Bengali Who won Dadasaheb Phalke: আজ সকাল হতেই বিরাট ঘোষণা। দাদা সাহেব ফালকে পুরস্কার পাচ্ছেন মিঠুন চক্রবর্তী। সিনেমাটিক কেরিয়ার অনবদ্য তাঁর, সেকারণেই সিনেমার সর্বোচ্চ পুরস্কারে ভূষিত হতে চলেছেন তিনি। এর আগে তিনি পেয়েছিলেন পদ্ম ভূষণ পুরস্কার।
তিনটি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। তবে, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারের তালিকায় কিন্তু অনেক বিশ্ববরেণ্য বাংলার মানুষদের নাম রয়েছে। ১৯৬৯ সালে প্রথম এই পুরস্কার দেওয়া হয়, তারপর প্রায় অনেক শিল্পী নিজেদের যোগ্যতায় এবং দক্ষতায় অর্জন করেছেন এই পুরস্কার।
বীরেন্দ্রনাথ সরকার: তিনি ভারতীয় চলচ্চিত্র প্রযোজক এবং পরিচালক হিসেবে জনপ্রিয়। কলকাতার হেয়ার স্কুলের অধ্যক্ষ পেয়ারী চরণ সরকারের প্রপৌত্র। কলকাতার হিন্দু স্কুলে পড়াশোনা শেষ করে , তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়াশোনা করেন। তারপরই ভারতে ফিরে সিনেমা নির্মাণে ব্রতী হন। পুনর্জন্ম, জিন্দা লাশ, কপালকুণ্ডলা, পল্লীসমাজ, মাসতুতো ভাই, সীতা আরও অনেক ছবির জন্য বিখ্যাত। ১৯৭০ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পান।
পঙ্কজ মল্লিক: মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠানের যিনি কম্পোজার, সেই মানুষটি ১৯৭২ সালে পেয়েছিলেন দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। তিনি পঙ্কজ মল্লিক। বহু ছবিতে তিনি সুরকার হিসেবে কাজ করেছেন। তবে দেবী দুর্গার আহ্বানে তাঁর যে সুর বাঙালির মনে রয়ে গিয়েছে, সেটি ভোলার নয়।
ধীরেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলি: পরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ গাঙ্গুলি ১৯৭৫ সালে পেয়েছিলেন এই পুরস্কার। হিন্দি এবং বাংলা ছবিতে তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য তাঁকে ভূষিত করা হয় এই সম্মানে। তাঁর পরিচালিত ছবির মধ্যে, বিলেত ফেরত, চরিত্রহীন, রাজিয়া বেগম, ইন্দ্রজিৎ, বিমাতা, চিন্তামনি আরও উল্লেখযোগ্য।
কানন দেবী: বাংলা চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র তিনি। তাঁর সৌন্দর্যের সঙ্গে সঙ্গে অভিনয় দক্ষতা ছিল তুখোড়। ১৯৭৬ সালে তিনি দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার পেয়েছিলেন। মুক্তি, বিদ্যাপতি, জওয়াব, শেষ উত্তর, মেজদিদি, রাজলক্ষী ও শ্রীকান্ত, ঋষির প্রেম ছবির জন্য বিখ্যাত।
নীতিন বসু এবং রাইচাঁদ বড়াল: নীতিন বসু এই পুরস্কার পান ১৯৭৭ সালে। বাঙালি এই পরিচালক এবং সিনেমাটোগ্রাফার দিদার, ধুপ ছায়ো, ওয়ারিস, ভাগ্যচক্র, চণ্ডীদাস ছবির জন্য বিখ্যাত। অন্যদিকে ঠিক তাঁর পরের বছর ১৯৭৮ সালে এই পুরস্কার পান রাইচাঁদ বড়াল। তিনি মিউজিক কম্পোজার।
সত্যজিৎ রায়: বাংলা ছবিকে আন্তর্জাতিক স্তরে নিয়ে গিয়েছেন যেই মানুষটি, সত্যজিৎ রায় ১৯৮৪ সালে এই পুরস্কার পান। পথের পাঁচালী ছবির মাধ্যমে তিনি ভারতীয় সিনেমার অন্য রূপ তুলে ধরেন। তারপর, শাখা প্রশাখা, কাঞ্চনজঙ্ঘা, জলসাঘর, গুপি গাইন বাঘা বাইন, সোনার কেল্লা, নায়ক, চিড়িয়াখানা, আরও অনেক ছবি। অস্কারের পাশাপাশি রয়েছে আরও অনেক আন্তর্জাতিক পুরস্কার।
মৃণাল সেন: বাংলা ছবির আরেক পরিচালক, যিনি আন্তর্জাতিক স্তরে বেশ জনপ্রিয়। মৃণাল সেন এই পুরস্কার পান, ২০০৩ সালে। ভুবন সোম, আকালের সন্ধানে, চালচিত্র, মৃগয়া, একদিন প্রতিদিন, কলকাতা ৭১ ছাড়াও নানা ছবির পরিচালক তিনি।
মান্না দে: মান্না দে, যার সুরেলা কন্ঠে ভেসেছে বাংলা তথা গোটা ভারতবর্ষ, তাঁকে ২০০৭ সালে দেওয়া হয়েছিল এই পুরস্কার। একের পর এক গান তো বটেই, তাঁর সঙ্গে দুটি ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন মান্না দে।
তপন সিনহা: খ্যাতনামা পরিচালক তপন সিনহা ২০০৮ সালে পেয়েছিলেন এই পুরস্কার। তাঁকে নিয়ে নতুন করে বলার নেই। কাবুলিওয়ালা থেকে শুরু করে ঝিন্দের বন্দী, আপনজন, বাঞ্ছারামের বাগান, অতিথির মত ছবি তিনি উপহার দিয়েছেন।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়: বাংলা ছবির আসল ফেলুদা যিনি, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে দেওয়া হয়েছিল দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার। তিনি, ২০১১ সালে এই পুরস্কার পান। ভারতীয় সিনেমায় তাঁর অসামান্য অবদানের জন্য, এমনকি সত্যজিৎ রায়ের চরিত্রকে পর্দায় ফুটিয়ে তোলার যে পারদর্শিতা তিনি দেখিয়েছেন, সেই নিয়ে আর প্রশ্ন তোলার অপেক্ষা রাখে না।
তাঁর প্রায় ১৩ বছর পর মিঠুন চক্রবর্তী পাচ্ছেন এই পুরস্কার। সেই নিয়েই উন্মাদনা তাঁর ভক্ত মহলে।