Taslima Nasrin on Noble Man: গতকাল থেকেই বাংলাদেশের গায়ক নোবেলকে নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। তাঁর গুণকীর্তির শেষ নেই। বরং বারবার তাঁর কাণ্ডকীর্তির কথা প্রকাশ্যে এসেছে। শুধু তাই নয়, বারবার নারী সংক্রান্ত অশান্তিতে তাঁর নাম জড়িয়েছে। এবং এই গায়ক রিহ্যাব থেকে মানসিক হাসপাতাল কিছুই বাদ দেননি। সর্বত্রই নিজের কার্যকলাপের জন্য তাঁকে সেখানে যেতে হয়েছে।
গতকাল বাংলাদেশ মারফত খবর তাঁর বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং ধর্ষণের কেস করেছেন এক নারী। নোবেলকে রাতের বেলা গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারপর থেকে ভারতের সারেগামাপা খ্যাত এই বাংলাদেশী শিল্পীকে নিয়ে নানা আলোচনা। ৪টে বিয়ে করেছেন তিনি। অদ্ভুত আচরণের জন্য জেলে গিয়েছেন। আর এবার তাঁকে নিয়েই সমাজ আমধ্যমে সরব তসলিমা নাসরিন। তিনি এমনিও বেশ ঠোঁটকাটা। সবকিছু নিয়েই লেখেন। তসলিমা নোবেল প্রসঙ্গে লিখছেন...
"নোবেলকে প্রথম দেখি সারেগামা অনুষ্ঠানে। তাঁকে নিয়ে সারেগামার বিচারক- গায়কদের অতি উচ্ছ্বাস দেখে অবাক হয়েছিলাম। নোবেল কি এত ভাল গায়? আমার ওকে মনে হতো বাংলাদেশের মিডিওকার গায়ক। এই গায়ক নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠিত গায়কদের অতি উচ্ছ্বাস আমার কাছে আদিখ্যেতা বা মেকি বলে মনে হতো। নোবেল জীবনে কম সম্মান পাননি। কিন্তু এই সম্মানের ন্যূনতম মর্যাদা তিনি রাখেননি।"
এরপর, তিনি এই গায়কের নারীবিদ্বেষ এবং মাদক আসক্তি প্রসঙ্গে কথা বলেন। নোবেল তাঁর কর্মফল ভুগছে বলেই তাঁর দাবি। তিনি বলছেন.. "নোবেল তাঁর জ -ঘন্য নারীবিদ্বেষ এবং মাদকাসক্তি থেকে নিজেকে মুক্ত করার চেষ্টা করেননি। অনেকে বলবে মাদক সেবনের কারণে তিনি নারী নির্যাতন করেন। আমি তা মনে করি না। মাদক সেবন যদি নারী নির্যাতনের কারণ হতো, তাহলে সব মাদক সেবকই নারীনির্যাতক হতো কিন্তু সব মাদক সেবকই নারী -নি র্যাতক নয়, সব নারী নির্যাতকই মাদক সেবক নয়। মাদক সেবনের সঙ্গে নারী নির্যাতনের সম্পর্ক নেই। নারীনির্যাতকরা ঠান্ডা মাথায় বুঝে শুনেই নারী নির্যাতন করে। ইডেন কলেজের এক ছাত্রীকে সাত মাস ঘরে আটকে রেখে ধর্ষণ করেছে নোবেল। এর পেছনে কাজ করেছে নারী বিদ্বেষ। নারী বিদ্বেষ মাদকের চেয়েও লক্ষ গুণ ভয়ঙ্কর।নারী বিদ্বেষ সমাজ ধ্বংস করে দিতে পারে। মাদকাসক্তি থেকে মানুষকে মুক্ত করা সহজ, কিন্তু নারী বিদ্বেষ থেকে মুক্ত করা সহজ নয়। কারণ মাদক সেবনকে লোকে খারাপ চোখে দেখে, অজস্র রিহ্যাব আছে মাদকাসক্তি থেকে মানুষকে মুক্ত করার জন্য, কিন্তু কোনও রিহ্যাব নেই মানুষকে নারী বিদ্বেষ থেকে মুক্ত করার জন্য। নারী বিদ্বেষকে লোকে খারাপ চোখে দেখে না, বরং একে খুব স্বাভাবিক বলে মনে করে। এখনও অধিকাংশ মানুষই স্ত্রী-ধর্ষণকে ধর্ষণ বলে মনে করে না। এখনও নারীকে ঘরবন্দি করা, বোরখাবন্দি করা, এখনও নারীকে শিক্ষিত এবং স্বাবলম্বী হতে বাধা দেওয়াকে স্বাভাবিক বলে মনে করা হয়। এখনও নারীর স্বাধীনতাকে খর্ব করা, নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘন করাকে স্বাভাবিক বলে মনে করা হয়।"