মুম্বইয়ের বস্তির ছেমেয়েদের জীবন নিয়ে অনেক ছবি হয়েছে, এই ছবিও সে তালিকায় আরেকটি সংযোজন। জীবনের প্রতিবন্ধকতা, প্রতিকূলতার সঙ্গে যুদ্ধের কাহিনি। রয়েছে ড্রাগস, রয়েছে বেশ্যাবৃত্তি। ভালোবাসা, তঞ্চকতা, ভরসাও রয়েছে। যেমনটা ছিল সালাম বম্বে কিংবা স্লামডগ মিলিওনেয়ারে। এসব নিয়েই প্রথম ভারতীয় চলচ্চিত্রটি বানিয়েই ফেললেন ইরানি পরিচালক মাজিদ মাজিদি।
মাজিদির চিল্ড্রেন অফ হেভেন, সং অফ দ্য স্প্যারোর মতোই এ ছবিও জীবনের গল্প বলে। শিশুদের দিয়ে স্বাভাবিক অভিনয় করিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে মাজিদি সিদ্ধহস্ত। এ ছবিতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। নতুনত্ব বলতে বিয়ন্ড দ্য ক্লাউডসে সে টুকুই। বাকিটা সেই গতানুগতিক কাহিনিই।
এ ছবিতে ইশান খট্টর বস্তির ড্রাগ সাপ্লায়ার। বাইকে চড়ে মুম্বই শহরে ড্রাগ বিক্রি করে বেড়ানোই তার কাজ। বোনকে বাঁচাতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিতেও পিছপা হয়না, বস্তির সব হারানো অকুতোভয় চরিত্র যেমন হয়ে থাকে আর কী! তবে পর্দায় চাপা রঙের সুন্দরী তারার ভূমিকায় মালবিকা মোহনান)বেশ আকর্ষণীয়।তবে অভিনয়ের ব্যাপারে তিনি একটু কমতির দিকেই, তবে ইশান খট্টর অভিনয়টা যে বিলক্ষণ জানেন, তাও ধরা পড়েছে ছবিতে।
এ ছবির দৌলতে সারা পৃথিবীর কাছে বেশ রঙিন হয়েই দেখা দেবে ভারত। ছবিতে দেখা যায় মুম্বইয়ের ধোবিঘাট, আছে কাপড় কেচে মেলে দেওয়ার দৃশ্য, রয়েছে রংবেরঙের কোঠাবাড়ি, দেখা মিলবে কাদা আর রাজহাঁসেরও। হোলিখেলায় মগ্ন জনতা, মুম্বইয়ের লোকাল ট্রেন, কী নেই? মনে হচ্ছে মুম্বই নয়, এ ছবির শ্যুটিং হয়েছে যেন গোটা উত্তরভারতে।
চমৎকারদর্শন এ ছবিটি অন্তর্বস্তুতে সারশূন্য। ছবিটি দেখার পর একটা প্রশ্নের উদয় হয়, যে কেন এ ছবি বানাতে গেলেন মাজিদ মাজিদি?
ছবিটি দৃশ্যত সুন্দর হলেও, বিষয় বড় ফাঁপা। মনে হতে পারে, মাজিদি অই বিষয়টাই কেন বাছলেন? আবার এও সত্যি বাইরে থেকে রোন পরিচালক মুম্বই নিয়ে ছবি তৈরি করলে তাঁর এই বিষয়টাকেই চ্যালেঞ্জিং ও আকর্ষনীয় মনে হয়।
এ ছবির সবচেয়ে চমৎকার ব্যাপার হল দুটি বাচ্চা মেয়ে, বয়স্ক পাতি, যার ভূমিকায় রূপদান করেছেন প্রবীণ কন্নড় অভিনেত্রী জি ভি সারদা এবং অবশ্যই ঈশান খট্টর। এ চারজনে মিলে ছায়ার সঙ্গে খেলছে আর নেপথ্যে বাজছে এ আর রহমানের মিউজিক। এ মূহূর্ত ছবির মত। কিন্তু এ কেবল মুহূর্তই।