Durga Puja vasan songs: একটা সময় বাঙালির দুর্গাপুজোর ভাসানে বাজত শুধুই ঢাক-কাঁসর ঘণ্টা, সঙ্গে থাকত সংয়ের গান। ক্রমশ সেই অভ্যাস বদলাতে বদলাতে এখন দুর্গাপুজোর ভাসানে রিভলবাথা পর্যন্ত বাজতে শোনা যায়। সময়ের সঙ্গে পরিবর্তন ভালো কিন্তু বিচ্যুতি খুব ভালো ব্যাপার নয়। বাংলার দুর্গাপুজোর ভাসান যখন, তখন বাংলা গান বাজানোই ভালো নয় কি?
ইদানীং বাংলা ছবিতে একটু বেশি রোম্যান্টিক গানের ঢল নেমেছে তাই একেবারে হাতে-গরম তেমন নাচের গানের সংখ্যা হয়তো কম, যা দুর্গাপুজোর ভাসানে বাজানো যেতে পারে। কিন্তু নতুন গানই বাজাতে হবে এমন তো কোনও কথা নেই। একটু ভাবলেই পাওয়া যাবে ভাসানের উপযুক্ত অনেক গান। আর যাঁরা পুজোর ভাসানে হিন্দি গান বাজিয়ে নাচানাচি করেন, তাঁরা ভেবে দেখবেন, কষা খাসির মাংসের সঙ্গে যদি ধোকলা সাজিয়ে খেতে দেওয়া হয়, তবে কি ব্যাপারটা খুব উপাদেয় হবে?
আরও পড়ুন: ঝাড়গ্রামে মামার বাড়ির পুজোর গল্প বললেন রূপাঞ্জনা
তাই পুজোর ভাসানে থাকুক বাংলা গান, সে হতে পারে ছবির গান অথবা কোনও বেসিক অ্যালবাম। যদিও ভাসানে বাংলা ছবির গান বাজানোর প্রবণতাই বেশি বাঙালিদের মধ্যে। সেক্ষেত্রে একদম সাম্প্রতিক গানগুলি ছাড়াও পুরনো গানের ঝাঁপিটাও একটু নাড়াচাড়া করে দেখতে পারেন। অনেক মণিমুক্তো পাবেন। উদাহরণস্বরূপ রইল ৫টি গান--
ও ঠাকুর (বেলাশেষে)
ঘরোয়া বাড়ির পুজোর জন্য সবচেয়ে মিষ্টি ভাসানের গান অবশ্যই নন্দিতা রায় ও শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় পরিচালিত 'বেলাশেষে' (২০১৫) ছবির ও ঠাকুর গানটি। সেই চিরায়ত ঢাকের বোল-- ঠাকুর থাকবে কতক্ষণ, ঠাকুর যাবে বিসর্জন। সেই পুরাতন দুই কলিকে ভারি সুন্দর করে নতুন মোড়কে উপস্থাপনা করেছিলেন অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। গানটি গেয়েছিলেন উপল সেনগুপ্ত, প্রশ্মিতা পাল এবং অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়। এই গানে বনেদিয়ানাও রয়েছে আবার নব্য বাঙালির 'চন্দ্রবিন্দু' সিগনেচারও রয়েছে।
ধিতাং ধিতাং (লাভ এক্সপ্রেস)
২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল দেব ও নুসরত অভিনীত 'লাভ এক্সপ্রেস'। রাজীব বিশ্বাস পরিচালিত এই ছবির সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন জিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ছবির সব গানই মোটামুটি হিট হয়। তার মধ্যে এই গানটি এক্কেবারে আদর্শ ভাসানের গান। গানটি গেয়েছিলেন আরমান মালিক আর গানের কথা লিখেছিলেন প্রিয় চট্টোপাধ্যায়। দেখে নিতে পারেন আদিল শেখের কোরিওগ্রাফ করা এই গানের মিউজিক ভিডিওটি নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে
রঙ্গবতী ও রঙ্গবতী (গোত্র)
থিমে ঠিক মা দুর্গা নেই আর গানটিও বাংলা নয়। কিন্তু এবছর ভাসানের গানের লিস্টে বাংলার কোল ঘেঁষে থাকা ওড়িশার এই লোকগানটি রাখা যেতেই পারে। কারণ বহু বাঙালিই সাম্প্রতিক বাংলা ছবির গানের ট্রেন্ড ফলো করে ভাসানের গান নির্বাচন করেন। আর এই গানটির এক্কেবারে হাতে-গরম রিমেক ঘটেছে শিবপ্রসাদ-নন্দিতা পরিচালিত গোত্র (২০১৯) ছবিতে। তুলে নিতে পারেন ওম-দেবলীনার ডান্সিং স্টেপস নীচের এই ভিডিও লিঙ্কটি দেখে--
সুন্দরী কমলা (ভিলেন)
গত বছরের ছবি, বাবা যাদব পরিচালিত ভিলেন ছবির এই গানটি সেই সব বাঙালি মেয়েদের জন্য যাঁরা ভাসানের নাচতে কোনও রকম দ্বিধা বোধ করেন না। সেই সব কমলাদের জন্য থাকুন বাংলার লোকগান কমলাসুন্দরী অনুপ্রাণিত এই নতুন গানটি। কোরিওগ্রাফিও বাবা যাদবের। গানটি গেয়েছেন আরমান মালিক ও অন্তরা মিত্র। লিরিকস সঞ্জীব তিওয়ারির এবং সঙ্গীত পরিচালনা শুভদীপ মিত্রের--
জীবনে কী পাব না (তিন ভুবনের পারে)
দুর্গাপুজোর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই কিন্তু এই গানটির মধ্যে যে উদ্দীপনা রয়েছে তার কোনও তুলনা হয় না। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও তনুজা অভিনীত এই ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬৯ সালে। পঞ্চাশ বছর পরেও গানটা শুনলে চুপচাপ বসে থাকা যায় না, পা মেলাতে ইচ্ছে করে। আর এই গানের সিকোয়েন্সটিতে পাড়ার বন্ধুদের একটা সুন্দর বন্ডিং ছিল। যে পুজোর ভাসানে এই গান বাজবে, সেই পুজোর ব্র্যান্ডিং অন্য মাত্রা ছুঁয়ে যাবে--