Advertisment

আমার মনে হয় ছবি করা হবে না: শ্বেতা ভট্টাচার্য

Sweta Bhattacharya: কেরিয়ারের শুরুতেই ছবির প্রস্তাব ফিরিয়েছিলেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে এল, কেন ছোটপর্দাতেই বেশি স্বচ্ছন্দ শ্বেতা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Bengali TV Actress Sweta Bhattacharya exclusive interview

শ্বেতা ভট্টাচার্য। ছবি সৌজন্য: কালারস বাংলা

বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় নায়িকা শ্বেতা ভট্টাচার্য প্রথম ধারাবাহিক 'সিঁদুরখেলা' থেকেই দর্শকের প্রিয়পাত্রী হয়েছিলেন। বর্তমানে কালারস বাংলা-র 'কনককাঁকন' ধারাবাহিকে কাঁকন-এর চরিত্রে অভিনয় করছেন শ্বেতা। অনেকেই হয়তো জানেন না, তিনিই ছিলেন 'চিরদিনই তুমি যে আমার' ছবিতে রাজ চক্রবর্তীর প্রথম পছন্দ। ওই ছবির প্রস্তাব ফিরিয়ে দেওয়ার পরে টেলিপর্দাতেই অভিনয় করেছেন শ্বেতা। ব্লুজ-এর প্রযোজক স্নেহাশিস চক্রবর্তীকে তাঁর অভিনয় জীবনের সবচেয়ে বড় মেন্টর বলে মনে করেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় উঠে এল, কেন ছোটপর্দাতেই তিনি বেশি স্বচ্ছন্দ।

Advertisment

কাঁকন তো নৃত্যশিল্পী। ধারাবাহিকে বেশ কয়েকটি পারফরম্যান্সও দেখানো হয়েছে। তুমি কি ছোটবেলা থেকেই নাচ শিখেছ?

হ্যাঁ, আমি তো দেড় বছর বয়স থেকে নাচ শিখি। মূলত ভরতনাট্যম শিখেছি। তার সঙ্গে কথক, ফোক আর সালসা। ওয়েস্টার্ন খুব বেশি শিখিনি। ভারতীয় ডান্স ফর্মগুলিই শিখেছি। আমার যখন ক্লাস এইট কি নাইন, ডান্স বাংলা ডান্স-এ অডিশন দিয়েছিলাম। কিন্তু ওই সময় আমার কিডনির ইনফেকশন ধরা পড়ে। তাই ২-৩ বছর নাচ বন্ধ হয়ে যায়।

আরও পড়ুন: টেলি-রিভিউ: আত্মসম্মানের নতুন সংজ্ঞা তৈরি করছে ‘শ্রীময়ী’

তার পর অভিনয়ে এলে কীভাবে?

ডান্স বাংলা ডান্স-এর অডিশনের পর কিছু কিছু জায়গায় ডাক পেয়েছিলাম। রাজদার (রাজ চক্রবর্তী) আমাকে খুব পছন্দ হয়। উনি আমাকে 'চিরদিনই তুমি যে আমার'-এর নায়িকার চরিত্রের অফার দেন। তখন আমি ক্লাস নাইনে পড়ি, ছবিটা করতে পারিনি। কিন্তু রাজদা আমাকে টুকটাক ডাকত। যেমন 'লে ছক্কা'-তে একটা চরিত্র ছিল, 'প্রেম আমার'-এ ছিল। আবার 'চ্যালেঞ্জ'-এ শুভশ্রী-র বন্ধু হয়েছিলাম। তার পর ভেঙ্কটেশ থেকে ডাক পাই। তখনও আমি ঠিক অভিনেত্রী হব বলে ভাবিনি। আমি সাহানাদিকে বলেছিলাম, দিদি আমার দ্বারা হবে না। সাহানাদি বলেছিল, তোর দ্বারাই হবে, আমি তোকেই নেব। ২০১০-এ 'সিঁদুরখেলা' আমার প্রথম ধারাবাহিক। আমার অভিনয় শেখার শুরু। প্রথমদিকে দেবাংশু আঙ্কল শিখিয়েছিলেন। কিন্তু ওঁকে তো আমি বেশিদিন পাইনি, তার অল্পদিনের মধ্যেই উনি আমাদের ছেড়ে চলে যান। তার পরে আমি ব্লুজ-এ কাজ করতে শুরু করি-- প্রায় ৮ বছর হল আমি এই হাউসেই কাজ করছি।

কনককাঁকন-এর আগে জড়োয়ার ঝুমকো-তে তোমার চরিত্রটা তো খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। তোমার কি মনে হয় যে দর্শকের মনে এখনও ঝুমকোর রেশ রয়ে গিয়েছে। তাই কি কাঁকন অতটাও জনপ্রিয় হতে পারল না?

