'লাইমলাইট', 'বিদ্রোহিনী' ছবিতে দেখা গিয়েছিল। তবে এবার অনীক দত্তর ফ্রেমে সত্যজিৎ রায়ের মতো কিংবদন্তীর ভূমিকায় 'অপরাজিত' করলেন। কীভাবে পর্দার মাণিকবাবু হয়ে উঠলেন? নেপথ্যের গল্প শোনালেন জিতু কামাল (Jeetu Kamal)। লিখছেন সন্দীপ্তা ভঞ্জ।
সত্যজিৎ রায় মানেই শুধু বাঙালি কেন গোটা বিশ্বের সিনেপ্রমীদের আবেগ। সেই চরিত্রে অভিনয় করা কতটা চ্যালেঞ্জিং মনে হল?
চ্যালেঞ্জের থেকেও আবেগপ্রবণ বেশি হয়েছিলাম। একেবারে আর পাঁচজন বাঙালির মতোই। ট্রেলার দেখেও চোখে জল চলে এসেছিল।
মানে, চ্যালেঞ্জিং মনে হয়নি?
যখন সত্যজিৎ রায়ের ভূমিকায় অভিনয় করার সুযোগ পেলাম, গোড়ার দিকে তখন চ্যালেঞ্জিং মনে হলেও শুট শুরু হওয়ার পর অনীক দত্ত, উৎসবদার থেকে যা সাহায্য পেয়েছি, এবং ওঁরা যে বেষ্টনী তৈরি করেছিলেন, সেই সময়েই সমস্ত ভয়, নার্ভাসনেসের জলাঞ্জলী হয়ে গিয়েছিল। তাঁরা এতটাই আমার ওপর ভরসা রেখেছিলেন যে, একটা সময়ে মনে হল অভিনয়ের মাধ্যমে এর কতটা আমি ফেরৎ দিতে পারব ওঁদের।
অনীকদার মতো করে মাণিকবাবুকে চিনেছেন, নাকি নিজের মতো করে মানুষটাকে আবিষ্কার করেছেন?
সত্যজিৎ রায়ের কোনও বিকল্প তো আজও নেই। উনি একটা আবেগ। আর আমার কাছে মাণিকবাবু ব্র্যান্ড। এই ছবিটা করার পর এটুকু বলতে পারি যে, আমার ছেলেকে আমি সত্যজিৎ রায়ের মতো মানুষ করব। ওঁর প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গী ছিল- সত্যজিৎ রায় মানেই পথের পাঁচালি, অস্কার, ভাল ইংরেজি বলেন, পরিষ্কার উচ্চারণে রাশভারী গলায় কথা বলেন। বিশাল ব্যক্তিত্বওয়ালা একটা লোক। প্রথমদিকে এর বাইরে সত্যজিৎ রায়কে নিয়ে বেশি ঘাঁটিনি আমি। খুব সৎভাবে-ই স্বীকার করছি। কিন্তু সিনেমা শুরুর আগে যখন অনীকদার সঙ্গে এই সিনেমার জন্য দীর্ঘক্ষণ সময় কাটালাম, আলোচনা করলাম, তখন আবিষ্কার করলাম যে, সত্যজিৎ রায় শুধু একজন ফিল্মমেকার কিংবা গল্পকার নন, তিনি একাধারে দার্শনিকও বটে। পাশাপাশি চিত্রনাট্যকার। 'তিন কন্যা'র সময় থেকেই নিজের ছবিতে মিউজিক দিতে শুরু করলেন। গান,আঁকা, কবিতা, ছোটগল্প কত সৃষ্টি তাঁর। ওঁর ছেলে আবদার রেখেছিল, 'তুমি ছোটদের জন্য সিনেমাই বানাওনি'- সেই কথা এতটাই তাঁর ওপর প্রভাব ফেলল যে, তিনি 'গুপি গাইন বাঘা বাইন' বানিয়ে ফেললেন। তো এরকম একজন বিশালমাপের মানুষকে আমার একার পক্ষে আবিষ্কার করা অসম্ভব!
