আর্জেন্টিনার লেখিকা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হৃদ্যতার কাহিনি এবার সেলুলয়েডে। ছবির নাম- 'থিঙ্কিং অফ হিম' (Thinking of Him)। পরিচালকও সেদেশেরই- পাবলো সিজার। তবে চমক রয়েছে কাস্টিংয়ে। রবি ঠাকুরের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যাবে ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আর লেখিকা ওকাম্পোর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আর্জেন্টিনার অভিনেত্রী এলিওনোরো ওয়েক্সলার। পাশাপাশি বিশেষ ভূমিকায় রয়েছেন আরেক বাঙালি তারকা রাইমা সেনও।
Advertisment
আগামী ৬মে রিলিজ করছে 'থিঙ্কিং অফ হিম'। পরিচালক পাবলো জানালেন, নব্বইয়ের দশকেই তাঁর ভারতের সঙ্গে পরিচয়। তবে পুরোপুরি এখনও চেনা হয়ে ওঠেনি। কারণ, এই বিশাল দেশের সংস্কৃতি, রীতিনীতি, এখানকার মানুষদের হৃদ্যতা এত সহজে বোঝা যায় না। 'থিঙ্কিং অফ হিম'-এর শুটিং করতে গিয়েই ভারতবাসীর মনকে আরও কাছ থেকে বোঝার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। শেষে আর্জেন্টেনীয় পরিচালক পাবলো বললেন, "ভালবাসি এই দেশকে।" আর্জেন্টিনার নির্মাতারা এই সিনেমা তৈরির নেপথ্যে থাকলেও যৌথভাবে প্রযোজনা করেছেন ভারতীয় পরিচালক সূর্য কুমার।
গল্পটা কীরকম? ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ যখন জলপথে পেরুর উদ্দেশে যাত্রা করছিলেন, তখন হঠাৎই জাহাজে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেইসময়ে জাহাজ ছিল আর্জেন্টিনার সীমান্তে। রবি ঠাকুরের অসুস্থ হওয়ার খবর পৌঁছয় তাঁর অন্ধ-অনুরাগী ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর কানে। সেই দেশের রাজধানী বুয়েনস এয়ারেসের অভিজাত-সম্ভ্রান্ত এক পরিবারের মেয়ে ওকাম্পো। 'গীতাঞ্জলী'র ফরাসি অনুবাদ পড়ে এতটাই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন যে, রবি ঠাকুরের ভক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। নিজেও লেখিকা ছিলেন অবশ্য।
এরপর সেই ওকাম্পোর তৎপরতাতেই রবীন্দ্রনাথকে তাঁর বাড়িতে আনা হয়। সেবা-শুশ্রুষা করা হয়। ষাটোর্ধ্ব রবি ঠাকুরকে নিজে হাতে সেবা করে সুস্থ করে তোলেন ওকাম্পো। মাসখানেক তাঁর বাড়িতে ছিলেন তিনি। এরপর ১৯২৫ সালের জানুয়ারি মাসে আর্জেন্টিনা থেকে চলে যান কবিগুরু। ঠিক এই মাসখানেকের পর্বেই নাকি রবি ঠাকুরের সঙ্গে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর এক গভীর হৃদ্যতার সৃষ্টি হয়। অনেকে এই সম্পর্ককে প্রেম বলে আখ্যা দিয়েছিলেন, আবার অনেকে বলেন ওকাম্পো-রবীন্দ্রনাথ শুধুই বন্ধু ছিলেন। আর্জেন্টিনার পরিচালক পাবলো সিজারের ফ্রেমে সেই কাহিনিই এবার ফুটে উঠবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন