তাঁর জীবনের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছে বায়োপিক। সারাজীবন যিনি গরীব পড়ুয়াদের শিক্ষার স্বার্থে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। 'সুপার থার্টি'-র সৌজন্যে পুরনো ছাত্রছাত্রীদের পুনর্মিলন অর্থাৎ রিইউনিয়ন হতে চলেছে। এই সমস্ত যাঁকে ঘিরে, সেই আনন্দ কুমার কথা বললেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রস বাংলার সঙ্গে।
হৃতিক রোশনকে নিজের ভূমিকায় দেখে কেমন লেগেছে?
বহুত আচ্ছা লাগা! প্রথমবার আমার মতো লুকে হৃতিককে দেখেছিলাম শুটিংয়ে। কাঁধে গামছা রেখে হেঁটে আসছিলেন। এক্কেবারে চমকে গিয়েছিলাম। কথাও বলছিলেন আমার মতো উচ্চারণে। মনে হচ্ছিল সামনে আমারই ছবি দাঁড়িয়ে। বলেছিলাম, "আপনি যেভাবে কথা বলেন সেভাবে বলুন না।" হৃতিকের জবাব ছিল, "এবার আমার নর্মাল হতে দু-তিন মাস লেগে যাবে। এক বছর বিহারি টানে কথা বলেছি।"
কিন্তু ট্রেলার মুক্তি পাওয়ার পর এই ভাষা নিয়েই ট্রোলড হয়েছেন তিনি...
কী বলুন তো, বিহারি বলতেই মানুষ ভোজপুরি মনে করেন, কিন্তু আমরা মগধি বলি। যেমন, "ক্যায়া করোগে" নয়, "কা করোগে", এবং এটা হৃতিক নিঁখুত বলেছেন। ভাগলপুরের একটি ছেলে ওঁকে শিখিয়েছে। তাছাড়া কাজটা করার সবচেয়ে বেশি চেষ্টা আমি হৃতিক জি-র মধ্যে দেখেছি।
ছবির প্রস্তাব কীভাবে আসে?
বাংলার সঞ্জু দত্ত, চিত্রনাট্যকার। ওঁর মনে হয়েছিল আমার উপর ছবি তৈরি হতে পারে, এবং অনুরাগ বসুর ছবিটা তৈরি করার কথা ছিল। কিন্তু তিন বছর আগে তিনি আবার যোগাযোগ করেন। তারপরে একবছর ধরে পাটনা গিয়ে গিয়ে মজবুত চিত্রনাট্য তৈরি করেন। চিত্রনাট্যের ওপর আমিও কাজ করেছি।
সুপার থার্টি নিয়ে ছবি হবে কখনও ভেবেছিলেন?
কক্ষনো না। আরে বায়োপিক তো দূর অস্ত, আমার উপর কোনও বায়োগ্রাফি লেখা হবে সেটাও ভাবি নি (এক কানাডিয়ান লেখক বায়োপিক লিখেছেন আনন্দ কুমারের)। কী জানেন, সুপার থার্টির নামও তখন ছিল না। এমনি ৩০ জন বাচ্চাকে নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম।
আরও পড়ুন, সুপার থার্টি রিভিউ: ছাঁচ ভেঙে বেরোতে পারলেন কই হৃতিক?
চিত্রনাট্য আপনি ছবি তৈরির আগে দেখেছিলেন?
হ্যাঁ! প্রায় ১৩ বার কাটাছেঁড়ার পর চিত্রনাট্য লক হয়েছে। কিছু কিছু জিনিস অতিনাটকীয় ছিল যা বাদ দিয়েছি। ফিল্মি লির্বাটি রয়েছে। আরে আমি তো জীবিত। মিথ্যে ঘটনা বললে তো সমাজে মুখ দেখাতে পারব না। আমেরিকা, জার্মানি, ফ্রান্সের প্রতিটি বাচ্চাকে যেমন দেখানো হয়েছে, তারা সত্যিই রয়েছে।
ছবি দেখে পরিবারের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?
ট্রেলার চালানোর সঙ্গে সঙ্গে আমার দু'বছরের মেয়ে "বাবা, বাবা" বলে দৌড়ে এসেছে। মায়ের চোখে জল দেখেছি। স্ত্রী খুশি ছিল। ভাইও সবসময় আমার পাশে থেকেছে। ছবিতেও নন্দিশ আমার ভাইয়ের ভূমিকায় রয়েছে।
আনন্দের মতে, ছবি দেখে মানুষ অনুপ্রাণিত হবেন। তবে এখন আর সুপার থার্টি পাটনায় সীমিত নেই, বাংলা থেকেও ছেলেমেয়েরা আসছে পড়তে, জানালেন তিনি।