সত্যজিৎ রায় সম্পর্কে অনীক দত্ত ভীষণ সেন্সেটিভ। ওঁর ফিল্ম মেকিংয়ের প্যাটার্ন দেখলেই সেটা বোঝা যায়…
আমি বলব, সত্যজিৎ রায়কে নিয়েই অনীক দত্তর বাস। কাজের সূত্রে ওঁর বাড়িতে গিয়ে বুঝলাম, সত্যজিৎ রায় বুঝি অনীকদার সঙ্গে থাকেন! ঘরের প্রতিটা ওয়ালে মাণিকবাবুর আঁকা। তাছাড়া ওঁর চিত্রনাট্য, কথা বলার ধরণ- সবেতেই মাণিকবাবুর একটা ছাপ রয়েছে।
কীভাবে এসেছিল 'অপরাজিত'র প্রস্তাব?
গতবছর মে-জুন মাস। বিধানসভা ভোট শেষ হওয়ার পর অনীকদা হঠাৎ একদিন ফোন করে বললেন- মেকআপ, ফিল্টার ছাড়া কিছু ছবি পাঠাতে। তারপর একটা চিত্রনাট্য দিয়ে আমাকে ভিডিও করে পাঠাতে বললেন। তখনও আমি জানি না সিনেমাটা সম্পর্কে। এবং অদ্ভূতভাবে গোটা ঘটনাটার মধ্যেই একটা আধ্যাত্মিক বিষয় ছিল। আমি ব্যক্তিগতভাবে ভীষণ ঈশ্বর বিশ্বাসী।
বাম মনোভাবাপন্ন হয়েও ঈশ্বর বিশ্বাসী?
হ্যাঁ। আমি প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতি করার সময়ও এই প্রশ্ন আমার কাছে এসেছে। আমি বস্তুবাদে বিশ্বাসী, ভাববাদে নই। যাই হোক, ফিরি সিনেমা প্রসঙ্গে। অনীকদার দেওয়া চিত্রনাট্যের অংশটাও আমি একটু ধরে ধরে শুট করে পাঠালাম। মানে, সিরিয়ালে যেভাবে আমাকে দেখা যায়, সেই ছক ভেঙে। তো সেটা দেখে অনীকদা বললেন- তুমি একটা লুক সেট দাও। 'অপরাজিত' বলে আমি একটা ছবি করছি, সেখানে যুবক সত্যজিৎ রায়ের ভূমিকায় তোমাকে চাইছি। আর অনীকদা এতটাই সৎ প্রথমেই বলে দিলেন যে, খুব সীমিত দৃশ্য থাকবে, কিন্তু তোমার ভাল লাগবে অভিনয় করে। আমাকে ভাবার সময়ও দিলেন। তো আমি জানিয়েছিলাম- নিশ্চয়ই করব। কিন্তু শর্ত একটাই- কোনও পারিশ্রমিক নেব না। কারণ, তখন ১-২ দিন শুট করার কথা ছিল। আমার মনে হল- এত বড় একটা কাজ হচ্ছে সেখানে আমারও কন্ট্রিবিউশন দরকার। এই দায়িত্বটা আমারও বর্তায়।
তো লুক সেটের দিন আমার টাইট শিডিউল ছিল। সকালে মেগা সিরিয়ালের কাজ, তারপর বিজ্ঞাপনের শুট- মানে চূড়ান্ত ব্যস্ততা আর কী! সেই কাজের মাঝেই আমি যাই। যখন ফটোশুট হচ্ছিল খেয়াল করলাম ফ্লোরের সবাই পুরো মন্ত্রমুগ্ধ। কিন্তু আমার এতটাই তাড়া ছিল যে, আমি আর মনিটরে গিয়ে লুক চেক করার সময় পাইনি। সেদিন রাতেই অনীকদা একটা ছবি পাঠিয়ে বলল- জাস্ট দেখো এটা। তো আমি পাল্টা ফোন করে বললাম- আমার লুক সেটের ছবিগুলো পাঠাও, দেখি একটু। ওমা, অপরপ্রান্ত থেকে আমায় বলা হল- আরে, এটা তো তুমি-ই। আমি তো হতবাক! সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রী নবনীতাকে (দাস) ডেকে দেখালাম। ওর প্রতিক্রিয়া ছিল- আরে, এটা তো সত্যজিৎবাবুর বিরল একটা ছবি। আমি বললাম- আরে না, না, এটা তো আমি। ও তো অবাক। এরপর অনীকদা রীতিমতো লড়াই করে প্রযোজককে বলে-কয়ে রাজি করালেন যে জিতু ছাড়া এই ছবি হবে না। পরে একদিন জানলাম, পুরো ছবিটাই আমাকে করতে হবে। আমি সৌভাগ্যবান যে সত্যজিৎ রায়ের চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছি।
'অপরাজিত'র শুট করতে গিয়ে কখনও ভয় হয়েছিল?
