তিলোত্তমা প্রতিবাদে মুখর। সবথেকে বড় কথা শিরদাঁড়া সোজা রেখে মানুষ আজ আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন। 'মিছিল মানুষ খুঁজছে না, বরং মানুষ মিছিল খুঁজছে'। একদিকে যখন নারকীয় ঘটনার বিচার চেয়ে মানুষ থেকে তারকারা পথে নেমেছেন, ঠিক তখনই ফিল্মি দুনিয়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক নিজের ফ্রেটার্নিটির অন্যান্য সদস্যদের আত্মসম্মানে খোঁচা দিয়েছিলেন।
তিনি জানতে চেয়েছিলেন, টলিউডের যারা এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন বা, সরকারের বিরুদ্ধাচারণ করছেন তাঁরা সরকারের তরফে পাওয়া পুরস্কার ফেরত দেবেন কিনা। সেই নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। একে একে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তরফ প্রাপ্ত পুরস্কার ফিরিয়েছেন অনেকেই। তাঁর মধ্যে চন্দন সেন, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, সুপ্রিয় দত্ত অন্যতম। আর এবার গতকাল ব্রাত্য বসু, কাঞ্চনের চেনা ছন্দেই সুর টেনে বলেছেন, যে তারকারা এই ঘটনার পর রাজ্যের পুরস্কার ফেরত দিচ্ছেন, তারা কেন্দ্রীয় স্তরে কী করবেন?
পশ্চিমবঙ্গ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু গতকাল ফিল্ম দুনিয়ার তারকাদের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন ছুঁড়েছেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, "সকলের প্রতিবাদ করার অধিকার আছে। কিন্তু জাতীয় স্তরে যদি এমন কোনও ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটে, তাহলে কেন্দ্রীয় কোনও পুরস্কার তাদের কাছে থাকলে তাঁরা ফেরত দেবেন তো?" তির্যক ইঙ্গিতে তিনি টেনে আনেন কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যতম জাতীয় পুরস্কার প্রসঙ্গও।
এই বাংলার বুকে জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত অভিনেতা-অভিনেত্রী কম নেই। বহুবছর ধরে তাঁরা অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে মানুষের মনোরঞ্জন করেছেন, এবং জাতীয় স্তরে বাংলাকে সমৃদ্ধ করেছেন। তেমনই একজন অনন্যা চট্টোপাধ্যায়। 'আবহমান' ছবির জন্য তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিলের হাত থেকে জাতীয় পুরস্কার গ্রহণ করেন তিনি। অভিনেত্রীর এই প্রসঙ্গে কী মতামত সেটি জানতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার তরফে ফোন যেতেই তিনি বলেন...
কী বলছেন তিনি?
"বিষয়টা হচ্ছে, উনি একদম জাতীয় পুরস্কার এটা উল্লেখ করেননি। তাই এক্ষেত্রে আমার কিছু বলার থাকে না। কিন্তু উনার রেশ ধরেই বলছি, কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কেউ যদি পুরস্কার পেয়ে থাকেন, এবং কেন্দ্রীয় স্তরে যদি ঘটনা এমন ঘটে, তাহলে আমরা তখন নিয়মের আওতায় কী আসে, বা কী করা যায় ভেবে দেখব। আর সত্যি কথা বলতে গেলে, খোঁটাটা ওদের বিধায়কের তরফে এসেছে। সুতরাং শিল্পীদের গায়ে লাগার কথা। এটা গায়ে লাগার মতোই।"
আরেকটা প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁকে, কেন্দ্রে এবং রাজ্যে ভিন্ন রুলিং পার্টি, সেকারণেই কি আমরা ওরা বিষয়টা চলে এসেছে? অভিনেত্রী সোজাসুজি বলেন, "এই বিবাদটা সবসময় হয়ে এসেছে, এটা নিয়ে আমার সমালোচনা করার নেই। কিন্তু, ব্রাত্য বাবুর কথার পরিপ্রেক্ষিতেই বলছি, যদি এমন পরিস্থিতি হয় তাহলে আমরা তখন নিয়মের আওতায় বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করব।"
উল্লেখ্য, সারা রাজ্য জুড়ে যে প্রতিবাদ এবং জোরালো আওয়াজ উঠেছে তাতে অনন্যা চট্টোপাধ্যায় পা মিলিয়েছিলেন। মেয়েদের হয়ে প্রতিবাদ করার পাশাপাশি কাঞ্চন মল্লিককে সেদিন বিঁধেছিলেন তিনি। বিধায়কের উদ্দেশ্যে মন্তব্য করেছিলেন, "কথাগুলো বলতে পারলেন? কানে শুনেছেন একবারও? একা হয়ে যাবেন কিন্তু! চারপাশে কাউকে দেখতে পাবেন না। পার্টি করলেই সবাই খারাপ মানুষ হয়ে যায়না। এই বিশ্বাসটির জন্ম দিন। আপনি জননেতা।"