ক্রমশই ডাক্তারদের আন্দোলনের পরিসর বাড়ছে। আজ তারা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পাঁচ দফা দাবি নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছেন তাঁর কালীঘাটের বাড়িতে। এমন অবস্থায় কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেটাই দেখার। কিন্তু, শহরের অসুখ। শহরের মানুষের মনে অসুখ।
পুজোর আর একমাস বাকি নেই। কিন্তু, উমা আরাধনার থেকে যেন সাধারণ উমার বিচারের আশায় বেশি আগ্রহী মানুষ। কিছুদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, উৎসবে ফেরার কথা। আর তাঁর পর থেকেই আন্দোলন আরও বৃহত্তর। কীসের উৎসব? যেখানে মেয়েদের সুরক্ষা নেই। যেখানে নারী নির্যাতনের কোনও শেষ নেই? সেখানে পুজো নিয়ে নানা মন্তব্য শোনা যাচ্ছে।
অভিনেত্রী অপরাজিতা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে সেদিনই জানিয়েছিলেন, তাঁর মানসিকতা নেই উৎসবে ফেরার। তাই তিনি ফিরবেন না। আর এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলেন...
"অন্ধকার, ঝকঝকে দিনের আলোর মাঝেও নিরেট অন্ধকার। একটা নৃশংস মৃত্যু নাকি বলবো আত্মবলিদান, নাকি একেবারে সরাসরি খুন বলা ঠিক হবে, অন্ধকারে সব দিশেহারা হয়ে আছে।। তিলোত্তমা, এক মাসের আর একটু বেশী আগে এই নামে আমরা যাকে চিনতাম তার নাম কল্লোলিনি কলকাতা, আর আজ? আমি কে? তুমি কে? তিলোত্তমা… তিলোত্তমা!"
না, উৎসবে ফিরবেন না তিনি। কিন্তু উপাসনা, সে তো করা যায়? অভিনেত্রী আরও লিখলেন... "না, উৎসবে ফিরব না, কিন্তু উপাসনায়? প্রতিদিনের ইঁদুর দৌড় ভুলে একটু বেঁচে নেওয়ার প্রস্তুতির নাম যদি হয় উৎসবে ফেরা, তবে সে তো বাঙালী বর্জন করেছে এক মাস অতিক্রান্ত, কিন্তু উপাসনায় ফেরা হবে কী হবে না, সেটা কী সমষ্টিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে? ধর্মের বীজে যে সমাজের আধার, প্রকৃতির পরমা রূপে যে জাতির সমস্ত আর্তির নিষ্পত্তি; তাকে উপাসনায় ফেরার বা না ফেরার সিদ্ধান্তে বোধ হয় সমষ্টিগত ভাবে পৌঁছানো যায় না।"
অপরাজিতার লেখা পড়লেই বোঝা যায়, কতটা মানসিকভাবে বিধ্বস্ত তিনি। অভিনেত্রী অল্প কিছুই চাইলেন। নিজের লেখার মাধ্যমে স্পষ্ট করলেন, আসলে তিনি কী চান। বলছেন, "আলো জ্বলবে না, গান বাজবে না, প্রাচুর্যের প্রভূত প্রকাশ হবে না, কিন্তু দীপে, ধুপে উপাসনা হবে… যে মানুষ চাইবেন মণ্ডপে করতে তিনি করবেন, যারা চাইবেন রাজপথে শূন্যে চেয়ে করতে, তারাও করবেন… কিন্তু চাইব আমরা এক প্রবাহে, কোনো দলীয় প্রশাখা বিপ্লবের দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে চাইব একটাই প্রার্থনায়, “জগৎ জননী তুমি নারীর সম্মান ফিরিয়ে দাও… তুমি কী কেবলই প্রতিমা? কী খুব বেশী চাওয়া হয়ে যাচ্ছে? পারবো না আমরা?! উৎসব না… উপাসনা।"
উল্লেখ্য, এই পুজোয় অভিনেত্রীর নতুন ছবি রিলিজ করার কথা ছিল। রাহুল মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ওই ছবিতে কাজ করার কথা ছিল প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে অনির্বাণ ভট্টাচার্য অনেকেরই। তবে, এখন সেসব অতীত।