস্থতার কারণে হাসপাতালে ভর্তি নারায়ণ দেবনাথ (Narayan Debnath)। সম্প্রতি তাঁর মস্তিষ্কের সক্ষমতা পরীক্ষা করতে চিকিৎসকরা ছবি আঁকতে বলেন। ডাক্তারি পরামর্শ শোনামাত্রই আর দেরি করেননি। সামনে এগিয়ে দেওয়া কাগজ-কলমে খসখস করে এঁকে ফেললেন বাংলা কার্টুন জগতের অন্যতম চিরন্তন কার্টুন চরিত্র 'বাঁটুল'কে।
Advertisment
হাসপাতালের বিছানায় বসে নারায়ণ দেবনাথের ছবি আঁকার সেই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানেই দেখা গেল, পরনে হাসপাতালের দেওয়া জামা। এলোমেলো চুল। চেহারাতেও তাঁর অসুস্থতার ছাপ স্পষ্ট। তবে 'বাঁটুল দি গ্রেট' এখনও তাঁর নখদর্পণেই! বয়স এবং অসুস্থতার কারণে, ছবি আঁকার সময়ে নারায়ণবাবুর হাত কিছুটা কাঁপছে বটে! তবে কার্টুনের রেখায় এখনও কোনও ভুল-চুক নেই।
'বাঁটুল দি গ্রেট', 'হাঁদা ভোঁদা', 'নন্টে ফন্টে'র সৃষ্টিকর্তা তিনি। বর্তমানে বয়স ৯৬। চিকিৎসকদের কথায়, এই বয়সে স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়া অত্যন্ত স্বাভাবিক। তাই তাঁর মস্তিষ্কের সক্ষমতা প্রমাণ করার জন্য অভিনব পন্থা প্রয়োগ করেন ডাক্তাররা। তাঁদের কথায়, এর মাধ্যমেই পরীক্ষা করা হবে যে, শিল্পীর মস্তিষ্ক থেকে বেরোনো সংকেত তাঁর শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে-প্রত্যঙ্গে যথাযথভাবে পৌঁছচ্ছে কিনা। আর চিকিৎসকদের নির্দেশ শুনে বাধ্য ছাত্রের মতোই হাসপাতালের বিছানায় কাগজ-কলম নিয়ে মন দিয়ে পরীক্ষা দিতে বসে গেলেন নারায়ণবাবু। আঁকলেনও। তাঁর হাতের জাদুতে আবারও সাদা কাগজে ফুটে উঠল বাঁটুল। শুধু তাই নয়, অঙ্কিত কার্টুন চরিত্রের নিচে লিখলেন, "স্নেহেরু সৃষ্টিকে ভালবাসা আর শুভেচ্ছা-সহ নারায়ণ দেবনাথ।" নারায়ণবাবু যে এই পরীক্ষায় ফুল মার্কসে পাশ করে গিয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য।