ভয় আমি খুব কম-ই পাই। আমার একটাই ভয় যে আমি যেন কখনও নিজের সততা থেকে সরে না দাঁড়াই। তবে কাজের জায়গায় কোনওদিনই ভয় পাইনি। যেহেতু স্পোর্টসম্যান, তাই জানি, এইধরণের চ্যালেঞ্জ যাবে-আসবে। শুধু একটা বিষয়ে খেয়াল রাখি যে, আমার ওপর যে বিশ্বাস দেখানো হয়েছে, সেটা যেন বিফলে না যায়। মন দিয়ে তাই কাজটা করে যাই।
রিলিজের আগেও নার্ভাস নন, তাই তো?
একেবারেই না। যা কাজ করার ছিল, আমি করে ফেলেছি। সেটা তো আর বদলানো যাবে না। তাই ভয় পেয়ে লাভ নেই।
মাণিকবাবুর ভূমিকায় আপনার লুক প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই শোরগোল পড়ে গেছে। কিন্তু আপনাকে এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটাও কথা বলতে দেখা যায়নি, কেন?
আমি আসলে খুব ইন্ট্রোভার্ট। এই তো দাঁত নিয়ে নবনীতা ফেসবুকে একটা পোস্ট করেছিল। আমার একটু মণোক্ষুণ্ণও হয় তাতে। কিন্তু যতই পেশাদার অভিনেত্রী হোক, ও তো আমার স্ত্রী, সেই জায়গা থেকেই লিখে ফেলেছিল আমার কষ্টটা বুঝতে পেরে। আসলে আমার দুটো দাঁত থেকে খুব রক্ত পড়ছে। আমি ২ দিন কোথাও বেরতেও পারিনি যন্ত্রণায়। এসব ভাঙিয়ে আমি প্রচার করতে নারাজ। আমার প্রশ্ন- এগুলোকেই যদি হাইলাইট করতে হবে, তাহলে আমি কাজটা কী করলাম? রাতজেগে এত পড়াশোনা। অনীকদার এত সাহায্য। টিমের এতগুলো মানুষ কষ্ট করে সিনেমাটা বানাল। অনীকদা, সোমনাথ কুণ্ডু (মেকাপ), উৎসব (অ্যাসোসিয়েট ডিরেক্টর) থেকে শুরু আমাদের আর্ট ডিরেক্টর প্রতিটা মানুষ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে কাজ করেছেন। সেট সাজাতে কত অ্যান্টিক জিনিস ব্যবহার করা হয়েছে, অবিশ্বাস্য! সেখানে একটা দাঁতের রক্ত নিয়ে হইচই আমার না-পসন্দ। আমার ওরকম ঠুনকো প্রচার চাই না।
একটা অদ্ভূত মিল পেলাম 'পথের পাঁচালি' শুট করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিকূলতায় পড়ে ২ বছরের জন্য আটকে গিয়েছিল মাণিকবাবু কাজ, আর 'অপরাজিত'র শুটের ক্ষেত্রেও অতিমারী বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেটা নিয়ে কখনও আলোচনা হয়েছে অনীক দত্তর সঙ্গে?
