Byomkesh Season 5 Cast: অনির্বাণ ভট্টাচার্য, সুপ্রভাত দাস, ঋদ্ধিমা ঘোষ চক্রবর্তী, রাজর্ষি দে, ইন্দ্রাশিস রায়
Byomkesh Season 5 Director: সৌমিক হালদার
Byomkesh Season 5 Rating: ৩/৫
বিগত কয়েক বছর যাবৎ ব্যোমকেশ নিয়ে এত কাজ হয়েছে বাংলায় যে দর্শকের কাছে মোটামুটি ব্যোমকেশের গল্পগুলি আপাতত জলভাত হয়ে গিয়েছে। যাঁরা ব্যোমকেশের মগ্ন পাঠক, তাঁদের কাছে কীভাবে নতুন কোনও আঙ্গিকে নিয়ে আসা যায় ব্যোমকেশকে, তা চিত্রনাট্যকার-পরিচালকদের কাছে একটি চ্যালেঞ্জ। হইচই-এর ব্যোমকেশ সিরিজের পঞ্চম সিজনটি নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
আরও পড়ুন: Dwitiyo Purush Review: মগজে ঝিলমিল লেগে যাবে
সিনেম্যাটোগ্রাফার সৌমিক হালদার এখানে পরিচালকের ভূমিকায়। সিরিজটি দেখতে বসে একটু মনোযোগী দর্শক মাত্রেই বুঝবেন যে পরিচালককে একটি সীমিত বাজেটের মধ্যে কাজটি সারতে হয়েছে তাই কিছু সিকোয়েন্স বা দৃশ্য যে উচ্চতায় পৌঁছতে পারত তা স্পর্শ করতে পারেনি। কিন্তু পরিচালক বা চিত্রনাট্যকারের ভাবনা সেই প্লেন ছুঁয়ে ফেলতে সমর্থ হয়েছে। যে দর্শক নিয়মিত ওয়েব সিরিজ দেখেন আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলিতে, তাঁরা দেখলেই বুঝবেন।
তবে এই সিজনের ইউএসপি-- ব্যোমকেশের দুটি জানা গল্পের একটি নব্য পুনর্নির্মাণ। সম্পূর্ণ আলাদা দুটি গল্পকে অত্যন্ত মুন্সিয়ানার সঙ্গে চিত্রনাট্যকার বেঁধে ফেলেছেন একটি প্লটে এবং প্রেক্ষাপটে রেখেছেন পঞ্চাশের মন্বন্তর। 'খুঁজি খুঁজি নারি' এবং 'দুষ্টচক্র'-- গল্প দুটিকে যেভাবে একটি প্লটে মিশিয়েছেন চিত্রনাট্যকার তা অনবদ্য। অথচ সেখানে মূল গল্পদুটির বহু কথোপকথন হুবহু রাখা হয়েছে সংলাপে যা ভাল লাগবে যে কোনও ব্যোমকেশভক্তের।
আরও পড়ুন: Panga movie review: দুরন্ত ‘পাঙ্গা’ নিলেন কঙ্গনা
কিন্তু চিত্রনাট্যের প্রকৃত উত্তরণ ঘটেছে মন্বন্তরের আলোয় সত্যান্বেষী ব্যোমকেশকে দেখায়। সত্যের সন্ধানে যে প্রতিনিয়ত ফেরে, যার কাছে যা কিছু সত্য তাই একমাত্র সুন্দর, তাকে অশান্ত করে তোলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-কালোবাজারি। যাঁরা ওই সময়ের ইতিহাস নিয়ে অল্পবিস্তর চর্চা করেছেন, তাঁরা জানেন, ওই মন্বন্তরটি ঘটেছিল মূলত মজুতদারদের চক্রান্তে। সেই দুর্নীতি আর মিথ্যার মায়াজাল ব্যোমকেশকে যন্ত্রণা দেয়। অন্য ব্যোমকেশ, সত্যবতী ও অজিত ফুটে ওঠে ইতিহাসের ক্যানভাসে। অনির্বাণ ভট্টাচার্য বহু দর্শকেরই প্রিয় ব্যোমকেশ। এই সিজনে তাঁকে আরও বেশি ভাল লাগে।
সিরিজের কাস্টিং চমৎকার। সুপ্রভাত দাস, ঋদ্ধিমা ঘোষ, রাজর্ষি দে, ইন্দ্রাশিস রায় অত্যন্ত পরিমিত। অন্যান্য চরিত্রগুলিতেও অভিনয় চমৎকার। অনিমেষ ঘড়ুইয়ের সিনেম্যাটোগ্রাফি এবং সংলাপ ভৌমিকের এডিটিংও ভাল। বেশিরভাগ গোয়েন্দা গল্পকেই সাদামাটা থ্রিলারের মতো যে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়, এই সিজনটি তার থেকে কিঞ্চিৎ আলাদা।
কয়েকটি দৃশ্য এবং সিকোয়েন্সের উপস্থাপনা আরও পেশাদার হতে পারত, বিশেষ করে স্বপ্নদৃশ্যটি। তবে সামগ্রিকভাবে পিরিয়ডের নির্মাণ ভাল।