অমিতাভ বচ্চন মানেই ধুয়াধার অ্যাকশন থেকে পর্দা কাঁপানো অভিনয় সঙ্গে বোনাস হিসেবে তার দরাজ গলার সম্ভাষণ। গাম্ভীর্যের এক অপরূপ দর্শন সঙ্গে প্রতিটা চরিত্রের নিজস্বতার ব্যাখ্যায় কখনই তিনি দর্শককে আক্ষেপের সুযোগ দেননি। কিন্তু এই মানুষটিই একসময়ে কতরকম প্রতিকূলতার সম্মুখীন, সেটি সত্যিই গায়ে কাঁটা দেওয়ার মত।
বিগ বির অভিনয় জীবনের প্রথম ধাপ সম্পর্কে অনেকেই জানেন। হাজার প্রত্যাখ্যান সহ্য করার পরেও তিনি হাল ছাড়েননি। এই প্রসঙ্গেই আলাপচারিতার মাঝেই পরিচালক হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় বেশ কিছু কথা ব্যক্ত করে বলেছিলেন, "প্রচুর গুণ্যমান্য পরিচালকরাও অমিতাভকে ব্যবহার করেছিলেন স্টান্ট ম্যান হিসেবে। কারণবশত তার ভাবমূর্তি ক্রমাগতই নষ্ট হচ্ছিল বোম্বে সিনেমার প্রাঙ্গণে। তার অ্যাংরি ইয়াং ম্যানের যে প্রতিচ্ছবি সেটিকেই ভুল দিকে পরিচালনা করেছিলেন বেশ কিছু পরিচালক।"
সবসময় একতরফা অ্যাকশন ছবিতেই তাকে কাস্ট করা হত। তবে হৃষিকেশের নজড় এড়ায়নি তাঁর প্রতিভা। ‘আনন্দ’ ছবিতে দুজনে একসঙ্গে জুটি বাঁধার পরেই, রুপোলি পর্দায় ঝড় উঠতে থাকে। যথারীতি পরবর্তী ছবি গুড্ডি তে, জয়া বচ্চনের বিপরীতে অভিনয় করার কথা ছিল অমিতাভের। পাঁচ ছয়দিন শুটিং করার পর, তারিখ নিয়ে সমস্যা হতেই বিগ বি-কে সেচ্ছায় সিনেমা থেকে বাদ দেন পরিচালক। যদিও তাদের সম্পর্ক এরপরে আরও মজবুত হয়। হৃষিকেশ বাবু নিজে ফোন করেই জানিয়েছিলেন এই ছবি থেকে বাদ পড়ছেন তিনি তবে পরবর্তী সিনেমাতে অমিতাভ ছাড়া আর কাউকেই ভাবছেন না। তিনি আরও বলেছিলেন, 'আনন্দ' মুক্তি পাওয়ার পরেই রাতারাতি সুপারস্টারের তকমা পেয়েছিলেন অমিতাভ। ঘুরে তাকানোর আর জো ছিল না।
সম্পর্ক শুধু সিনেমার সেটে নয়, ব্যক্তিগত পর্যায়ে বেশ সুন্দর ছিল। অমিতাভ জয়ার বিয়ে উপলক্ষেও অমিতাভের পক্ষ থেকেই উপস্থিত ছিলেন হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়। রোমান্টিক থেকে কমেডি, 'জনজির'- 'শোলে' থেকে 'অভিমান'- 'চুপকে চুপকে' তার অভিনয় সত্বাকে বের করে এক সম্পূর্ণ নতুন অমিতাভ কে উপহার দিয়েছিলেন তিনি। প্রসঙ্গত, বচ্চন নিজেও জানিয়েছিলেন তাঁর জীবনে হৃষিকেশ বাবুর অবদান ভগবান তুল্য, যা কোনওদিন ভোলার নয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন