Bangladeshi Actress Mithila: মেয়েদের অর্থনৈতিকভাবে কতটা সফল হওয়ার প্রয়োজন আছে - সে কথা বলে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছিলেন মিথিলা। হঠাৎ করে জীবন পাল্টে গেছিল তার। যাদের সঙ্গে থাকতেন সেই মানুষগুলো অজানা হয়ে গিয়েছিল। যে শ্বশুরবাড়িতে একসময় তিনি হক জমিয়ে থাকতেন, সে জায়গাটা তারা থাকবে না এমনটা বিশ্বাসই করতে পারেননি। খুব অল্প বয়সে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন তাহাসানের সঙ্গে। তারপর থেকে জীবনটা একদম অন্যরকম ছিল তার। অল্প বয়সে মা ও হয়েছিলেন তিনি।
আইনত বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়ার আগে, বেশ কিছুদিন আলাদা ছিলেন। মিথিলা মনে মনে ভেবেছিলেন হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে। আলাদা থাকতে থাকতে হয়তো দুজন দুজনের মায়ায় আবার জড়িয়ে যাবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল। আলাদা থাকাই যেন বিচ্ছেদে পা দেয়। দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ঠিক তো হলোই না বরং দুজন দুজনের থেকে অনেকটাই দূরে চলে গেলেন। সেই বিচ্ছেদের পরবর্তী মুহূর্তে মিথিলাকে যা যা সহ্য করতে হয়েছিল অভিনেত্রী। অভিনেত্রীর কথায়...
"২০১৫ সালে আমরা সেপারিশনে গিয়েছিলাম। তখন আমি অপেক্ষা করতাম ভেবেছিলাম হয়তো সব ঠিক হয়ে যাবে একদিন। কিন্তু দু বছর পেরোনোর পর ২০১৭ সালে দাঁড়িয়ে আমি বুঝতে পারলাম যে সম্পর্কটা সত্যি হয় তোর কাজ করবে না। তখন নিজেও খুব অল্প বয়সে মা হিসেবে খুব অল্প বয়স ছিল আমার। কোন একটা ভালো-মন্দ বিচার করব বা সিদ্ধান্তে আসব এমনটা আমার শক্তিই ছিল না। মানসিক অবস্থা ভালো ছিল না আমার।" শুধুই কি মানসিক বিবাদ? অভিনেত্রী আর্থিক ভাবেও যে সমস্যার মধ্য দিয়ে গিয়েছিলেন, সে কথাই প্রকাশ্যে বললেন। শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন তিনি। এক সন্তানের মা হিসেবে বেশ কিছু স্বভাব এবং অভ্যেস ছিল তার। মিথিলাকে বলতে শোনা গেল...
"২৩ বছর বয়স থেকে আমি আমার জীবনটাকে অন্যরকম ভাবে দেখে এসেছিলাম। হঠাৎ করে সেটা পাল্টে গেল। আমি শ্বশুর বাড়িতে থাকতাম। তারপর একটা সময় জানলাম এই জায়গাটা আমার ভবিষ্যৎ নয়। তখন চাকরি করতাম, বছরে এক দুটো ছবি করেছি, ড্রামা করেছি। কিন্তু আমার কাছে একটাও গাড়ি ছিলনা। আমার এবং আমার সন্তানের অভ্যাস ছিল গাড়িতে চড়ার।" তিনি আরো বললেন, "মেয়েদের নিজেদের কোন আসল জায়গা থাকে না। নয় শ্বশুরবাড়ী নয় বাপের বাড়ি। কিন্তু এখন এত বছর পর আমার নিজের একটা জায়গা আছে। এর কৃতিত্ব কিন্তু সম্পূর্ণ আমার। যেটুকু করতে পেরেছি সেটি আমার আর্থিক যোগ্যতার কারণে করতে পেরেছি। মেয়েদের জন্য সবথেকে আগে দরকার অর্থনৈতিক স্বাধীনতা। এই স্বাধীনতা না থাকলে মেয়েরা অনেক রকম কঠিন সিদ্ধান্তই দিতে পারেনা। মনে আছে, আমার মা ছোটবেলা থেকে বলতেন যাই করো না কেন নিজের পায়ে দাঁড়াবে।"
এখানেই শেষ না। অভিনেত্রী জানান যে বিয়ের পরও তিনি তার পড়াশোনা বহাল রেখেছিলেন। নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন চাকরি করেছেন পিএইচডি কমপ্লিট করার চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, তখন আমার আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল না যেটা এখন আছে। কি করে মেয়েকে মানুষ করবো সেটাই আমার পক্ষে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। প্রসঙ্গ ২০১৭ সালে, তাহসান ও মিথিলা বিচ্ছেদের কথা জানান। তারপরে মিথিলা অবশ্যই এপার বাংলার পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে বিয়ে করেছিলেন।