সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে তাঁর নাম-যশ। পাশাপাশি প্রথা নামক একটি বস্ত্রবিপণির কর্ণধার লোপামুদ্রা মিত্র। আর এতেই বেড়েছে বিতর্ক। সম্প্রতি তাঁর বস্ত্রবিপণি নিয়ে করা একটি ফেসবুক পোস্টে রে-রে করে তেড়ে আসেন কয়েকজন নেটিজেন। লোপামুদ্রা মিত্রের প্রতি তাঁদের মন্তব্য,’আপনি জীবনমুখী গান গেয়েও শাড়ি বিক্রি করেন?‘ রবিবার নেট-জনতার এহেন প্রশ্নের উত্তর দীর্ঘ এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে দিলেন এই শিল্পী।
তিনি পোস্টের শুরুতেই লেখেন, ‘আমার কিছু কথা আছে। গান গাই, গান বেচে খাই। শুনতে খারাপ লাগলেও, এটাই সত্যি। আমাদের দিনযাপনে কোন স্বপ্ন নেই আর। শুধু ঈশ্বরের বিশেষ কৃপায় আপনি আমাকে চেনেন, নামে জানেন, ছবিতে চেনেন, কণ্ঠস্বর চেনেন।‘
সমালোচকদের উদ্দেশে তাঁর জবাব, ‘আমরা মানুষ, আপনারই মতো।পাখি নই।পাখি নিজে নিজেই গান গায়। পোকামাকড় , দানা খেয়ে , তারপর গান গেয়ে বেড়ায়।আমাদের কিন্তু গান শিখে, চর্চা করে, কপালে শিকে ছিঁড়লে তবেই গান গাওয়াকে পেশা করা যায়। আমাদের খাবার যোগাড়ের জন্যই গান গাইতে হয়। সঙ্গে ১০/১২ টা পরিবার , তারা কেউ যন্ত্র বাজায়, কেউ মাইক বাজায়, কেউবা আলো করে।কিন্তু তারাও খায়, আপনার মতোই।
আমাদেরও মন আছে। আমাদেরও শখ আছে। আমাদেরও সংগ্রাম আছে।‘ পোস্টে খানিকটা ব্যাঙ্গের সুরে তাঁর উল্লেখ, ‘হ্যাঁ, এটাও সত্যি, ঈশ্বর সকলকে দেন না। কি করবো, বলুন?? যা পেয়েছি, তা ঈশ্বরের দান। আজ সোশ্যাল মাধ্যমে আমি, আপনি, আমরা সবাই এক খোপে। কেউ ইস্কুলে পড়াই, কেউ চাষ করি, কেউ মুদির দোকান চালাই, কেউ বড় কাছারিতে চাকরি করি, কেউ ছোট কাছারিতে, তার মধ্যেই কেউ ঈশ্বরের একটু বেশি পক্ষপাত দোষে গান গাই আবার কেউ ভিক্ষাও করি। নাম যশ কেনা যায় না। ওটা ঈশ্বরের দোষ।উনি দিয়েছেন, বা দেন নি। আপনি ওপরের আলো দেখছেন, যেটা ঈশ্বর প্রদত্ত । আলোর ভিতরের মানুষ আর আপনি এক রক্ত মাংসের মানুষ । তাই আঘাত করলে দুবার ভাবুন।একটু ভাবুন।‘ দীর্ঘ এই পোস্টের উপসংহারে লোপামুদ্রা জুড়েছেন, ‘আরও অনেক কথা বলার আছে। অনেক কথা। যতো আঘাত পাবো, ততো বলতে পারবো, আমাদের কথা। অতিমানব টাইপ, আমাদের কথা।‘
এই পোস্টের সমর্থনে এগিয়ে এসে তাঁকে কুর্নিশ জানিয়েছেন কবি শ্রীজাত এবং বাচিকশিল্পী ঊর্মিমালা বসুও। একদম আমাদের কথা বলেছো। আমাদের মতো অনেকের কথা বলেছো। এমন মন্তব্যে ছেয়ে গিয়েছে তাঁর সেই পোস্ট।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন