/indian-express-bangla/media/media_files/2025/09/24/anupam-2025-09-24-10-43-07.jpg)
কেন এমন বলেন অনুপম...
অনুপম খেরের হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিষেক হয়েছিল একেবারেই ভিন্নধর্মীভাবে। তিনি মহেশ ভাট পরিচালিত, সমালোচকদের প্রশংসিত ছবি ‘সারাংশ’-এর মাধ্যমে অভিনয়ে পা রাখেন। সেসময় তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৫ বছর, অথচ ছবিতে তাঁকে অভিনয় করতে হয়েছিল ৬৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের চরিত্রে। শুরু থেকেই পরিস্থিতি তাঁর বিরুদ্ধে ছিল। এমনকি এই চরিত্রটিও শেষ মুহূর্তে প্রায় হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছিল। কারণ ছবির প্রযোজক চেয়েছিলেন এই চরিত্রে জনপ্রিয় অভিনেতা সঞ্জীব কুমারকে নিতে, যিনি সেই সময়ের অন্যতম শীর্ষ তারকা ছিলেন।
এক্সপ্রেসোর সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে অনুপম খের এই অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করেছেন। তিনি বলেন, "শুটিং শুরু হওয়ার মাত্র দশ দিন আগে আমাকে আমার প্রথম ছবি সারাংশ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। আমি তখন ২৮ বছরের এক তরুণ, অথচ ছবিতে ৬৫ বছরের বৃদ্ধ চরিত্রে অভিনয় করছিলাম। এই চরিত্রের জন্য আমি অনেক প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। বয়স্ক মানুষের হাঁটা-চলা, আচরণ কেমন হয় তা শিখেছিলাম, এমনকি চরিত্রে ডুবে যাওয়ার জন্য আমি লাঠি হাতে নিয়েই ঘুমাতাম।"
Monami Ghosh- Durga Puja: 'কল্কি' তো এমন একজন হবে যে সমস্ত অন্যায়ের বিনাশ করবে: মনামী ঘোষ
কিন্তু শুটিং শুরুর ঠিক আগে অনুপম জানতে পারেন, তাঁর জায়গায় সঞ্জীব কুমারকে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মানসিকভাবে বিধ্বস্ত অনুপম ঠিক করেন মুম্বই ছেড়ে চলে যাবেন। তবে যাওয়ার আগে মহেশ ভাটের সঙ্গে দেখা করার ইচ্ছে জাগে তাঁর। তিনি ভাটকে ফোন করলে পরিচালক বলেন, “প্রযোজক একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতাকে নিতে চাইছেন। চিন্তা কর না, অন্য কোনো ছবিতে বৃদ্ধ চরিত্রের সুযোগ আসবে।” এই উত্তর শুনে ক্ষুব্ধ অনুপম নিজের ব্যাগ গুছিয়ে শহর ছাড়ার প্রস্তুতি নেন। তাঁর মনে হযতে থাকে, ছয় মাস ধরে প্রস্তুতি নেওয়ার পরও যদি তাঁকে এভাবে সরিয়ে দেওয়া যায়, তবে এই শহরে তাঁর ভবিষ্যৎ নেই।
অবশেষে তিনি সরাসরি মহেশ ভাটের বাড়িতে গিয়ে মুখোমুখি কথা বলেন। অনুপম বলেন, "আমি তাঁকে বললাম, ওই ট্যাক্সিটা দেখছেন তো? ওখানে আমার লাগেজ রাখা। আমি শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি। তবে যাওয়ার আগে একটা কথা বলে যাচ্ছি- আপনি এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রতারক। আপনি সত্য নিয়ে সিনেমা বানাচ্ছেন অথচ আপনার ভেতর কোনো সত্যাত নেই। ছয় মাস আমাকে রিহার্সাল করিয়ে এখন আমাকে বাদ দিচ্ছেন। আপনি শুধু শৈল্পিক পরিচালক সাজার ভান করছেন। আমি একজন ব্রাহ্মণ, আর আপনাকে অভিশাপ দিচ্ছি।"
এই ঘটনার পর মহেশ ভাট প্রযোজককে ফোন করে বলেন, "যে দৃশ্যটা ও (অনুপম) এখন তৈরি করল, এটা কেবল তিনিই করতে পারবেন।" আর সেখান থেকেই তৈরি হয় ইতিহাস।
সারাংশ, যেখানে মুম্বইয়ে বসবাসরত এক বয়স্ক মহারাষ্ট্রীয় দম্পতি তাঁদের একমাত্র সন্তান হারানোর শোক সামলাতে লড়াই করেন, তা ব্যাপক সমালোচকদের প্রশংসা অর্জন করে। ছবিটি ১৯৮৫ সালে ভারতের পক্ষ থেকে অস্কারে সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে সরকারি এন্ট্রি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল, যদিও মনোনীত হয়নি।