চোখে কাজল, আর নখে নেইলপলিশ পড়লেই কি লিঙ্গ পরিবর্তনের বিষয়টিকে পরিস্ফুট করা যায়? অভিনেতা আয়ুষ্মান খুরানার ছবি দেখে এমনটাই জিজ্ঞাস্য তৃতীয় লিঙ্গের সকলের। যদিও তাদের সঙ্গে আওয়াজ ওঠাতে ভোলেননি দেশের অন্যান্য নাগরিকরাও। পরবর্তীতে তৃতীয় লিঙ্গের একটি চরিত্রে অভিনয় করছেন আয়ুষ্মান, তার আগেই এমন এক চাঞ্চল্যকর বিষয়ে মুখ খুলেই দারুণ ফেঁসেছেন।
Advertisment
অঙ্গে নেভি ব্লু, সিলভার কোটেড সুট, চোখে স্মাজ করা কাজল এবং নখে কালো নেইপালিশ পড়ে একটি ছবি নিজেই ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটারে আপলোড করেন আয়ুষ্মান। তারপর থেকেই তার ওপর বেজায় চটেছেন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের সঙ্গেই অন্যান্যরাও। শুধুই ছবি নয়, ক্যাপশনের জেন্ডার ফ্লুইড অথবা লিঙ্গ তরলীকরণ অথবা অভিব্যাক্তি পরিবর্তনের এই বিষয়টি দেখেই নিজেদের রাগ আর চেপে রাখতে পারেননি এলজিবিটি সম্প্রদায়ের মানুষজন। যদিও টুইটারের পোস্টটি পড়ে আয়ুষ্মান ডিলিট করে দেন, তবে ইনস্টাগ্রামের পোস্টটি আগের মতই বহাল রয়েছে।
পোস্টটি নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই, তার এমন মানসিকতাকে নিম্ন-পরিচয় বলেই বেশিরভাগ মানুষ অভিহিত করেন। ক্ষোভে ফেটে পরেই এক ব্যক্তির মন্তব্য, “আপনি লিঙ্গ অভিব্যক্তির বাহক নন, সমকামী পুরুষদের চরিত্রে অভিনয় করতে গেলেই শুধু নেলপালিশ পড়তে হবে, কিংবা সাজতে হবে এমন কোনও কথা নেই। সমকামী পুরুষদের ওপর নির্ভর করা চলচ্চিত্রে অভিনয় মানেই জেন্ডার ফ্লুইড? আপনার আরও শিক্ষার প্রয়োজন আছে। ইনস্টাগ্রামে পোস্টের ভিত্তিতে ক্ষোভ কম নেই, কেউ বলেন 'ইনি কিনা এলজিবিটি সিনেমার প্রতিনিধি'? আবার কারওর বক্তব্য 'এমন অশিক্ষিতের মতন কথা না বললেই পারতেন '।
আসলেই জেন্ডার ফ্লুইডের ব্যাখ্যা বলছে, জেন্ডার ফ্লুইড এ অন্তর্ভুক্ত মানুষজন কোনদিন একটি লিঙ্গে থাকতে পারেন না। তারা ক্রমাগত লিঙ্গ পরিবর্তনের ধারণা রাখেন। আজকে পুরুষ তো কালকেই নারী - ভিন্ন সময় ভিন্ন মানসিকতা। তারা একাধিক লিঙ্গ অভিজ্ঞতার মধ্যে দিয়ে যায়, এর কোনও নির্দিষ্ট পর্যায় নেই। আয়ুষ্মান এর পোস্টটিকে বিকৃত বলে ধারণা করেছেন আর্টিস্ট পত্রুনি শাস্ত্রী। তিনি অনুরোধের সুরেই বলেন, এটি কোনও পোশাক বদলানোর মত সহজ বিষয় নয়। ভিন্ন পোশাকে পরিচিতি বদলে যাওয়ার মত কিছুই নয় এটি। প্রসাধনী কখনই জেন্ডার ফ্লুইডকে বাহবা দিতে পারে না। এই সমস্ত বক্তব্য সেইসকল মানুষের প্রতি অপমানজনক এবং মানসিক চাপের সৃষ্টি করে। তাই এমন কিছু কথাবার্তা বলার আগে ভাবনা চিন্তা করা উচিত, নিজেকে সঠিক ভাবনায় শিক্ষিত করা খুবই প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন