চলে গেলেন অভিনেতা সন্তু মুখোপাধ্যায়। বুধবার ১১ মার্চ কলকাতায় নিজের বাড়িতে সন্ধ্যে ৭:৩০ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরেই দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছিলেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা। কিছুদিন আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
রাতেই তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে কলকাতার কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। তাঁর দুই কন্যা স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ও অজপা মুখোপাধ্যায়, দুজনেই প্রতিষ্ঠিত বাংলা ছবির জগতে। স্ত্রী গোপা মুখোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছেন কয়েক বছর আগে। বাংলা ছবির জগতের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে মুখোপাধ্যায় পরিবার।
তাঁর ছোট ভাই সুমন্ত মুখোপাধ্যায়ের পাশাপাশি প্রয়াত সন্তু মুখোপাধ্যায়ও বড়পর্দার পাশাপাশি নিয়মিত কাজ করে গিয়েছেন ছোটপর্দায়। সাম্প্রতিক সময়ের বাংলা টেলিভিশনের বহু জনপ্রিয় ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় যেমন দর্শককে মুগ্ধ করে রেখেছিল, তেমনই বর্ষীয়ান এই অভিনেতার সান্নিধ্য পেয়ে সমৃদ্ধ হয়েছেন নতুন প্রজন্মের অভিনেতা অভিনেত্রীরাও।
সাঁঝবাতি ছবির একটি দৃশ্যে দেব ও আনন্দ চৌধুরীর সঙ্গে প্রয়াত অভিনেতা সন্তু মুখোপাধ্যায়। ছবি সৌজন্য: আনন্দ
বুধবার রাত থেকেই তাঁর প্রতি শোকজ্ঞাপন করছেন অভিনেতারা। স্টার জলসা-র জনপ্রিয় ধারাবাহিক মোহর-এ অভিনয় করছিলেন প্রয়াত অভিনেতা। আর তাঁর শেষ মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলা ছবি হল সাঁঝবাতি। বিগত কয়েক বছরে তাঁর পেশাগত জীবনের অনেকটাই কেটেছে ম্যাজিক মোমেন্টস প্রযোজনা সংস্থার সঙ্গে। ইষ্টিকুটুম, জলনুপূর, ইচ্ছেনদী, কুসুমদোলা, অন্দরমহল, ফাগুন বউ থেকে সাম্প্রতিক মোহর-- লীনা গঙ্গোপাধ্যায়-শৈবাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ওই সংস্থার প্রায় সব ধারাবাহিকেই দর্শক তাঁকে দেখেছেন।
১৯৭৫ সালে তাঁর পর্দার অভিনয় শুরু। পর্দার অভিনয়ের পাশাপাশি নিয়মিত থিয়েটার করেছেন। আশি ও নব্বই দশকে সন্তু মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠের রবীন্দ্রসঙ্গীত ছিল শ্রোতাদের অত্যন্ত প্রিয়। পারফরমিং আর্টসের প্রতি অদম্য টান ছিল তাঁর ছোটবেলা থেকেই। গোপাল ভট্টাচার্যের কাছে এক সময় নাচও শিখেছিলেন তিনি।
দুরারোগ্য ক্যানসার শরীরে বাসা বাঁধলেও কখনও রোগের কাছে নতি স্বীকার করেননি। নিয়মিত অভিনয় করে গিয়েছেন। কিছুদিন আগেই, গত ১৭ জানুয়ারি পালিত হয়েছে তাঁর ৬৯তম জন্মদিন। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ বাংলা বিনোদন জগৎ।