হ্যাঁ নিশ্চয়ই। 'পথের পাঁচালি'র সঙ্গে 'অপরাজিত'র মেকিংয়ের বহু অদ্ভূত মিল রয়েছে। সত্যজিৎ রায় ৩৫ বছর বয়সে 'পথের পাঁচালি' তৈরি করেছিলেন। আর আমিও ৩৫ বছর বয়সেই এই ছবিতে কাজ করলাম। ১৯২১ সালে উনি জন্মেছেন, ১৯৫৫ সালে ছবিটা রিলিজ করেছে। আমার ১৯৮৬ সালে জন্ম। আমি ২০২২ সালে দাঁড়িয়ে এই ছবি নিয়ে তোমার সঙ্গে কথা বলছি। 'অপরাজিত'র মেকিং ভিডিওতেও দেখা গিয়েছে বৃষ্টির জন্য কাশবন নষ্ট হয়ে আমাদের কীরকম সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছিল। অনীকদার তো মাথায় হাত! ঠিক যেমন 'পথের পাঁচালি'র শুটের সময়ে কাশবন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় মাণিকবাবুও সমস্যায় পড়েছিলেন।
কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন?
ওইসময়ে আমি নবনীতাকে ওর বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে একা ছিলাম কিছুদিন। একজন রান্না করে দিয়ে যেতেন শুধু। আর একটা ছেলে থাকত আমার সঙ্গে সবসময়ে। সে আমাকে বাইরে থেকে সমস্ত সাহায্য করেছে। পুরো সময়টা বাড়িতে কাটাতাম। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলো। ভোর ৪টেয় উঠে মেডিটেশন করতাম। গলা সাধতাম। কারণ, সত্যজিৎ রায় যেহেতু বাঙালি হয়েও ট্যাকাটো টোনে কথা বলতেন। অনেকটা উচ্চস্বরে ইংরেজি টানে। তো সেই বাচনভঙ্গী রপ্ত করার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। সত্যজিৎ রায়ের সাক্ষাৎকার আমার টিভিতে সারাদিন চলত। একটা সিনের জন্য ৩৩-৩৪টা সিগারেট খেয়েছি, তাও আবার ফিল্টার ছাড়া। যেহেতু সেসময়ে মাণিকবাবুও ফিল্টার ছাড়া সিগারেট-ই খেতেন। যদিও এসব নিয়ে বেশি আলোচনা আমি করতে চাই না।
ট্রেলারে মনে হল, আপনি কথা বলার ধরণ বদলেছেন। এই খুঁটিনাটি বিষয়গুলো কীভাবে রপ্ত করলেন?
কথায় কথায় অনীকদাকে ফোন করতাম। সেইসময়ে যিনি সত্যজিৎ রায়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, তার সঙ্গে কথা বলেছি। মাণিকবাবুর মতো পোশাক পরে ঘরে ঘুরতাম। মানে ওই চরিত্রটার মধ্যে বসবাস করার চেষ্টা করেছি। আমি যেহেতু থিয়েটারের ছেলে, তাই আমার কাছে এটা রকেট সায়েন্স বলে মনে হয়নি। আসলে, গাছ পুঁতে যত্ন নিলে সেই গাছ ফল দেবেই। তবে হ্যাঁ, অনীকদা আর আমি দুজনেই ফ্লোরে একটা আধ্যাত্মিক বিষয় লক্ষ্য করেছি। Illusion হতে পারে। কিছু দৃশ্যের শট দিতে গিয়ে গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছিল। মনে হয়েছিল, কেউ যেন আমাদের সাহায্য করছে। আরেকটা দৃশ্যের কথা বলব, একজন সিনিয়র সাংবাদিক, যাঁকে আমি যেমন সম্মান করি, আবার ভয়ও পাই তাঁর অগাধ জ্ঞান, শব্দচয়নের জন্য, যিনি সত্যজিৎ রায়ের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন, সেই তিনিই যখন আমার সঙ্গে শট দিচ্ছেন, আমি প্রথমটায় খুব চাপ খেয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু অনীকদা অ্যাকশন বলতেই কী যেন একটা ভর করল আমার ওপর। মনে আছে, সেই দৃশ্যের শুট হওয়ার পর ফ্লোরের সবাই হাততালি দিয়েছিল। শুটিংয়ের সময় আমার এহেন বহু অভিজ্ঞতা হয়েছে।
বিজয়া রায়ের 'আমাদের কথা' বইটা পড়েছিলাম 'পথের পাঁচালি' তৈরির নেপথ্যের গল্প জানার জন্য। সত্যজিৎ রায় কোথা থেকে সিনেমা বানানোর জন্য উদ্বুদ্ধ হলেন- সবই পড়াশোনা করে জানতে হয়েছে। আশা করি, মানুষ নিরাশ হবেন না।
শুট শেষ হল। রিলিজের সময়ও চলে এল। এখনও কি সেই চরিত্রের মধ্যেই রয়েছেন?
