২০ মার্চ ভোরে দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের ৪ অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তার আগের দিন থেকেই সোশাল মিডিয়ায় বহু মানুষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যেন এবারেও শেষ মুহূর্তে ফাঁসির আদেশ প্রত্যাহার করা না হয়। কিন্তু পুনরায় প্রাণভিক্ষার আর্জি মঞ্জুর করা হয়নি। এই প্রসঙ্গে আসামী পক্ষের এক আইনজীবী সংবাদমাধ্যমের সামনে ধর্ষিতার রাত সাড়ে বারোটায় বাড়ির বাইরে থাকা নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেই মন্তব্য এবং প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠেন নেটিজেনরা।
বাংলা বিনোদন জগতের অনেকেই মনেপ্রাণে ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, এমনটা ঘোষণা হওয়ার পরে, অনেকেই এমন কথা লিখেছেন যে এবার ধর্ষিতার আত্মা শান্তি পাবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কেও জানিয়েছেন অনেকে তাঁদের প্রতিক্রিয়া।
আরও পড়ুন: রুপোলী পর্দায় পিকে! এমনটাও ঘটেছিল বটে
পাশাপাশি ধর্ষিতার মা-কে নিয়ে আইনজীবীর মন্তব্য এবং ধর্ষিতার প্রতি কটাক্ষ নিয়েও সরব হয়েছেন বাংলা বিনোদন জগতের বহু ব্যক্তিত্ব। অভিনেতা রাজদীপ গুপ্ত এই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, ''ওদের ফাঁসিটা অনেক আগেই হওয়া দরকার ছিল... কিন্তু জাস্টিস সার্ভড ফাইনালি, যদিও অনেকটা দেরি করে। কিন্তু আইনজীবী এপি সিংয়ের মতো লোকের ব্যাপারে সত্যিই কিছু বলার নেই। ওঁর একটা ভিডিও দেখলাম আজ সকালে যেখানে উনি ভিক্টিমের চরিত্র নিয়ে কথা বলছেন। মানুষের চিন্তাধারা বদলানো খুব দরকার, কিন্তু সেটা হচ্ছে না।''
'ত্রিনয়নী'-নায়িকা, অভিনেত্রী শ্রুতি দাস দীর্ঘদিন ধরেই এই গণধর্ষণ কাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া সমস্ত খবরাখবর রেখেছেন। যখন বার বার ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডের তারিখ পিছিয়ে গিয়েছে, তখন সেই নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি। ২০ মার্চ সকালে ধর্ষিতদের শাস্তি হয়েছে জেনেই নীচের এই ছবিটি পোস্ট করেছিলেন শ্রুতি।
ওই মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবীর মন্তব্যে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ অভিনেত্রী। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন তাঁর প্রতিক্রিয়া--
''আমি মফসসলে বড় হয়েছি। তবু আমার বাবা-মা আমাকে এতটাই স্বাধীনতা দিয়ে বড় করেছে... যখন একটু বড় হয়ে গেছি, উচ্চমাধ্যমিক পড়ছি, তখন অনেক সময় রাত দশটা-এগারোটায় বন্ধুর বাড়ির গেট টুগেদার থেকে বাড়ি ঢুকেছি। ছেলে বন্ধুর দল এসে ছেড়ে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমার বাবা-মা কোনওদিন কিছু বলেনি। একবারও জিজ্ঞাসা করেনি কোথা থেকে এলি। সেই বিশ্বাসটা ছিল। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বাবা-মায়ের সম্পর্কটা এমনই বন্ধুর মতো হওয়া উচিত। সেজন্যই বাবা-মাকে লুকিয়ে কোনওদিন কিছু করতে হয়নি। এমন কিছুই করিনি যা অপরাধের তালিকায় পড়ে। আমার মনে হয়েছে, ওই ভদ্রলোক... ভদ্রলোক বলতেও আমার রুচিতে বাধছে'', শ্রুতি বলেন, ''ওই লোকটি বলে সম্বোধন করছি। হয়তো তার কোনও সন্তান নেই। আর যদি তার সন্তান থাকেও, আমি তার সন্তানের বয়সী হয়েও তার পিতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছি। একটা বাচ্চার সঙ্গে বাবা-মায়ের সম্পর্ক কেমন হয়, সেটা ওই লোকটি জানে না। তাই হয়তো এত বড় একটা স্টেটমেন্ট দিতে পেরেছে জনসমক্ষে। আমার মনে হয়, এই মন্তব্যের জন্য ওঁর বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এরকম লোক যদি আইনজীবী হয়, তবে আমার মতো মেয়েরা তো অসুরক্ষিত, আই মাস্ট সে।''
প্রায় একই সুর শোনা গেল অভিনেতা-পরিচালক সৌরভ চক্রবর্তীর বক্তব্যে। তিনিও আইনজীবীর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এই বক্তব্য যে আইনজীবীসুলভ নয়, সেকথাও বলেছেন সৌরভ। তিনি বলেন, ''এই কথাটা শোনার পরে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না যে উনি মানুষ হিসেবে ঠিক আছেন কি না। ওঁর বক্তব্য একেবারেই আইনজীবীসুলভ নয়। এটা তো যে কোনও একটা পেশা নয়। এই পেশার দায়িত্ব বিরাট। হেলাফেলাতেও হয়তো একটা সিনেমা বানানো যায় কিন্তু এই পেশায় কোনও গাফিলতি চলে না। একজন আইনজীবী হয়ে যদি তিনি এমন কথা বলে বেড়ান, তবে সেটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। আমার মনে হয় ওঁর অবিলম্বে মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন। আমার ধারণা, ওঁর নিশ্চয়ই কোনও সমস্যা আছে।''
দিল্লি গণধর্ষণ: আইনজীবীর মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ বাংলা বিনোদন জগতে
বিরোধী পক্ষের আইনজীবীর কিছু মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে সোশাল মিডিয়ায়। সেই প্রসঙ্গেই অভিনেতা-পরিচালকেরা জানালেন তাঁদের প্রতিক্রিয়া।
Follow Us
২০ মার্চ ভোরে দিল্লি গণধর্ষণ কাণ্ডের ৪ অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তার আগের দিন থেকেই সোশাল মিডিয়ায় বহু মানুষ উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন যেন এবারেও শেষ মুহূর্তে ফাঁসির আদেশ প্রত্যাহার করা না হয়। কিন্তু পুনরায় প্রাণভিক্ষার আর্জি মঞ্জুর করা হয়নি। এই প্রসঙ্গে আসামী পক্ষের এক আইনজীবী সংবাদমাধ্যমের সামনে ধর্ষিতার রাত সাড়ে বারোটায় বাড়ির বাইরে থাকা নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে সেই মন্তব্য এবং প্রতিবাদে মুখর হয়ে ওঠেন নেটিজেনরা।
বাংলা বিনোদন জগতের অনেকেই মনেপ্রাণে ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডের জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে, এমনটা ঘোষণা হওয়ার পরে, অনেকেই এমন কথা লিখেছেন যে এবার ধর্ষিতার আত্মা শান্তি পাবে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কেও জানিয়েছেন অনেকে তাঁদের প্রতিক্রিয়া।
আরও পড়ুন: রুপোলী পর্দায় পিকে! এমনটাও ঘটেছিল বটে
পাশাপাশি ধর্ষিতার মা-কে নিয়ে আইনজীবীর মন্তব্য এবং ধর্ষিতার প্রতি কটাক্ষ নিয়েও সরব হয়েছেন বাংলা বিনোদন জগতের বহু ব্যক্তিত্ব। অভিনেতা রাজদীপ গুপ্ত এই প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলেন, ''ওদের ফাঁসিটা অনেক আগেই হওয়া দরকার ছিল... কিন্তু জাস্টিস সার্ভড ফাইনালি, যদিও অনেকটা দেরি করে। কিন্তু আইনজীবী এপি সিংয়ের মতো লোকের ব্যাপারে সত্যিই কিছু বলার নেই। ওঁর একটা ভিডিও দেখলাম আজ সকালে যেখানে উনি ভিক্টিমের চরিত্র নিয়ে কথা বলছেন। মানুষের চিন্তাধারা বদলানো খুব দরকার, কিন্তু সেটা হচ্ছে না।''
'ত্রিনয়নী'-নায়িকা, অভিনেত্রী শ্রুতি দাস দীর্ঘদিন ধরেই এই গণধর্ষণ কাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া সমস্ত খবরাখবর রেখেছেন। যখন বার বার ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ডের তারিখ পিছিয়ে গিয়েছে, তখন সেই নিয়েও সরব হয়েছেন তিনি। ২০ মার্চ সকালে ধর্ষিতদের শাস্তি হয়েছে জেনেই নীচের এই ছবিটি পোস্ট করেছিলেন শ্রুতি।
ওই মামলার আসামী পক্ষের আইনজীবীর মন্তব্যে অত্যন্ত ক্রুদ্ধ অভিনেত্রী। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানালেন তাঁর প্রতিক্রিয়া--
''আমি মফসসলে বড় হয়েছি। তবু আমার বাবা-মা আমাকে এতটাই স্বাধীনতা দিয়ে বড় করেছে... যখন একটু বড় হয়ে গেছি, উচ্চমাধ্যমিক পড়ছি, তখন অনেক সময় রাত দশটা-এগারোটায় বন্ধুর বাড়ির গেট টুগেদার থেকে বাড়ি ঢুকেছি। ছেলে বন্ধুর দল এসে ছেড়ে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমার বাবা-মা কোনওদিন কিছু বলেনি। একবারও জিজ্ঞাসা করেনি কোথা থেকে এলি। সেই বিশ্বাসটা ছিল। ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বাবা-মায়ের সম্পর্কটা এমনই বন্ধুর মতো হওয়া উচিত। সেজন্যই বাবা-মাকে লুকিয়ে কোনওদিন কিছু করতে হয়নি। এমন কিছুই করিনি যা অপরাধের তালিকায় পড়ে। আমার মনে হয়েছে, ওই ভদ্রলোক... ভদ্রলোক বলতেও আমার রুচিতে বাধছে'', শ্রুতি বলেন, ''ওই লোকটি বলে সম্বোধন করছি। হয়তো তার কোনও সন্তান নেই। আর যদি তার সন্তান থাকেও, আমি তার সন্তানের বয়সী হয়েও তার পিতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলছি। একটা বাচ্চার সঙ্গে বাবা-মায়ের সম্পর্ক কেমন হয়, সেটা ওই লোকটি জানে না। তাই হয়তো এত বড় একটা স্টেটমেন্ট দিতে পেরেছে জনসমক্ষে। আমার মনে হয়, এই মন্তব্যের জন্য ওঁর বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। এরকম লোক যদি আইনজীবী হয়, তবে আমার মতো মেয়েরা তো অসুরক্ষিত, আই মাস্ট সে।''
প্রায় একই সুর শোনা গেল অভিনেতা-পরিচালক সৌরভ চক্রবর্তীর বক্তব্যে। তিনিও আইনজীবীর এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এই বক্তব্য যে আইনজীবীসুলভ নয়, সেকথাও বলেছেন সৌরভ। তিনি বলেন, ''এই কথাটা শোনার পরে আমি ঠিক বুঝতে পারছি না যে উনি মানুষ হিসেবে ঠিক আছেন কি না। ওঁর বক্তব্য একেবারেই আইনজীবীসুলভ নয়। এটা তো যে কোনও একটা পেশা নয়। এই পেশার দায়িত্ব বিরাট। হেলাফেলাতেও হয়তো একটা সিনেমা বানানো যায় কিন্তু এই পেশায় কোনও গাফিলতি চলে না। একজন আইনজীবী হয়ে যদি তিনি এমন কথা বলে বেড়ান, তবে সেটা অত্যন্ত চিন্তার বিষয়। আমার মনে হয় ওঁর অবিলম্বে মানসিক চিকিৎসা প্রয়োজন। আমার ধারণা, ওঁর নিশ্চয়ই কোনও সমস্যা আছে।''