দীর্ঘদিনের যুদ্ধে শেষমেশ হার মেনেছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। ক্যানসারের মতো মারণরোগকে হারিয়ে দু-দু’বার ফিরে এসেছেন মৃত্যুর মুখ থেকে। তবে পয়লা নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোক করে সেই যে হাসপাতালে গেলেন, সুস্থ হয়ে আর ফিরলেন না বাড়িতে। চেষ্টা করেছিলেন 'জিয়নকাঠি', কিন্তু অদৃষ্টের ডাক কে-ই বা খণ্ডাতে পারে!
এত হাসিখুশি, তরতাজা মেয়েটার চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ঐন্দ্রিলার পরিবার, বন্ধু-বান্ধব তথা অনুরাগীরা। ভেঙে পড়েছেন প্রেমিক সব্যসাচী চৌধুরি, দিদি ঐশ্বর্য শর্মারা। তবে ঐন্দ্রিলার প্রয়াণের পর সব্যসাচী একেবারে নিস্তব্ধ হয়ে গেলেও শোক সামলে উঠতে পারেননি দিদি ঐশ্বর্য। আদরের বোনের স্মৃতিচারণা করেই চলেছেন সেদিন থেকে। তাঁর কাতর আর্জি, "অনেকদিন তো হল, চলে আয় বুনু। তুই ছাড়া আমি পঙ্গু।"
ঐন্দ্রিলার সঙ্গে আদুরে ছবি শেয়ার করে ঐশ্বর্য লিখেছেন, "অনেকদিন তো হলো ,এবার তাড়াতাড়ি চলে আয় বুনু। তুই ছাড়া আমি যে পঙ্গু। কে আমাকে সাজিয়ে দেবে বলতো ? কে আমার ছবি তুলে দেবে? কে না বলা মনের কথাগুলো আমার মুখ দেখে বুঝে যাবে? কে আলাদ্দিনের আশ্চর্য প্রদীপের মতো আমার সমস্ত মনের ইচ্ছে পূরণ করবে? কার সাথে আমি ঘুরতে যাব? কার সাথে পার্টি করব? কার সাথে আমি সারারাত জেগে সিনেমা দেখবো, গল্প করবো? কে আমাকে সঠিক পরামর্শ দেবে? আমাদের এখনও কত প্ল্যান বাকি আছে বলতো?"
ছোট বোন হয়েও দিদির যে অনেক খেয়াল রাখতেন ঐন্দ্রিলা, ঐশ্বর্যর লেখার প্রতিটা ছত্রে ছত্রে তা বোঝা যাচ্ছে। তাই তো বোনকে হারিয়ে ভারী মন নিয়ে অনবরত প্রশ্ন ছুঁড়েই চলেছেন বড় দিদি। লিখলেন, "কে আমাকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবাসবে? কে আমার জন্য পুরো পৃথিবীর সঙ্গে লড়বে, আমাকে আগলে রাখবে? আমার যে তুই ছাড়া আর কোনো প্রিয় বন্ধু নেই। তুই যে আমার জীবনীশক্তি। এই ২৪ বছরে আমি যে নিজে থেকে কিছুই করতে শিখিনি বুনু। আমি জানি তুই সাবলম্বী কিন্তু তোর দিদিভাই যে তোকে ছাড়া খুব অসহায়। তাড়াতাড়ি আমার কাছে চলে আয় বুনু। অপেক্ষায় রইলাম।"
<আরও পড়ুন: ‘মা’ ঐন্দ্রিলা আর নেই! কেঁদে আকুল পোষ্য তোজো-বোজোরা>
ঐন্দ্রিলার দিদির পোস্টে শোকপ্রকাশ করেছেন অনুরাগীরাও। রবিবার বেলায় চিরতরে বিদায় নিয়েছেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। বছর চব্বিশের অভিনেত্রীর বিদায়ে শোকাতুর তাঁর অনুরাগীরা। চোখের জলে তাঁকে বিদায় দিয়েছে পরিবার-পরিজন থেকে টলিউডের সহকর্মীরা। সোশ্যাল মিডিয়া ছেড়ে একেবারে নিজেকে গুটিয়ে নিচ্ছেন সব্যসাচী চৌধুরি।