হ্যাঁ। আমার মধ্যে উনি রয়ে গিয়েছেন। শুট শেষ হওয়ার ৬ মাস বাদে আজও গলা সাধি। বেরনোর চেষ্টা করলেও বেরতে পারছি না। মনও চাইছে না। কোথাও একটা কষ্ট হচ্ছে। এই তো সিনেমা রিলিজ হবে। পুজোর আসার আগে যেমন আনন্দ হয়, তেমনই লাগছে। আমার খালি মনে হচ্ছে, ১৩ তারিখ একটা পুজো হবে। ৬ মাস ধরে টিজার-ট্রেলারের অপেক্ষা করছিলাম। একেকটা করে যখন এগোচ্ছে, আমি আবেগঘন হয়ে পড়ছি।
আরেকটা বিষয়, 'অপরাজিত'তে যিনি ইন্দিরা ঠাকুরণের চরিত্রটি করেছেন, তিনি একজন পুরুষ। এর নেপথ্যের গল্পটা শুনব…
শুটে গিয়ে একদিন দেখি 'চুনীবালা দেবী' আসছেন। আমি তো তাঁকে মহিলাই ভেবেছিলাম প্রথমে। তারপর একদিন মেকাপ রুমে রহস্য ফাঁস হল। উনি পোশাক বদলাতে যাচ্ছেন, তখন আমি বেরব। আমাকে বাঁধা দিয়ে সোমনাথদা বললেন, আরে তোমরা বাইরে যাচ্ছ কেন? উনি তো একজন পুরুষ।
স্ত্রী নবনীতা দাস কি প্রকৃতপক্ষেই বিজয়া রায়ের মতো পাশে থেকেছেন এই গোটা সময়টা?
প্রথম ৪দিনের শুটে আমার প্রস্তুতি সেভাবে কিছুই ছিল না। দার্জিলিং থেকে ফিরে সোজা শুটে গিয়েছি। নবনীতা রাত ২টো, ৩টে অবধি জেগে আমাকে কিউ দিত। রাতে বসে বসে আমরা দুজনে কফি খেতাম আর চিত্রনাট্য নিয়ে আলোচনা করতাম। আমার যত না বেশি চিত্রনাট্য মুখস্থ, ওর তার থেকেও বেশি সংলাপ মুখস্থ ছিল।
সত্যজিৎ রায়ের মতো কিংবদন্তীর চরিত্রে অভিনয় করে ফেলেছেন, এরপর টলিউডে মশলা ছবির প্রস্তাব এলে করবেন?
আমি যখন রাগে-অনুরাগে সিরিয়াল করেছি, তখনও কমবয়সি হওয়া সত্ত্বেও একজন মাঝবয়সি ব্যক্তির চরিত্রে অভিনয় করতে হয়েছে। যার তিনটে বাচ্চা রয়েছে। ম্যাচিওর চরিত্র আমার করতে ভাল লাগে। তাছাড়া আমার লুকটাও তো সেরকম (হেসে)। তবে কী ধরণের ছবি করব, তার সবটাই নির্ভর করছে চিত্রনাট্যের ওপর। স্ক্রিপ্ট পছন্দ হলে নিশ্চয়ই করব।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন