একটি ওয়েব সিরিজের শ্যুটিংয়ে আউটডোরে যেতে হয়েছিল ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়ের (Bhaswar Chatterjee) ভাই দেবদীপ চট্টোপাধ্যায়কে (Devdeep Chatterjee)। সেখানেই অনভিপ্রেত ঘটনার সম্মুখীন হন দেবদীপ। অভিযোগ, ওয়েব সিরিজ টিমের প্রোডাকশন ম্যানেজার তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন। শুধু তাই নয়,বাকবিতণ্ডার জেরে দেবদীপের গায়ে হাতও তুলতে গিয়েছিলেন। আর সেই গোটা ঘটনাই নেটমাধ্যমে তুলে ধরেছেন ভাস্বর চট্টোপাধ্যায়।
ঠিক কী হয়েছে? নতুন এক ওটিটি প্ল্যাটফর্মের জন্য বোলপুরে ছিল ওয়েব সিরিজের শ্যুটিং। সংশ্লিষ্ট সিরিজে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন দেবদীপ চট্টোপাধ্যায়। যাওয়ার আগে প্রোডাকশন ম্যানেডার অমিতকে বলেছিলেন যে তিনি নিরামিষাসী। এবং এই অতিমারী আবহে সুরক্ষিত থাকার জন্য একটা আলাদা রুম দিতে। কিন্তু তাঁর এই চাহিদাপূরণ তো দূরঅস্ত! উল্টে ম্যানেজার অমিত তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন।
ভাস্বরের কথায়, প্রথমদিন দেবদীপ গিয়ে দেখে সিঙ্গল রুম তো দূর, তার জন্য নিরামিষ খাবারটাও নেই। এই অতিমারীর সময় নোংরা শৌচালয় হাজারবার বলেও পরিষ্কার করাতে না পারায়, তাঁর ভাই একদিন স্নান-বাথরুম করেননি, এমনকী না খেয়ে ছিলেন।
প্রযোজকের কানে কথা যেতেই তিনি দ্রুত পদক্ষেপ করেন। নিজের ঘরে দেবদীপকে থাকতে দেন। আর ম্যানেজারকে নির্দেশ দেন, ওঁর খাবারের ব্যবস্থা করতে।
<আরও পড়ুন: ‘বাংলাদেশ তালিবানি রাজত্ব, ওদেশে প্রেম করাও অপরাধ’, পরিমণির সমর্থনে ‘বিস্ফোরক’ তসলিমা>
সেই নির্দেশ মেনে রোজ পনিরের তরকারি হত। কিন্তু দেবদীপের পাতে পড়ত দু'টুকরো আর এক চামচ ঝোল। বাকিটা যারা আমিশ খেতেন, তাঁদের ভাগে যেত। এখানেই শেষ নয়, প্রতিদিন রাতে যে ভাত খেতে দেওয়া হত, সেটা সকালের জল কাটা ভাত। যেটা মুখে দেওয়া সম্ভব ছিল না। ভাস্বর জানান, তাঁর ভাই মানিয়ে নিয়ে এইভাবে এক সপ্তাহ চালান। কিন্তু পরিস্থিতি আরও সঙ্গীন হয় মঙ্গলবার রাতে, যেদিন শ্যুট শেষ করে কলকাতায় ফেরার পালা ছিল।
দেবদীপ প্রোডাকশন ম্যানেজারকে অনেকবার জিজ্ঞেস করেও জানতে পারেননি যে কোন ট্রেনে টিকিট কাটা কিংবা কোন ক্লাসে ফিরছেন। স্টেশনে এসে জানা যায় স্লিপার ক্লাসের টিকিট। ভাস্বরের ভাই ম্যানেজারের কাছে জানতে চান, "এসি টিকিট নেই কেন?" তাতে প্রোডাকশন ম্যানেজার অমিত স্টেশন চত্বরেই সবার সামনে দেবদীপের ওপর চেঁচান এবং তাঁর গায়ে হাত তোলেন। পাশাপাশি হুমকি দিয়ে বলেন- "যেতে হলে যা, নাহলে এখানে থাক।" ঘটনায় দেবদীপ হতবাক হয়ে প্রশ্ন ছোড়েন- "তুমি আমায় মারবে নাকি?" তাতে পাল্টা ম্যানেজার অমিতের উত্তর- "মারতে পারলে তো প্রথমদিনই তোকে মেরে পুতে দিতাম।" ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় নিজে সেই ঘটনা ফেসবুকে তুলে ধরেন। তাঁর অভিযোগ, ইউনিটের লোকেরা কোনও ঘটনার প্রতিবাদ করেননি এবং সবাই ট্রেনে উঠে যান।
দেবদীপ চট্টোপাধ্যায় তখন প্রযোজককে ফোন করে সবটা জানালে, তিনি বলেন, "এসি টিকিটের টাকা দেওয়া হলেও কেন স্লিপারের টিকিট কাটা হয়েছে"! প্রযোজক তখন নিজে সাহায্যে করেন ভাস্বরের ভাইকে কলকাতায় ফিরতে। এই গোটা ঘটনার বর্নণা দিয়ে ভাস্বর চট্টোপাধ্যায় প্রশ্ন ছুঁড়েছেন- "আমার ভাইয়ের যদি এই হাল হয় তাহলে নতুনরা যাদের পেছনে কেউ নেই তাদের কি হবে? অমিতের মত লোকের জন্য আজ আমাদের ইন্ডাস্ট্রির বদনাম, লোকে বলে এখানে সবাই সমান। এর প্রতিকার কি?" ফেডারেশন অব সিনে টেকনিশিয়ানস অ্যান্ড ওয়ার্কার্স অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়ায় ইতিমধ্যেই অভিযোগ জানিয়েছেন ভাস্বর ও দেবদীপ চট্টোপাধ্যায়। ফেডারেশন যে তাঁর পাশেই আছেন, এমনটাও আশ্বাস গিয়েছে তাঁদের কাছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন