Priyanka Bhattacharjee visited Maha Kumbh: এবছর কুম্ভতে গিয়েছিলেন অনেকেই। তারকাদের মধ্যে অনেকেই শাহী স্নানে অংশ নিয়েছিলেন। বলা উচিত, এবছর অল্প বয়সীদের মধ্যে ভক্তি শ্রদ্ধার মাত্রা দারুণ দেখা গিয়েছে। তাঁদের উপস্থিতি নানা প্রশ্নের সৃষ্টি করেছিল। বাংলা থেকে অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা ভট্টাচার্য গিয়েছিলেন কুম্ভে। সেখানে তাঁর নানা অনুভূতি প্রকাশ্যে জানিয়েছেন সমাজ মাধ্যমে। তবে রবিবাসরীয় আসরে যখন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে তাঁকে ফোন করা হল, হাসিমুখে এমন কিছু গল্প তিনি করলেন, যেগুলি অনেকেই অজানা।
তারকা সমাবেশে ভরে উঠেছিল এবারের মহাকুম্ভ। ১৪৪ বছর পর এবার শাহী স্নানের বহু ভাল যোগ ছিল। কিন্তু, প্রিয়াঙ্কা একদম শেষ সময়ে গিয়ে পৌঁছান সেখানে। অভিনেত্রীকে কুম্ভ প্রসঙ্গে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি জানান... "আমি গত পরশু ফিরেছি। সবাই ভেবেছিল হয়তো ডুবকি লাগালেই কাজ শেষ। কিন্তু আমার কুম্ভকে এক্সপ্লোর করার খুব ইচ্ছে ছিল। জায়গাটার ভাইব্রেশনটা আমায় মুগ্ধ করেছে। কুম্ভে যাওয়ার আমার প্রথম দিন থেকে ইচ্ছে ছিল। কিন্তু কেন জানিনা একদম সুযোগ হচ্ছিল না। আমি প্রচন্ড মাত্রায় ঈশ্বরে বিশ্বাসী। আমি বোম্বাইতে যে বাড়িতে থাকি, সেখানে আমার মাথার কাছে আদিযোগির স্ট্যাচু আছে। রোজ আমি আমার ভগবানের সঙ্গে ঝগড়া করতাম, যে সবাই কি তোমাকে এত ভালোবাসে? আর আমি কি তোমাকে এত কম ভালোবাসি তুমি আমাকে নিয়ে যাচ্ছো না? তারপর যখন আর কিছুদিন মাত্র মহা কুম্ভের বাকি, হঠাৎ করে যে কি হলো আমি বুঝলাম না, আমার মনে হলো না আমি যাবই। এক দু দিনের মধ্যেই সব ঠিক করে ফেললাম।"
অভিনেত্রী জানান, কোন কিছুর পরোয়া না করেই তিনি কুম্ভ যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। ৩০ কিলোমিটার হাঁটতে হলেও, ঈশ্বর ভক্তি এবং প্রেম তাকে যেন মাতিয়ে রেখেছিল প্রয়াগ রাজ দর্শনে। এক দু দিনের মধ্যেই সমস্ত বন্দোবস্ত হয়েছিল। অভিনেত্রী বলেন, "আমার একদম কষ্ট হয়নি। আর্মিদের গাড়ি করে এয়ারপোর্ট থেকে সরস্বতীঘাট অব্দি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে গিয়ে আমি ডুব লাগাই। শুধু ডুব লাগালে ওখানে হয় না। বেশ কিছু নিয়ম আছে ওখানে মা গঙ্গাকে শাড়ি দিতে হয়। আমি সঙ্গে করে সমস্ত কিছু নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু, ফিরে আসতে ইচ্ছা হয়নি। বরং মহা শিবরাত্রি সেখানে পালন করব এমনটাই একটা ইচ্ছে ছিল। সরস্বতী ঘাটের ওখানে, এটা শিব মন্দির আছে। আমি চেয়েছিলাম সেখানে বাবার কাছে ফুল অর্পণ করব। কাউকে দিচ্ছিলো না পুজো করতে, কিন্তু ঠাকুরমশাই ঠিক আমার হাত থেকে ফুলটা নিয়ে নিলেন। আমি যখন মন্দির থেকে বেরিয়ে, জুতা পরে মেলার দিকে হাটব ভাবছি, তখন ওখানেরই একজন এসে বললেন আপনি কোথায় যাবেন? আমি বললাম মেলাটা একটু ঘুরে দেখব। উনি ওনার বাইকে করে আমাকে মেলাটা পুরো ঘুরে দেখালেন। সত্যি বলতে গেলে এত স্মুথ এবং সুন্দর হয়েছে জার্নিটা, আমি কিছু বুঝতেই পারলাম না।"
অভিনেত্রী কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, বর্তমান প্রজন্ম কি স্ট্রেসের কারণে এবং মোক্ষ লাভের জন্য কুম্ভে গেছে? নাকি নিজেদের জীবনে এত চাপ বাড়ছে সেই জন্য ঈশ্বর প্রীতি বাড়ছে? তিনি হাসতে হাসতে উত্তর দিলেন, আমার মনে হয় এই জেনারেশন এর মধ্যে ঈশ্বর প্রেম আবারও করে ফিরে আসছে। শুধু তাই নয়, আসলে এই জেনারেশনটার সঙ্গে এত বিশ্বাসঘাতকতা হয়েছে, যে তারা না ঈশ্বরের সঙ্গে একটা সুন্দর সম্পর্ক বেশ উপভোগ করছে। মানুষ দেখছে স্পিরিচুয়ালিটিতে খুব শান্তি। আমি নিজে খুব শান্তি পাই যখন আমি কোন ভগবানের জায়গায় যাই। আসলে যখন কারোর ভক্তি খুব পিওর হয়, তখন ঈশ্বর তাঁর কথা শুনে নেন।"
উল্লেখ্য, গল্পের মধ্যেই তিনি জানান, এই জন্মটা তাঁর মোক্ষলাভের জন্ম। আগামীতে নাকি আরও আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে জুড়ে যাবেন। বাড়ির পুজোটাও তিনি নিজের হাতে করেন, শুধু তাই নয়, বিশ্বাস করেন যে ঈশ্বরের ওপর ভরসা থাকলে সবকিছুই একদিন উৎরে যাবে।