আসলে আমি স্নেহাশিসদার লেখার ফ্যান। ওঁর প্রত্যেকটা ধারাবাহিকেই কিছু না কিছু মেসেজ থাকে। 'জড়োয়ার ঝুমকো'-তে যেমন ছিল, তেমনই 'কনককাঁকন'-এও রয়েছে। কাঁকন এমন একটি মেয়ে যে তার সমস্ত শক্তি দিয়ে তার বাবার স্বপ্ন সফল করতে চায়। কাঁকনের বাবা ছিলেন অ্যাথলিট। মাঝমাঠে হার্ট অ্যাটাক-এ মারা যান। তিনি কাঁকনের উপর বোন কনকের দায়িত্ব দিয়ে যান। কাঁকন কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে। কনক ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। কাঁকনের হার্টের প্রবলেম, তার নাচ করা বারণ। তা সত্ত্বেও সে বোনের পড়াশোনা, তার খেলাধুলোর জন্য টাকা রোজগার করে, নিজে পারফর্ম করে। এর মধ্যে একটা দারুণ মেসেজ আছে। আমার মনে হয়ে অনেকেই এই ধারাবাহিকটি দেখতে পারেন না কিছু অসুবিধের কারণে। হয়তো কালারস বাংলা পে চ্যানেল বলে কিছু দর্শক দেখতে পান না। যদি একটু কিছুদিন ধারাবাহিকটা ফলো করেন, তাহলে কাঁকনও ঝুমকোর মতোই জনপ্রিয় হবে। কারণ কাঁকনের একটা অসাধারণ লড়াই রয়েছে।

Bengali TV Actress Sweta Bhattacharya exclusive interview 'কনককাঁকন' ধারাবাহিকে কাঁকনের ভূমিকায় শ্বেতা। ছবি সৌজন্য: কালারস বাংলা

এটা কি আগের চরিত্রগুলোর চেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং?

আমি যত চরিত্র করেছি, তার প্রত্যেকটাই অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। তুমি রবে নীরবে-তে চরিত্রটি ছিল ডেফ অ্যান্ড ডাম্ব। আমাকে সাইন ল্যাঙ্গোয়েজ শিখতে হয়েছিল কিছুটা। ঝুমকো বলো বা 'জয় কানহাইয়া লাল কি'-র চরিত্রটা, প্রত্যেকটাই এক এক রকম চ্যালেঞ্জিং। কিন্তু 'কনককাঁকন'-এ প্রথমবার আমি একটি কমেডি চরিত্র পেয়েছি-- পুঁটিরানি। ওটা আমার দারুণ লেগেছে। তবে যত কঠিন চরিত্রই হোক না কেন, দাদা এত সুন্দর আমাদের বুঝিয়ে দেন... ওখানে অনেকটা সহজ হয়ে যায়। আমাদের স্ক্রিপ্ট যখন আসে, তার সঙ্গে সঙ্গে দাদার রেকর্ডিং আসে। প্রত্যেকটা চরিত্রের সংলাপ দাদা অভিনয় করে রেকর্ড করে পাঠিয়ে দেন। তবে যদি মনে হয়, আমরা কিন্তু সিন করার আগে দাদাকে ফোন করে বলতেই পারি যে দাদা, এই জায়গাটা কি এভাবে বলব? ওঁর যদি ঠিক লাগে, উনি বলেন হ্যাঁ করো। আসলে দাদা আমার কাছে ভগবান। বাবা-মা যেমন জন্ম দিয়েছেন, ব্লুজ-এ এসে আমার একটা নতুন জন্ম হয়েছে। আর ব্লুজ এমন একটা হাউস, এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত, এই হাউসটা ছেড়ে যেতে ইচ্ছে করে না।

আরও পড়ুন: অনেকে বোধহয় ভুলেই গিয়েছেন যে আমি আছি: সুমনা

কিন্তু তোমার কাজের শুরু তো ভেঙ্কটেশে, এবং বলতে গেলে তুমি সাহানাদির আবিষ্কার...

অবশ্যই। সাহানাদির কাছে অত্যন্ত ভালবাসা পেয়েছি। প্রথম উনিই ভরসা দিয়েছিলেন আমাকে। আর 'সিঁদুরখেলা'-র ইউনিট ভীষণ ভাল ছিল। কিন্তু তার পরে যখন ব্লুজ-এ কাজ করতে শুরু করলাম, পর পর প্রজেক্ট এল, আর একটা কমফর্ট জোন তৈরি হয়ে গেল। এই হাউসটা একটা বড় পরিবারের মতো। আমি বলি, আমাদের 'মস্তি কা পাঠশালা'। এখানে দাদা যেমন আমাদের অনেক কিছু শেখান, ডিসিপ্লিনের উপর জোর দেন। আবার আমরা কিন্তু খুব মজাও করি। আর এই হাউসের ইপি-রাও খুব ভাল। আসলে বাবা-মা দুজনেই প্রিয়। যদি জিজ্ঞেস করো, কে বেশি ভালবাসেন, সেটার উত্তর দেওয়াটা একটু কঠিন হয়ে যায়।

তুমি টেলিভিশনে একজন সফল অভিনেত্রী। ছবির অফার তুমি ছেড়ে দিয়েছিলে কেরিয়ারের শুরুতে। এখন কি আর ছবি করার কথা ভাবছ না?

না গো, আমার মনে হয় ছবি করা হবে না। ছবির প্রচুর অফার এসেছে। তার সবগুলোই কমার্শিয়াল ছবি। আর কমার্শিয়াল নায়িকাদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যে পোশাকগুলো পরানো হয়, সেটাতে আমার একটু প্রবলেম আছে। অনেকে হয়তো বিশ্বাস করবে না, চরিত্র তো ছেড়ে দাও, আমি এমনিতেও কখনও শর্ট প্যান্ট পরিনি, স্লিভলেসও পরিনি। আমি যেটা এমনিতে পরি না, অভিনয়ের সময়ে সেই রকম জামাকাপড় পরাতে আমার একটা অস্বস্তি আছে। আর আমি ইন্টিমেন্ট সিন করতে পারব না। ওটাও একটা কারণ। তাই সম্ভবত আমার ছবি করা হবে না।

TV Actress Bengali Television Bengali Actress Bengali Serial
Advertisment