সুরের আকাশে আজ কালোমেঘ। চব্বিশ ঘণ্টা পেরতে না পেরতেই ফের নক্ষত্রপতন। মঙ্গলবার সন্ধেয় না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। আর বাংলার সঙ্গীতজগতে মাতৃবিয়োগের ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন আরেক বঙ্গসন্তান, যিনি ডিস্কো মিউজিকে কাঁপন ধরিয়েছেন বলিউডের মঞ্চে, বাপ্পি লাহিড়ী। এহেন জোড়া শোক মেনে নিতে পারছে না সঙ্গীতদুনিয়া। শোকের ছায়া সঙ্গীত মহলে।
"হে ভগবান! কী করে হল বুঝতে পারি না। 'রাম্মা হো', 'কোই ইহা নাচে নাচে..', ওর সুরে গাওয়া কত গান আমার হিট হয়েছে। আমার আর বাপ্পিদার জুটিটা ভেঙে গেল। বাপ্পিদা ৬ মাস আগেই জিজ্ঞেস করেছিল, ১-২টো গান আছে, চলো করি। আমি জানি না কী বলব.. খুব বিধ্বস্ত লাগছে। আমার যে কোনও অনুষ্ঠান ওঁর গান ছাড়া অসম্পূর্ণ ছিল…" বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়লেন উষা উত্থুপ।
স্মৃতিচারণা করে আরতী মুখোপাধ্যায় বললেন, "তখন তোমার একুশ বছর গানটা গাই ওঁর সুরে। শিক্ষা, মনোকামনা, প্রতিমা- বাপির সুরে বহু হিন্দি ছবিতে গেয়েছি। খুব ভাল সুর করতেন। ওই সময়ে এরকম একটা হিট গান কম শুনেছি। ঈশ্বরের পরম আশীর্বাদ ছিল বাপ্পির ওপর। সুন্দর ব্যবহার ছিল। কখনও উঁচু গলায় কথা বলেননি।"
বিশাল দাদলানি বললেন, "জাস্ট শুনলাম বাপ্পিদার খবরটা। আমি হতভম্ব। উনি চিরকাল কিংবদন্তী হয়েই থেকে যাবেন আমাদের মধ্যে। খুব ভাল বন্ধু ছিলেন আমার। নিজের সুরের বাইরে প্রথমবার উনি আমার আর শেখরের সঙ্গে কাজ করেছিলেন।"
জনপ্রিয় তবলাশিল্পী বিক্রম ঘোষ বললেন, "আমি ভাবতে পারছি না। কাল সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, আর আজ বাপ্পি লাহিড়ি। বাপ্পিদার তো বয়সও হয়নি সেভাবে। খুব বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। উনি অনেক কিছু শিখিয়েছেন।"
শিল্পী জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, "ভারতবর্ষের সঙ্গীতের মহান তারকাকে চলে যেতে হল। যে মানুষটার মনেপ্রাণে বাঙালি। দেশের খ্যাতনামা ডিস্কো সং-কে কত ভালভাবে প্রেজেন্ট করেছেন। কিন্তু বাঙালিয়ানা কখনও ভুলে যাননি। আমাকে খুব স্নেহ করতেন। বলতেন, জিৎ গানের অন্তরা, ওটার মুখরাটা খুব ভাল হয়েছে, কী করে বানালি। কালকে সন্ধ্যাদি, আর আজ বাপ্পিদা, পিতৃস্থানীয় মানুষ। সঙ্গীত জগতের অনেক বড় ক্ষতি হল। আমি বাপ্পিদাকে কভি আলবিদা না কহেনা…"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন