বাংলাদেশের কোথায় আন্দোলনে মারা গিয়েছেন ৩০০ - এরও বেশি মানুষ। শুধু যে সাধারণ মানুষ এমনটা নয়। সোমবার প্রাণ গিয়েছে বাংলাদেশী অভিনেতা এবং প্রযোজক শান্ত খানের। শান্ত এপার বাংলার অনেকের সাথে কাজ করেছেন তার মধ্যে, শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় , কৌশানী মুখোপাধ্যায় এরা অন্যতম।
শুধু শান্ত নিজে নয়, তার বাবা সেলিম খান, যিনি শাপলা এন্টারটেইনমেন্ট লিমিটেডের কর্নধারও ছিলেন, গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন। বাংলাদেশের পুলিশ সূত্রে খবর তাদের রক্তাক্ত মরদেহ রাস্তাতেই পড়েছিল। অভিনেতার প্রয়াণে স্তম্ভিত এপার বাংলার অনেকেই। তারা যেন ভাবতেই পারছেন না যেরকম নির্মমভাবে কারোর হত্যা করা যেতে পারে।
অভিনেতা রজতাভ দত্ত জানিয়েছেন, "খবরটি শুনে তো আমার মন ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। সে এবং তার বাবা দুজনেই যে নির্মমভাবে মারা গিয়েছেন, তাদের হৃদয় ব্যথিত। দুজনের মৃত্যুর আসল কারণ কি আমরা হয়তো ঠিক করে জানিনা, কিংবা পার্শ্ববর্তী দেশে কি ঘটে চলেছে সেটাও আমাদের কাছে সম্পূর্ণ পরিষ্কার নয়। আমরা যারা শিল্পী, তারা সব সময় শান্তির জন্য আহ্বান জানাই। এই ঘটনায় আমি মর্মাহত।" ২০২২ সালে রজতাভ শান্তর সঙ্গে বিক্ষোভ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তিনি আরো জানিয়েছেন, শান্ত যেরকম সম্মান দিতেন তাকে সেটে, আজ এই খবর মেনে নিতে পারছেন না।
রজতাভ একা নয়, কৌশানী মুখোপাধ্যায় নিজেও তার সঙ্গে একটি ছবিতে কাজ করেছেন। ছবির নাম ছিল 'পিয়া রে'। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, "সোমবার রাতেই ভয়ংকর দুঃসংবাদে মনটা ছারখার। তখন থেকেই যেন মেনে নিতে পারছি না।" অভিনেত্রীর কথায়, যে চূড়ান্ত আতিথেয়তা তিনি শান্তর কাছ থেকে পেয়েছিলেন সেটি ভোলার নয়। চাঁদপুর এবং ঢাকায় শুটিং চলাকালীন, এক মুহূর্তের জন্যও কৌশানির মনে হয়নি তিনি অন্য জায়গায় রয়েছেন। মন খারাপের সুরেই বললেন, "আমি যেহেতু এই ইন্ডাস্ট্রিতে একটু সিনিয়র সেই কারণে আমার প্রতি যথেষ্ট সম্মান বজায় রেখেছিল। এও বলেছিল, ইন্ডাস্ট্রিতে কিছু ইমপ্যাক্ট বজায় রাখার চেষ্টা করছে সে।"
অন্যদিকে পরিচালক রাজ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, "কোন মৃত্যুই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সে প্রতিবাদী ছাত্র হোক, কিংবা পুলিশ কিংবা কোন প্রযোজক অথবা রাজনীতিবিদ, এই মৃত্যুগুলো ভয়ংকর। আমাদের সকলের বাংলাদেশে কাজ করার এক সুন্দর অনুভূতি এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে।"
উল্লেখ্য, জুলাই মাসের শেষ থেকেই চলছে ছাত্র কোটা বিরোধী এই আন্দোলন। কিন্তু শেষে সেটি রাজনৈতিক আন্দোলনের পরিণত হল। সোমবার দুপুর দুটো নাগাদ বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেন। তারপরেই বিজয় উৎসবে শামিল হন গোটা দেশবাসী। কিন্তু সন্ধ্যেবেলার পর চিত্র ঠিক যেন পাল্টে গেল। দেশের সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার মন্দিরে হানা এবং ভাঙচুর চালিয়েই গোটা পরিস্থিতিকে আরও ব্যতিব্যস্ত করে তুললেন সে দেশের অনেকেই।
যদিও বাংলাদেশ সংবাদ মাধ্যমে এমনটাই লেখা হয়েছিল, শান্ত এবং তার বাবার সেলিম খানের সঙ্গে রাজনীতির ও গভীর যোগ ছিল। এর আগেও নানা কেসে তাদের নাম জড়িয়েছে।